শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
অবৈধ সম্পদ অর্জন

ডিআইজি মিজানের ১৪ বছরের সাজা হাইকোর্টে বহাল

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ডিআইজি মিজানের ১৪ বছরের সাজা হাইকোর্টে বহাল

সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ১৪ বছরের কারাদন্ড রেখে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোলস্নার একক বেঞ্চ এই রায় দেন।

আদালতে এদিন দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। আর মিজানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।

অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, এই অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করার দায়ে একই মামলায় মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ভাগনে মাহমুদুল হাসান ও ভাই মাহবুবুর রহমানকে সাত বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়। রায়ে সে সময় মিজানকে দেড় লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়। মিজান যে মেয়াদে ইতোমধ্যে কারাভোগ করেছেন, সাজা থেকে তা বাদ দেওয়া হবে বলে রায়ে উলেস্নখ করা হয়েছিল।

গত বছরের ২১ জুন অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলায় বরখাস্ত পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে পৃথক তিন অভিযোগে ১৪ বছর কারাদন্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম এই রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া মিজানুর রহমানের স্ত্রীসহ অপর তিনজনকে সাত বছর করে কারাদন্ড দেওয়া হয়। এই মামলার অপর তিন আসামি হলেন- মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার ওরফে রত্না রহমান, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান।

আসামি ডিআইজি মিজানুর রহমানকে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় ৩ বছর, ২৭ (১) ধারায় ছয় বছর এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে পাঁচ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়। সবগুলো সাজা একত্রে চলবে বলে তাকে ছয় বছর সাজা ভোগ করতে হবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে বাকি তিনজনকে ২৭ (১) ধারায় তিন বছর ও মানিলন্ডারিং আইনে চার বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। তাদেরও চার বছর সাজা ভোগ করতে হবে।

এই মামলার চার আসামির মধ্যে ডিআইজি মিজান কারাগারে আছেন। তার ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগ্নে মাহমুদুল হাসান জামিনে রয়েছেন। অপর আসামি মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার ওরফে রত্না রহমান পলাতক।

দুদকের এই মামলায় ২০২০ সালের ১ জুলাই আগাম জামিন আবেদন করলে ডিআইজি মিজানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। মিজানকে তাৎক্ষণিক পুলিশের হাতে তুলে দেন আদালত। গ্রেপ্তারের পর তাকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। ওই বছরের ২ জুলাই মিজানের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।

মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এক সংবাদ পাঠককে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

এরপর দুদক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘুস লেনদেনের বিষয়টি সামনে আসার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ডিআইজি মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। ওই বছরের ২৫ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি। তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত।

২০১৯ সালের ২৪ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ বাদী হয়ে ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে তিন কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তিন কোটি সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে