শব্দগুলো নতুন কিছু নয় সাব্বির রহমান রুম্মানের জন্য। এর আগেও অসংখ্যবার শৃঙ্খলতাজনিত কারণে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। দিয়েছেন বড় অঙ্কের জরিমানা। এরপর ক্ষমা চেয়েছেন। ভালো হয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন। কিন্তু আদতে কোনো লাভ হয়নি। ফের একই কান্ড। এবার বললেন,' আশেপাশে কিছু লোক ভালো হতে দিচ্ছে না আমাকে।' শনিবার বিপিএলে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালসের আরও একটি হারের ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেছেন সাব্বির।
মুখে মুচকি হাসি, কিন্তু মনের ভেতরে অসন্তুষ্টি। সেটিই ফুটে উঠল সাব্বিরের কন্ঠে। শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা প্রকাশ্য করে দেওয়ায় কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের দিকে তির ছুড়লেন ঢাকা ক্যাপিটালসের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। বিপিএলে দারুণ এক ইনিংস খেলার দিনে এ ব্যাটসম্যান বললেন, দলের ভেতরের ব্যাপার বাইরে খোলাসা করা উচিত হয়নি কোচের।
গত বিপিএলের পেস্নয়ার্স ড্রাফটে দল না পাওয়া সাব্বিরকে এবার দলে নেয় নবাগত ফ্র্যাঞ্চাইজি ঢাকা ক্যাপিটালস। তবে আসরের প্রথম তিন ম্যাচে একাদশে দেখা যায়নি ৩৩ বছর বয়সি ব্যাটসম্যানকে। একসময় টি২০ বিশেষজ্ঞ ও দারুণ আগ্রাসী হিসেবে পরিচিতি ছিল যার, সেই ব্যাটসম্যানের একাদশে জায়গা না পাওয়া জন্ম দেয় কিছু প্রশ্নের। বিশেষ করে, ঢাকা যখন হারের বৃত্তেই ছিল।
ঢাকা পর্ব শেষে সিলেটে এসে ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, প্রথম ম্যাচে কম্বিনেশনের কারণে একাদশে না রাখতে পারলেও পরে মূলত শৃঙ্খলাভঙ্গের শাস্তি হিসেবে ম্যাচ খেলানো হযনি সাব্বিরকে। গত ১ জানুয়ারি দলের কাউকে না জানিয়ে অনুশীলনে অনুপস্থিত ছিলেন সাব্বির।
তবে সাব্বিরের নিজের দাবি অন্যরকম। বিপিএলে সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ৭ বলে ২ রান করে আউট হননি। দ্বিতীয় ম্যাচে বৃহস্পতিবার নিজের সেরা সময়ের সেই ঝলক দেখিয়ে ৩৩ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি ৯টি ছক্কায়। দল যদিও হেরে যায় পরে। তবে সাব্বিরের ক্ষোভ নিজ দলের কোচকে নিয়ে।
শৃঙ্খলাভঙ্গের ওই ঘটনা নিয়ে উল্টো কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের দিকেই আঙুল তুললেন সাব্বির,' ছাট থেকে হ্যান্ডলিং করছি আসলে সব মিলিয়ে, বড় হয়ে নিজেকে কীভাবে সামলাব। কোচের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। কোচকে বলেছিলাম যে আমার পারিবারিক ইসু্য ছিল। উনি হয়তো বুঝতে পারেননি। আমার মনে হয়েছে, দলের ভেতরের কথাগুলো সংবাদমাধ্যমে না বলাই ভালো। যেহেতু সাব্বির রহমানের কিছু হলেই শৃঙ্খলার কথা চলে আসেৃ আমি চেষ্টা করছি ঠিক করার জন্য। কিন্তু আশেপাশের কিছু লোক হয়তোবা ভালো হতে দিচ্ছে না। পুশ করছে আমাকে। তবে সত্যি বলতে, এটা নিয়ে বেশি চিন্তিত নই আমি। আমার কাজ হচ্ছে খেলা, পারফর্ম করা। সেটাই করছি।'
ঢাকা পর্বে তিন ম্যাচ খেললেও কোনো ম্যাচে সুযোগ মিলেনি সাব্বিরের। যদিও তারা সব ম্যাচেই হেরেছিল। তখন সাব্বিরকে না খেলানোর বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা হয়। পরে দলের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন জানান, শৃঙ্খলাভাঙ্গের কারণে দলে নেওয়া হয়নি সাব্বিরকে। অনুশীলনে যোগ না দেওয়ায় এই শাস্তি দেওয়া হয়েছিল তাকে।
যদিও পারফর্ম করার সেই প্রমাণ নেই তার পারফরম্যান্সে। বিপিএলের আগে জাতীয় লিগ টি২০ তিনি সুযোগই পাননি। এই টুর্নামেন্টের আগে সবশেষ স্বীকৃত ক্রিকেটে সবশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি আট মাস াগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে। সেই টুর্নামেন্টের ৭ ম্যাচে কোনো ফিফটি ছিল না তার, মোট ১৪০ রান করেছিলেন ২১.৬৬ গড়ে।
বিপিএলে গত আসরে তিনি দলই পাননি। ২০২৩ আসরে খুলনা টাইগার্সের হয়ে চারটি ম্যাচ খেলে মোট ২৮ রান করার পর আর সুযোগ পাননি।