বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সমুদ্রসীমায় নজর দিতে হবে :প্রধানমন্ত্রী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আপডেট  : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১৬:৪৯
কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সমুদ্রসীমায় নজর দিতে হবে :প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সী ফুড শো'র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা

দেশের সমুদ্রসীমায় বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'এই খাতে যথাযথ নজর দিতে হবে, যাতে দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।'

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সী ফুড শো'র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

1

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিশাল সমুদ্রসীমা আমরা জয় করেছি। এখানে আরও যথাযথভাবে নজর দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশে অর্থনীতিতে আরও বেশি অবদান রাখতে পারে। এতে বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।'

মৎস্য খাতে দেশি-বিদেশি আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'এই খাতকে সরকার যাতে আরও বেশি কাজে লাগাতে পারে, সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের বৈচিত্র্যময় মৎস্যসম্পদ রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, এই সম্পদ ব্যবহার করেই এদেশকে উন্নত করে গড়ে তুলবেন। তিনি মৎস্য সম্পদ ও মৎস্য চাষের ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'মাছ হবে দেশের দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ।'

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, 'সামাজিক উন্নয়নে এই খাত যাতে আরও অবদান রাখতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এজন্য বিশ্বে মাছ উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটা অবস্থান অর্জন করতে পেরেছে।'

তিনি বলেন, 'প্রায় দুই কোটি মানুষ মৎস্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। যুবকরা কিন্তু এই মাছ চাষের দিকে নজর দিতে পারে। আমাদের নদী-নালা, খাল-বিল এত বেশি। আর আমাদের মাটি ও পানি অত্যন্ত উপযুক্ত। বিশাল সমুদ্রসীমা আমরা পেলাম। সমুদ্রসীমা থেকে মাছ সংগ্রহ করছি আমরা। তবে গভীর সমুদ্রবন্দর থেকে আমরা তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি নাই। গভীর সমুদ্রে আগ্রহ কম সবার, এজন্য বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিডা একটা বিরাট ভূমিকা রাখে। আপনারা তাদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেতে পারেন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি সুবিধা দিয়ে থাকি। সেখানে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। তার যে লভ্যাংশ সেটা খুব সহজেই তারা নিয়ে যেতে পারেন। পাশাপাশি ব্যাংকের লেনদেনটাও আমরা অনেক বেশি সহজ করে দিয়েছি। সেখানে আপনি অর্থ জমা করে প্রয়োজনে সেটাও নিয়ে যেতে পারেন। অফশোর অ্যাকাউন্ট খোলারও সুযোগ আছে। সেই সুবিধাও সরকার করে দিয়েছে। সেখানে উচ্চহারে সুদও পেতে পারেন। আবার এখানে বিনিয়োগও করতে পারেন।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'কাজেই আমি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সবাইকে আহ্বান করব আপনারা আসেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন। এই সম্পদ আমাদের আরও কাজে লাগান। এটাকে যাতে আমরা আরও বেশি কাজে লাগাতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজকের এই 'অ্যাকুয়া কালচার ও সী ফুড শো' নীতি নির্ধারক, রপ্তানিকারক, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক ব্যবসায়ী সংলাপ এবং নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার একটি প্রাণবন্ত পস্ন্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। যা পারস্পরিক বোঝাপড়া, অংশীদারিত্ব, জ্ঞান প্রভৃতি আদান প্রদানের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলেই আমি মনে করি এবং আশা করি আমাদের যুব সমাজও আরও বেশি এগিয়ে আসবে। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মাছ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে আমাদের যুব সমাজ যত বেশি যুক্ত হবে ততই এই খাতটি আরও এগিয়ে যাবে।'

অনুষ্ঠানে অ্যাকুয়াকালচার ও সী ফুড রপ্তানির সম্ভাবনার আলোকে একটি প্রামাণ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়। মৎস্যও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শ ম রেজাউল করিম। স্বাগত বক্তৃতা করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার। জার্মান ভিত্তিক পস্নান কোয়ার্ডযাট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মার্টিন গেসকেস এবং বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রী 'অ্যাকুয়া কালচার ও সী ফুড শো' এর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

১৭ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সী ফুড শো শুরু হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে অ্যাকুয়াকালচার ও সী ফুড সম্পর্কিত বিভিন্ন সেশন অনুষ্ঠিত হবে যেখানে বাংলাদেশের মৎস্য খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। এই আয়োজনে ১২টি দেশের ৫৪টি স্টল রয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), মৎস্য অধিদপ্তর, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া 'বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার অ্যান্ড সী ফুড শো-২০২৪' এর আয়োজন করেছে। এই আয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন সহযোগিতা করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে