ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান রেজাউল করিম মলিস্নক বলেছেন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীদের স্রেফ অপরাধী হিসেবেই দেখা হয়; অপরাধী গ্রেপ্তারে কোনো শক্তি বা ব্যক্তির রক্তচক্ষুকে তারা 'ভয় পান না' বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডিবি প্রধান বলেন, 'চাঁদাবাজকে চাঁদাবাজ হিসেবে দেখি, সন্ত্রাসীকে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখি। কোন আসামিকেই গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আমরা এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো রক্তচক্ষুকে ভয় পাইনা। আইনের আওতায় গ্রেপ্তার হবে, আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।'
মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কথা বলছিলেন রেজাউল করিম মলিস্নক।
তিনি বলেন, 'বিগত সময়ে পতিত স্বৈরাচারের নির্দেশনা ও অপেশাদার কিছু পুলিশ কর্মকর্তার কারণে জনগণকে পুলিশের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বর্তমানে আমরা সেখান থেকে উঠে এসে পেশাদার ও জবাবদিহিমূলক পুলিশি ব্যবস্থা চর্চার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তার কথায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাহিনীর সদস্যরা যখন 'ঘুরে দাঁড়িয়েছে', তখন মজুদ, মামলা বাণিজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশের মানুষকে 'বিপদে ফেলার চেষ্টা চলছে'।
তিনি বলেন, 'ভরা মৌসুমে কোনো কারণ ছাড়াই চালের দাম বাড়ানো তারই একটি প্রকৃত উদাহরণ। বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকরীরাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।'
সতর্ক করে মলিস্নক বলেন, 'অবৈধ মজুদদার, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী ও স্বৈরাচারের দোসরদের স্থান এ দেশে হবে না। যতোই চক্রান্ত করুক না কেন, পুলিশ তাদের কঠোর হস্তে দমন করবে। সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশব্যপী গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকান্ড জোরদার করা হয়েছে।'
সম্মেলনে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ২৭ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছেন ডিবি প্রধান।
অভিযানে সোমবার রাতে খিলগাঁও, কাছের একটি গোপন আস্তানাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অপরাধী গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ৭.৬২ বোরের একটি চায়না রাইফেল, একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, ৬ রাউন্ড গুলি, ৭.৬২ চায়না রাইফেলের ৯ রাউন্ড গুলি, ছয়টি রামদা, ২৪টি মোবাইল ও ১০০ কেজির ওপর গাঁজা জব্দ করা হয়।
মলিস্নক জানিয়েছেন, চোরাচালানের খবর পাওয়া গেলেই পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, 'গ্রেপ্তারদের মধ্যে পেশাদার কুখ্যাত চাঁদাবাজ, প্রতারক ও ডাকাতও আছে। আমরা মনে করি এটা আমাদের একটা সফল অভিযান।'
৫ আগস্টের পর ছাড়া পাওয়া কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসী নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, 'যারা শীর্ষ সন্ত্রাসী আছে, তাদের পাশাপাশি অন্যান্য সন্ত্রাসী যারা আছে, সমস্ত সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব। সব বিষয়েই আমাদের মনিটরিং রয়েছে। পিচ্চি হেলাল হোক, ইমন হোক, আর যেই হোক। আমরা আমাদের চেষ্টটা অব্যাহত রেখেছি, তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।'