শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

ছয় মাসের সর্বনিম্নে রাশিয়ার জ্বালানি তেল রপ্তানি আয়

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ২২ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ছয় মাসের সর্বনিম্নে রাশিয়ার জ্বালানি তেল রপ্তানি আয়

ডিসেম্বরে রাশিয়া জ্বালানি তেল রপ্তানি থেকে ১ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার আয় করে রয়টার্স

২০২৩ সালে ডিসেম্বরে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রপ্তানি বেড়েছে। তবে এ সময় রপ্তানি আয় কমে নেমেছে ছয় মাসের সর্বনিম্নে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। খবর অয়েল প্রাইস ডটকম।

রপ্তানি আয় কমার কারণ হিসেবে বাজার পর্যবেক্ষকরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শের তুলনায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে উরাল ও ইএসপিওসহ রুশ গ্রেডের অপরিশোধিত জ্বালানি। তার ওপর আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শের দাম তুলনামূলক কম। ফলে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ালেও আয় বাড়েনি।

অয়েল মার্কেট শীর্ষক প্রতিবেদনে আইইএ জানায়, ডিসেম্বরে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের জ্বালানি রপ্তানি নভেম্বরের তুলনায় দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল করে বেড়েছে। মোট রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৭৮ লাখ ব্যারেলে। এটি নয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রপ্তানি দৈনিক ২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বেড়েছে। দৈনিক রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ ব্যারেলে।

নয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রপ্তানি সত্ত্বেও এটি থেকে আয় লক্ষণীয় মাত্রায় কমে গেছে। ডিসেম্বরে রাশিয়া জ্বালানি তেল রপ্তানি থেকে ১ হাজার ৪৪০ কোটি ডলার আয় করে, যা ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আইইএ বলছে, রুশ জ্বালানি তেলে মূল্যছাড় বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শের কম দামের কারণে আয় কমে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্র রুশ জ্বালানি তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে কঠোর পদক্ষেপ নিলে দেশটির বাজার আদর্শ জ্বালানি তেল উরাল ক্রুডের দাম কমে যায়। এমনকি জিভুক্ত দেশগুলোর ব্যারেলপ্রতি বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ৬০ ডলারেরও নিচে নামে উরাল ক্রুডের বাজারদর।

নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কড়াকড়ির কারণে ভারতসহ শীর্ষ কিছু বাজারে জ্বালানি তেল রপ্তানি নিয়ে বিপাকে পড়ে মস্কো। ভারতীয় অনেক ক্রেতা রুশ জ্বালানি তেল ক্রয় বন্ধ রেখেছেন।

জানা গেছে, গত বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দম কমেছে ১০ শতাংশ। দুই বছরের মধ্যে এবারই প্রথম নিম্নমুখী প্রবণতায় বছর শেষ করল জ্বালানি তেলের বাজার। ভূরাজনৈতিক সংকট, উত্তোলন হ্রাস ও মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কঠোর নীতির কারণে বছরজুড়ে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। এসব সংকট না থাকলে দাম আরও কমে যেত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্ববাজারে দাম বাড়াতে চলতি বছর কয়েক দফায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন ও রপ্তানি কমিয়েছে ওপেক ও সহযোগী দেশগুলোর জোট ওপেক পস্নাস। ফলে জ্বালানিটির বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) বলছে, উত্তোলন ও রপ্তানি কমানোর এ ধারা অব্যাহত থাকলেও চলতি বছর সরবরাহ উদ্বৃত্তে থাকবে।

বিনিয়োগ ব্যাংক সিটির গবেষণা বিভাগ সম্প্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের মূল্য পূর্বাভাস সংশোধন করে কমিয়েছে। চলতি বছর এটির গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৪ ডলার ধরা হয়েছে। তবে চলতি বছর বাজার আদর্শটির দাম ৭০ ডলারের নিচে নামবে না বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তাছাড়া আগামী বছরের জন্যও পূর্বাভাস কমানো হয়েছে।

সিটি গ্রম্নপের বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় ধরনের কোনো সমস্যা না দেখা দিলে চলতি বছর নিম্নমুখী চাহিদার বিপরীতে মাত্রাতিরিক্ত সরবরাহের ধারা অব্যাহত থাকবে। জ্বালানি তেলের দামও নিম্নমুখী থাকবে। ফলে ওপেকপস্নাস বছরজুড়ে উত্তোলন কমানোর নীতি বহাল রাখবে।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শের দামে এমন নিম্নমুখী প্রবণতার প্রভাব পড়েছে রুশ বাজার আদর্শ উরাল ক্রুডের ওপরও। দাম কমে যাওয়ায় এখাত থেকে ডিসেম্বরে কাঙ্ক্ষিত আয় আসেনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে