'সাংবাদিকদের ঋণ দেওয়ার নিয়ম নেই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকে!' -পাবনা সদর উপজেলার পৌর এলাকার নুরপুরস্থ ব্র্যাক কার্যালয়ে এমন কথা বলেছেন এক ঋণ কর্মকর্তা। ঘটনাটি জানাজানির পর বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জনৈক সংবাদকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ক্ষুদ্র ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য তার লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণের জন্য তিনি যোগাযোগ করেন সংশ্লিষ্ট ব্র্যাক অফিসে। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি ঋণের বিষয়ে জানতে নুরপুরস্থ কার্যালয়ে যান। সেখানে ব্র্যাকের ক্ষুদ্র ঋণের প্রগতি প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে সব জানার পর তিনি ঋণ গ্রহীতাকে জানান, বুধবার বিকাল চারটার দিকে আপনার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ঋণ প্রত্যাশী ওই সংবাদকর্মী জানান, তিনি বিকাল সাড়ে চারটায় ফোন দিয়ে ঋণ কর্মকর্তা আসবেন কিনা জানতে চান। তখন ফোনে ঋণ কর্মকর্তা বলেন, 'আপনি সাংবাদিক, এ কারণে আপনাকে ঋণ দেওয়া যাবে না।' সাংবাদিককে কেন ঋণ দেওয়া যাবে না জানতে চাইলে ঋণ কর্মকর্তা বলেন, 'ম্যানেজারের অর্ডার আছে, কোনো সাংবাদিককে ঋণ দেওয়া যাবে না।'
ঋণ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'ব্র্যাকের রুলস আছে সাংবাদিক, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদকে ঋণ দেওয়া যাবে না। সাংবাদিক ঋণ চেয়েছে এমন বিষয় ম্যানেজারকে জানাতে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কোনো সাংবাদিককে ঋণ দেওয়া যাবে না।'
নুরপুর প্রগতি প্রকল্পের ম্যানেজার হুমায়ুন কবির বলেন, ঋণ প্রদানে আমাদের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। তবে সাংবাদিককে ঋণ দেওয়া যাবে না- এটা সরাসরি বলা ঠিক হয়নি। ব্যবসায়িক কাজের জন্য যে কেউ আমাদের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ঋণ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস এ ধরনের আচরণ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ম্যানেজার হুমায়ুন কবির এ প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তিনি দ্রম্নত ঋণ গ্রহীতার বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে দ্রম্নততার সঙ্গে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করবেন।
এ ব্যাপারে পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, এটা জঘন্য ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। সাংবাদিকরাও আর দশজনের মতো মানুষ। শুধু সাংবাদিকতা দিয়ে তো আর জীবন চলে না। এর বাইরেও তাদের ব্যবসা বাণিজ্য করার প্রয়োজন থাকতে পারে। এজন্য তারা যে কোনো এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ চাইতে পারেন। কিন্তু সাংবাদিকদের ঋণ দেওয়া যাবে না- এই ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়।