স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চান পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ওরফে আব্বাস আলী। এ ব্যাপারে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। ১৯ জানুয়ারি গণমাধ্যমে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে তিনি এ প্রত্যাশার কথা জানান।
খোলা চিঠির শুরুতে তিনি সবার উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমি আব্বাস আলী গত ২১ বছর কারাবন্দি ছিলাম। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থানের পর আমি আইনী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কারামুক্ত হই। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় আমি মানসিক, পারিবারিকভাবে বিধ্বস্ত। জীবনের সবচেয়ে সোনালী সময়টা আমাকে নির্জন কারাগারে কাটাতে হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে পরিবারের অনেক সদস্য ছাড়াও একাধিক পরম আত্মীয়কে হারাতে হয়েছে। এখন একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের জন্য নিরন্তর চেষ্টা করছি। পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্যই আমি বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছি। যাতে কোথাও কোনো অভিযোগ না আসে। সেজন্য নিজ পরিবারের গন্ডি পেরিয়ে কোথাও আসা-যাওয়া কমিয়ে দিয়েছি। এমনকি কোনো নিমন্ত্রণে যাওয়াও বন্ধ করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'দুঃখজনকভাবে এরপরও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে আমাকে জড়িয়ে নানান কল্পকাহিনী ছড়ানো হচ্ছে। আমার প্রকৃত নাম বিকৃত করে 'কিলার আব্বাস' হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এতে আমার সন্তানসহ পরিবার ও আত্মীয়স্বজন অত্যন্ত বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে। আমার জন্য এখন তারাও বিভিন্ন পর্যায়ে হেনস্তা হচ্ছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। দেশের প্রচলিত আইনে দীর্ঘ ২১ বছর শাস্তির পর আবারো আমাকে মিডিয়া ট্রায়ালের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে- জোর করে আমাকে অপরাধ জগতে নিতে এই অপকৌশল করা হচ্ছে।'
খোলা চিঠিতে আব্বাস আলী বলেছেন, 'আমি আপনাদের নিশ্চিত করছি- কারামুক্তির পর আমি কোনো অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত না। দখল, চাঁদা দাবি কিংবা যে কোনো অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে কোনোভাবেই আমি সম্পৃক্ত না। এরপরও কোথাও আমার নামে চাঁদা দাবি করা হলে, দখল করা হলে কিংবা হুমকি দেওয়া হলে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে আপনারা চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করুন। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করুন। সেখানে আমার বিরুদ্ধে কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে আপনারা আমার বিরুদ্ধেও লিখুন। কিন্তু একতরফা ও গৎবাঁধা বিভিন্ন প্রতিবেদনে আমাকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে আমার ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়। আমরা প্রতিটি পদে প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছি।'
তিনি মনে করেন, কোনো অনুসন্ধান না করে তাকে জড়িয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় অন্য অপরাধীরা তার নাম ব্যবহার করে অপরাধ করতে উৎসাহিত হতে পারে। এটাকে তারা পুঁজি করে আরো সক্রিয় হতে পারে।
আব্বাস আলী বলেন, 'যেহেতু আমি কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত নই, সেহেতু আমাকে প্রতি পদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে আপনাদের কাছে নিবেদন করছি। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আপনাদের সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। কোনো অভিযোগ আসলে সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করুন, সত্যতা যাচাই করুন।'