ময়মনসিংহ নগরীতে ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে সিটি করপোরেশন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন চালকরা। সোমবার সকাল থেকে নগরীতে অটো চলাচল বন্ধ রেখে বিকালে চালকরা এই বিক্ষোভ করেন। তবে এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে কিছুটা ভোগান্তি হলেও প্রধান নগরীতে যানজট না থাকায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অনেকে।
বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ নগরীতে অনুমোদিত
ইজিবাইক ৭ হাজার, ব্যাটারি চালিত মোটা ও চিকন তিন চাকার রিকশা ১২হাজার থাকলেও প্রতিদিন প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ হাজার যান চলাচল করে। এতে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। যানজট ভোগান্তি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ১৮ জানুয়ারি ৬ রুটে ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয় সিটি করপোরেশন।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে জিলা স্কুল মোড় থেকে নতুন বাজার হয়ে গাঙ্গিনারপাড়, সিকে ঘোষ রোড, দুর্গাবাড়ি রোড এবং স্বদেশী বাজারে ইজিবাইক চলাচল না করায় নগরী একেবারেই যানজটমুক্ত হয়। স্বস্তি প্রকাশ করেন সাধারণ মানুষ। যদিও চালকরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে অটোতে যাত্রী উঠছে না। এর প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরে ইজিবাইক চালকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত রোববার বিকালে ইজিবাইক চালকরা সার্কিট হাউজ মাঠে জড়ো হয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে সোমবার সকাল থেকে নগরীর সকল রুটে অটো চলাচল বন্ধ রাখে। চালকরা প্রত্যেক মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে শহরের ভেতরে অটো ও রিকশা যেন না ঢুকতে পারে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে দুর্ভোগ এড়াতে প্রশাসন শহরে রিকশা চলাচলের সুযোগ করে দেয়।
সোমবার সকাল থেকে নগরীতে যানবাহনের কারণে সাধারণ মানুষকে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে দেখলেও বেশিরভাগ মানুষ অটো চলাচলের নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়েছেন। পরে বিকাল তিনটার দিকে কয়েক শ' চালক সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন তারা।
জিলা স্কুল মোড়ের বাসিন্দা হাফিজুল ইসলাম বলেন, 'নগরীতে অটো চলাচলের কারণে যানজট হয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু অটো আবার বন্ধ করে দিলেও চালকদের যেমন সমস্যা তেমনি আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্য রিকশাগুলো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। সেগুলো তদারকি করা প্রশাসনের দরকার।'
দুর্গাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, 'অপরিকল্পিত নগরী হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত অটো চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় যত সমস্যা হচ্ছে। গেল কয়েকদিন ধরে গাঙ্গিনারপাড় অটো ঢুকতে না পারায় কোন যানজট নেই। আমরা চাই সকল কিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকুক।'
ইজিবাইক চালক হাসান মিয়া বলেন, 'আমরা লাইসেন্স নিয়েছি পুরো নগরীতে চলাচল করার জন্য, কোনো সুনির্দিষ্ট রুটে নয়। তখন কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিৎ ছিল। হঠাৎ অটো চলাচল বন্ধ করে দিয়ে যানজট কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সিটি করপোরেশন এলাকা ছাড়বো না।'
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম খান বলেন, 'অটো চালকদের কারণে নগরীতে যেন কোনো ভোগান্তি সৃষ্টি না হয় সে জন্য প্রশাসন কাজ করেছে। বিকালে তারা সিটি করপোরেশ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে, বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেখানেও পুলিশের নজরদারি রয়েছে।'
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, 'যানজট নিয়ন্ত্রণে নগরীর ৬ রুটে অটো চলাচলে সবার মতামতের ভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর থেকে চালকরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি স্মারকলিপি দিয়েছেন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'