বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান

সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বুধবার ঢাকার আইডিইবি ভবনে বক্তব্য রাখেন -যাযাদি

রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যৌক্তিক সময় দিতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার ঢাকার আইডিইবি ভবনে ফোরাম অব ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন তিনি।

জামায়াতের আমির বলেন, 'দেশের মানুষ কিছু মৌলিক বিষয়ে সংস্কার চায়। যাতে এই সংস্কারের মধ্যে দিয়ে আগামীতে আবার কোনো স্বৈরতন্ত্র কায়েমের সুযোগ না থাকে।'

1

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'নির্বাচনের জন্য তিন মাস কিংবা পাঁচ বছর, এমন কোনো সময় আমরা অন্তরবর্তী সরকারকে বেঁধে দেইনি। আমরা সংস্কারের যৌক্তিক সময় বলেছি। উপদেষ্টারা বিবেকবান মানুষ, তারা বুঝতে পারেন কতটুকু সময় প্রয়োজন।'

জামায়াতের আমির বলেন, 'যাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সত্যিকারে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনা করতে পারে সে কারণে আমরা তাদেরকে যৌক্তিক সময় দেয়ার কথা বলেছিলাম।'

তিনি আরও বলেন, 'শুধুমাত্র স্বার্থপরতার কারণে দেশ পিছিয়ে আছে। রাজনীতিতে আমরা স্স্নোগান দেইু আমার চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। প্রাকটিস হলোু দেশের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে আমি বড়।'

'স্বাস্থ্যসেবায় মানবিক হতে হবে'

এদিকে, স্বাস্থ্যসেবায় চিকিৎসকদের আরও বেশি মানবিক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের চিকিৎসক হয়ে ওঠার পেছনে শুধু বাবা-মা আর নিজের মেধা নয়, একজন ভিক্ষুকেরও অবদান রয়েছে। ভিক্ষুকদের থেকেও ট্যাক্স নেওয়া হয়। সবার ট্যাক্স একই জায়গায় যায়। আর যে প্রাইমারি স্কুল থেকে পড়া (শুরু) হয়, সেখানকার ইট-বালুকনাও সবার ট্যাক্সে তৈরি। তাদের প্রতিও আমাদের চিকিৎসকদের ঋণ আছে।

বুধবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) আয়োজিত জাতীয় চিকিৎসক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, মানুষের সেবার মাধ্যমে আলস্নাহকে পাওয়া সহজ হয়, এজন্য চিকিৎসকদেরই মানবিক বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের চিকিৎসা এগিয়ে গেলেও ওষুধের কাঁচামালে এখনো আমদানি নির্ভরশীল। এজন্য একদল মানুষকে গবেষণায় নিজেদের কোরবানি দেওয়ারও আহ্বান জানান জামায়াত আমির।

জামায়াত আমির বলেন, যে কাঙ্‌িক্ষত বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই, সেটি গড়তে চিকিৎসকদের বড় বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ, অন্যদের চেয়ে তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। সেবার মাধ্যমে সেটি করতে হবে। এর মধ্যেই আলস্নাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এনডিএফের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিবর্তন আসবে, এটা আমার বিশ্বাস। চিকিৎসকদের মধ্য থেকে কিছু মানুষকে গবেষণায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। কারণ, গবেষণার বিকল্প নেই। দুর্ভাগ্যক্রমে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না।

তিনি বলেন, আমাদের স্মার্ট সার্ভিস উপহার দিতে হবে। সেবাপ্রত্যাশীদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনার-আমার আজকের এ অবস্থানে আসার পেছনে শুধু বাবার টাকাই নয়, খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষেরও টাকা রয়েছে। রাষ্ট্রের ট্যাক্সের টাকা ধনি-গরিব সব একসঙ্গে রাখা হয়, প্রতিটি অকাঠামোর ইট-পাথরে খেটে খাওয়া মানুষের ঘাম লেগে আছে। এজন্য একটা মানবিক দেশ গড়তে চাই আমরা। যেখানে পথ দেখাতে হবে চিকিৎসকদের।

জামায়াত আমির আরও বলেন, চিকিৎসকদের জ্ঞানের রাজ্যে শ্রেষ্ঠ হতে হবে, এজন্য বেশি বেশি পড়াশোনা ও কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। যে জাতি জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় যত এগিয়ে, সে ততটাই সভ্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে