বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সারিয়াকান্দি পশু হাসপাতালে চিকিৎসার নামে নৈরাজ্যে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
  ২১ মে ২০২৫, ২১:৩৭
সারিয়াকান্দি পশু হাসপাতালে চিকিৎসার নামে নৈরাজ্যে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা
ছবি : যায়যায়দিন

বগুড়া সারিয়াকান্দি প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের নীরব সমর্থনে সরকারি চিকিৎসকদের বদলে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা পশু চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রতিনিধিরা পশুদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার বিনিময়ে ব্যবস্থাপত্রে নিজ কোম্পানির ওষুধ লিখে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিলে খোদ প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মকর্তারা এসব কর্মকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকারও করেছেন।

1

বুধবার (২১ মার্চ) সকাল ১১ টার দিকে প্রানী সম্পদ ও ভেটেনারী হাসপাতালে গিয়ে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের পশু চিকিৎসকদের সাথে কাজ করতে দেখা যায়। একজন সরকারি চিকিৎসক একটি গরু বাছুরকে স্যালাইন পুশ করে দিয়ে ঔষধ লিখছেন। সেখানে থাকা দুইজন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি তার কথা মতো চিকিৎসা প্রদান করছে। আরেক পাশে একজন প্রতিনিধি একটি ছাগলকে ইনজেকশন পুশ করছে, আরেকজন একটি বড় ছাগীর থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর পরীক্ষা করছে।

এ সময় যায়যায়দিনের প্রতিনিধি জ্বর মাপতে থাকা বিক্রয় প্রতিনিধিকে তার পরিচয় দিতে বললে নাভানা কোম্পানির ইকবাল বলেন , আমি এখানে ইন্টার্নীশিপ করছি। কিসের ইন্টার্নীশিপ করছে কোথায় থেকে তাকে এখানে পাঠানো হয়েছে এসব প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

তার কাছ থেকে বার বার জানতে চাওয়া হলে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমি যুব উন্নয়ন থেকে ট্রেনিং করে এখানে ইন্টার্নি করছি।

হাসপাতালের সাথে জড়িত একজন নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলে, এই ওষুধ কোম্পানির লোকেরা আসে এসে এখানে বিভিন্ন ভাবে ডাক্তার কাজ করে দেয়। এর বিনিময়ে তাদের কোম্পানির ওষুধ লিখে নেয়। গ্রামের সহজ সরল মানুষ এদেরকে চিনতে পারেনা এরা এদেরকে হাসপাতালের ডাক্তার মনে করে। এই সুযোগটাই এরা গ্রহন করে যত আজেবাজে কোম্পানির ওষুধ লিখে নেয়।

এবিষয়ে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. এ. জেড. এম. খালেদ জুলফিকার বলেন, আমাদের লোক বল কম। তাই এদেরকে দিয়ে কাজ করানো হয়। আপনাকে বললেতো আপনি আমাদের কাজে সহযোগীতা করবেন। ওরা কাজ করতিছে ওদের শেখা হচ্ছে। পরে ওরা উদ্যোক্তা হয়ে যাবে। এসব কারনে আমরা ওদের কাজ করতে সুযোগ দেই।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মীর কাউসার হোসেন বলেন, জনবল সংকটের কারণে আমরা ঔষধ কোম্পানির লোকজনেরা আমাদের সহযোগিতা করে। আমরা তাদের সহযোগিতা নিই। আমার অফিসে যেভাবে প্রাণী আসে তাতে আর ৫ জন লোক হলে ঠিকমতো কাজ করতে পারতাম। এসব অসুবিধার কথা ও তারাও চিকিৎসা শিখে স্বাবলম্বী হবে ভেবে এই সুযোগ তাদের দেওয়া হয় থাকে। যদিও অফিসিয়াল কোন নির্দেশনা নাই তাদের ইন্টার্নিশীপ করার মতো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে