কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বোরো ধান আবাদ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বোরো চাষকে ঘিরে মাঠে মাঠে যেন উৎসব শুরু হয়েছে। জমিতে সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, চারা উত্তোলন ও প্রস্তুত জমিতে চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এ বছর উপজেলায় ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানচাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। বর্তমান বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় বোরো আবাদে দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। তাদের ধারণা, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বোরো আবাদ।

সরেজমিনে উপজেলার গোবিন্দপুর, পুমদি,আড়াইবাড়িয়া, সিদলা, সাহেদল, জিনারী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা। কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ থেকে চলছে পানি সেচ, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে জমি চাষের কাজ। কোনো কোনো স্থানে পাওয়ার টিলার ছাড়া কৃষকদের মই টেনে জমি সমান করার দৃশ্য দেখা গেছে। বোরো ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কৃষকদের শরীরে রয়েছে হালকা শীতের পোশাক, মাথায় গরম কাপড়। কেউ জমিতে হাল চাষ করছেন, কেউ জমির আইলে কোদাল কোপাচ্ছেন। কেউ আবার জৈব সার দিতে ব্যস্ত, সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ বা পাম্পের জন্য ঘর তৈরি করছেন। অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। কেউ আবার বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে তা রোপণ করছেন। সব মিলিয়ে আনন্দে রয়েছেন কৃষক কৃষাণীরা।

উপজেলার মধ্য গোবিন্দপুর গ্রামের বোরো ধান চাষি রতন মিয়া বলেন, 'গত বছর বোরো চাষাবাদ করে লাভবান হয়েছি। এবারও সেই আশায় বোরো চাষ শুরু করেছি। বোরো রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে সব জমি প্রস্তুত করে ধান রোপণ করব।'

আড়াইবাড়িয়া এলাকার বোরো চাষি আমীর আলী বলেন, 'গত আমন মৌসুমে বিভিন্ন ধানের ফলন ও বাজার মূল্য ভালো ছিল, তাই অনেক আয় করেছি। এজন্য চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ করতে ভালো লাগছে।'

পুমদি এলাকার কৃষক মোতাহার আলী, কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, বোরো ধান রোপণে জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, চারা তোলার কাজে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগ আমাদের সহায়তা করছে।

হোসেনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম শাজাহান কবির বলেন, উপজেলায় এরই মধ্যে বোরো ধানের চারা উত্তোলন ও রোপণ শুরু হয়েছে। কিছু জায়গায় চারা রোপণ হয়েগেছে। কয়েক বছর থেকে ধানের দাম ভালো হওয়ায় ধান চাষে ভীষণ আগ্রহী হয়েছেন চাষিরা। এ বছর উপজেলায় ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে রোপণ করেছেন কৃষকরা। আশা করছি এ বছরও বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।