শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

শেবাচিমে রেডিওথেরাপি মেশিন ৯ বছরেও সচল হয়নি

বরিশাল অফিস
  ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
শেবাচিমে রেডিওথেরাপি মেশিন ৯ বছরেও সচল হয়নি

নয় বছর ধরে বন্ধ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের কোবাল্ট ৬০ রেডিওথেরাপি মেশিন। ফলে বৃহত্তর দক্ষিণাঞ্চলের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা রেডিওথেরাপি দিতে না পেরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। মেশিনটি প্রথমে ২০১৫ সালে অচল হয়, এরপর ২০১৯ সালে চিরস্থায়ী অকেজো ঘোষণা করা হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর এ পাড়ের ১১ জেলার কোন হাসপাতালতো দুরের কথা পার্শ্ববর্তী বিভাগ খুলনা হাসপাতালেও কোবাল্ট ৬০ রেডিওথেরাপি মেশিন নেই। এ কারণে দক্ষিণাঞ্চলের ক্যান্সার রোগীদের একমাত্র ভরসাস্থল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কিন্তু হাসপাতালটির ক্যান্সার বিভাগের এ কোবাল্ট ৬০ রেডিওথেরাপি মেশিনটি ২০১৫ সালে অচল হয়, এরপর ২০১৯ সালে মেশিনটি চিরস্থায়ী অকেজো ঘোষণা করা হয়। রেডিওথেরাপি মেশিনটি নষ্ট থাকায় এখানে যারা আসেন তারা মন খারাপ করে চলে যান। আর এসব রোগীর মধ্যে বেশিরভাগই আর্থিকভাবে সচ্ছলতা না থাকায় তাদের পক্ষে বেসরকারিভাবে কিংবা ঢাকায় গিয়ে থেরাপি দেওয়া সম্ভব হয় না।

হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখা জানিয়েছে, নতুন মেশিন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। তারপরও এখনো চেষ্টা চলছে নতুন একটি রেডিওথেরাপি মেশিন সংযোজনের।

শের-ই-বাংলা হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্বজন জানান, এখানে রেডিওথেরাপি দেয়ার সুজোগ না থাকায় যেতে হয় ঢাকার মহাখালি হাসপাতালে। সেখানে সিরিয়াল পড়ে ৭ থেকে ৮ মাস পর। দেখা যাবে ওই সময়ের আগেই রোগী মারা গেছে।

ভোলার বাসিন্দা মো. হাসান বলেন, 'আমার ছোট ভাই দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত। তার রেডিওথেরাপি দেওয়ার জন্য শেবাচিম হাসপাতালে যাই। তাকে সেখান থেকে মহাখালীতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে সিরিয়াল দেওয়াসহ সবকিছুতেই বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। আবার ঢাকায় গিয়ে ভাইয়ের কেমো দেওয়া পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। এরই মধ্যে আমাদের পরিবারের জমি বিক্রির টাকা ভাইয়ের পেছনে শেষ হয়েছে। রেডিওথেরাপি দিতে না পারায় আমার ভাইয়ের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে।'

শেবাচিম হাসপাতালের রেডিওথেরাপি (অনকোলজি) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. আ.ন.ম. মঈনুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে ক্যান্সার বিভাগের কোবাল্ট ৬০ রেডিওথেরাপি মেশিন ২০১৫ সালে অচল হয়, এরপর ২০১৯ সালে মেশিনটি চিরস্থায়ী অকেজো ঘোষণা করা হয়।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, সরকার থেকে দেশের চারটি হাসপাতালে কোবাল্ট-৬০ মেশিন দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আশা করা হয়েছিল সেখান থেকে একটি মেশিন এ হাসপাতালেও আসবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। তারপরও এ মেশিনটি খুবই প্রয়োজন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। তবে বরিশালেল পৃথক ক্যান্সার হাসপাতাল হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে ওই হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে