বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চিটাগাং কিংসের জয়রথ ছুটছেই। যদিও চলতি আসরে হার দিয়ে শুরু করা মোহাম্মদ মিঠুনের দল টানা তৃতীয় ম্যাচে তুলে নিয়েছে জয়। সোমবার স্বাগতিক সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৩০ রানে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকারও সেরা দুইয়ে উঠে এসেছে চিটাগাং।
সিলেটপর্বে ভাগ্য খুলেছিল স্বাগতিক ফ্র্যাঞ্চাইজির। হারের বৃত্ত ভেঙ্গে টানা দুই জয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস ছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সের। সোমবার এবার সিলেট পর্বের শেষ দিনে নিজেদের মাটিতে হারের স্বাদ পেল স্বাগতিকরা। দিনের প্রথম ম্যাচে চিটাগাং কিংসের কাছে ৩০ রানে হেরে গেছে সিলেট। উসমান খান-গ্রাহাম ক্লার্কের জোড়া ফিফটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ২০৩ রানের বড় পুঁজি গড়েছিল চিটাগাং কিংস। জবাবে জর্জ মুনশি ও জাকের আলির ঝোড়ো ইনিংসের পরও সিলেট থেমেছে ৮ উইকেটে ১৭৩ রানে। এ নিয়ে চলমান আসরে জয়ের হ্যাটট্রিক হলো চিটাগাং কিংসের।
উসমান খান, গ্রায়াম ক্লার্কের ঝড়ো শুরুর পর শেষ দিকে উত্তাল ইনিংসে চিটাগাং কিংসে দুইশো পার করান হায়দার আলি। চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে তাল পায়নি সিলেট স্ট্রাইকার্স। জর্জ মানসি আর জাকের আলি চেষ্টা করলেও তাদের দমিয়ে সহজেই জিতেছে কিংস।
রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রনি তালুকদারের উইকেট হারায় সিলেট। নাবিল সামাদের বলে কোন রান না করেই ফেরেন পল স্টার্লিং। আগের দুই ম্যাচে দারুণ খেলা জাকির এদিনও ভালো শুরু পেয়েছিলেন। তবে থিতু হয়ে এদিন ফেরেন আলিসের শিকার হয়ে। রনি তালুকদার আগের ফিফটি পেলেও এদিন দাঁড়াতে পারেননি। ব্যর্থ হন অ্যারন জোন্স।
ক্রিজ আঁকড়ে থিতু হয়ে পরে চেষ্টা চালান জর্জ মানসি, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার সঙ্গে যোগ দিয়ে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন জাকের আলি অনিকও। এই দুজনের ৬২ রানের জুটি ভাঙে মানসির বিদায়ে। ৩৭ বলে চারটি করে চার-ছক্কায় ৫২ করে থামেন তিনি। অধিনায়ক আরিফুল হক দুই ছক্কা মেরেই ফিরে যান। জাকের টিকে ছিলেন শেষ পর্যন্ত। তবে হারের ব্যবধান কমানো ছাড়া কিছু করতে পারেননি তিনি। জাকের অপরাজিত থাকেন ২৩ বলে ৪৭ রানে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কিংসের শুরুটা হয় বাজে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে সুযোগ পাওয়া বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আবার হন ব্যর্থ। তানজিম হাসান সাকিবের বলে পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচে ফেরেন ১০ বলে ৭ রান করে।
তবে এই ধাক্কা দ্রম্নতই সামলে নেয় কিংস। আবার জ্বলে উঠেন পাকিস্তানি উসমান, তার সঙ্গে মিলে ঝড় তুলেন ক্লার্ক। দুজনে মিলে যোগ করেন ৬৮ রান। ৩৫ বলে ৫৩ করে আরিফুল হকের বলে ফেরেন উসমান।
তবে চালিয়ে যেতে থাকেন ক্লার্ক, তিনি খেলেন আরও আগ্রাসী। ৩৩ বলে ৩ চার, ৫ ছক্কায় ৬০ করা ক্লার্ককে থামান নাহিদুল ইসলাম। শেষ দিকে কিংসের রান দুইশো ছাড়ায় পাকিস্তানি হায়দারের ব্যাটে। মাত্র ১৮ বলের উপস্থিতিতে ৩ চার, ৫ ছক্কায় ৪২ করে যান এই ব্যাটার। তার এই ইনিংসই গড়ে দেয় ম্যাচের তফাৎ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগাং কিংস: ২০ ওভারে ২০৩/৬ (উসমান ৫৩, পারভেজ ৭, ক্লার্ক ৬০, মিঠুন ২৮, হায়দার ৪২, শামীম ১, ওয়াসিম ৩, শরিফুল ১*, নাহিদুল ১/৩০, তানজিম ২/৩৮, নিহাদউজ্জামান ০/৩৯-, রুয়েল ১/৪৮, জোন্স ০/১৬, আরিফুল ১/৩০)।
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ২০ ওভারে ১৭৩/৮ (রনি ৭, স্টার্লিং ০, জাকির ২৫, মানজি ৫২, জোন্স ১৫, জাকের ৪৭*, আরিফুল ১২, তানজিম ০, নাহিদুল ৩, নিহাদউজ্জামান ১*; নাবিল ১/২৫, শরিফুল ১/৩৪, আলিস ২/৩৬-২, খালেদ ১/৩০, ওয়াসিম ৩/২৫, শামীম ০/১৮)।
ফল: চিটাগাং কিংস ৩০ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: গ্রাহাম ক্লার্ক।