দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় কাঁকড়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর কাজ ৮ বছরেও শেষ হয়নি। প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২৫ সালেও প্রায় ৬০ ভাগ কাজ শেষ করেননি ঠিকাদার। এতে দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষকে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
জানা যায়, ভিয়াইল ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে কাঁকড়া নদী। নদীর পশ্চিম পাশে ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, ইউপি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও নদীর পূর্ব-উত্তরে চিরিরবন্দর উপজেলা শহর। নদীর পূর্ব পাশে ইউপি সেবা নিতে গেলে মানুষকে প্রায় সাত থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয় না হলে বর্ষাকালে নৌকায় পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। নদীর পশ্চিম পাশের মানুষ উপজেলা শহর কিংবা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে গেলে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। এ ভোগান্তি দূর করতে উপজেলার ভিয়াইল গ্রামের ভিয়াইল ঘটে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
চিরিরবন্দর উপজেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের অক্টোবরে ১৭৫ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেতুর কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে। ২০২৫ সালেও সেতুর ৪০ ভাগ কাজ বাকি আছে। এর আগে দুই দফা নির্মাণের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগেই কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত ২০২৩ সালের জুন আবার কাজ শুরু করে। কিন্তু ১৫ জুলাই সকালে সেতুর চার নম্বর ক্রস গার্ডারটি নদীতে ভেঙে পড়ে। কাজ বন্ধ রেখে পালিয়ে যায় ঠিকাদার। তখন থেকে পড়ে আছে সেতুটি। নতুন করে সেতুটির টেন্ডার দেওয়া হয়েছে বলে জানায় এলজিইডি।
স্থানীয় ভিয়াইল গ্রামের ভ্যান চালক সুবল রায় বলেন, 'ভ্যান নিয়ে খুব কষ্ট করে নদী পার হতে হয়। শীতকালে নদীতে পানি থাকে না। তখন বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় খুব সমস্যা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির কাজ বন্ধ। দ্রম্নত সেতুটির কাজ শেষ হলে আমাদের কষ্ট দূর হবে।'
একই গ্রামের আউয়াল হোসেন বলেন, 'ভিয়াইল ঘটে সেতুটি না থাকায় আমরা দীর্ঘদিন থেকে ভোগান্তি নিয়ে পারাপার হচ্ছি। সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হলে গ্রামবাসী খুশি হলাম যে আমাদের দীর্ঘদিনে ভোগান্তি শেষ হবে। কীসের ভোগান্তি দূর হবে, উল্টো ভোগান্তি বেড়েছে। সাত থেকে ৮ বছর ধরে একখানে সেতু হচ্ছে হচ্ছে করে কাজ শেষ হয় না। এখন দেখি ঠিকাদার সব কিছু নিয়ে পালিয়েছে। আমাদের দাবি দ্রম্নত সেতুর বাকি অংশের কাজ শেষ করে আমার ভোগান্তি দূর করা হোক।'
চিরিরবন্দর উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদার রহামান বলেন, ঠিক দার অসুস্থ থাকায় সেতুটির প্রায় ৪০ ভাগ কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। সেই টেন্ডার প্রক্রিয়াটি শেষ হলে দ্রম্নত সেতুটির বাকি অংশের কাজ শেষ হবে।