সঞ্চালন লাইনসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় অংকের বিদেশী ঋণ নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বিদু্যৎ সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। সঞ্চালন লাইনসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় অংকের বিদেশী ঋণ নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বিদু্যৎ সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এসব বিদেশী ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কোম্পানিটি। চলতি ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) টাকার অবমূল্যায়নের কারণে কোম্পানিটির ৬১১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ফলে এ সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান দাঁড়িয়েছে ২৫৬ কোটি টাকায়। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। শনিবার অনুষ্ঠিত সভায় প্রথম প্রান্তিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে পাওয়ার গ্রিডের পর্ষদ।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে পাওয়ার গ্রিডের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ১১৬ কোটি টাকায়, যা গত ৩০ জুন শেষে ছিল ৫০ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৮৪৮ কোটি টাকা, যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৭৫৭ কোটি টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৫৮ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৯৯ কোটি টাকা। প্রথম প্রান্তিকে টাকার অবমূল্যায়নজনিত কারণে কোম্পানিটির ৬১১ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। যেখানে আগের হিসাব বছরে একই সময়ে এ লোকসান ছিল ৩৬০ কোটি টাকা। ফলে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটিকে ২৫৬ কোটি টাকা নিট লোকসান গুনতে হয়েছে। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট লোকসান ছিল ১০১ কোটি টাকা। চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৮১ পয়সা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে লোকসান ছিল ১ টাকা ৪২ পয়সা। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৩৩ টাকা ২ পয়সায়।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩-২৪ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ সুপারিশ করেনি পাওয়ার গ্রিডের পর্ষদ। এর আগে ২০২২-২৩ হিসাব বছরে উদ্যোক্তা পরিচালক বাদে অন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল পাওয়ার গ্রিড। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৬২৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির ১২১ কোটি ২৪ লাখ টাকা নিট মুনাফা হয়েছিল। ২০২২-২৩ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৮ টাকা ৮৯ পয়সা, যেখানে আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৭০ পয়সা।
পাওয়ার গ্রিড দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০০৬ সালে। বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১৫,০০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৯১৩ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১০৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯১ কোটি ৩৮ লাখ ৬ হাজার ৯৯১। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক ৫০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে, ২২ শতাংশ সরকারের কাছে, ১৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে, দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ও বাকি ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে রয়েছে।