বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

​ সুন্দরগঞ্জের পূজা মন্ডপে প্রতিমা ভাঙচুর

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
  ০৮ অক্টোবর ২০২১, ১২:২১

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার একটি নির্মাণাধীন অস্থায়ী পূজা মন্ডপের সবকটি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। সংবাদ পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ ও পুলিশ প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চাচিয়া মীরগঞ্জ সাহাপাড়া গ্রামের অস্থায়ী পূজা মন্ডপে এ ঘটনা ঘটেছে।

এদিন সকাল এগাটার দিকে সরজমিনে পূজারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের সনাতন ধর্মাবলম্বীর লোকজন গত ১০ বছর ধরে অস্থায়ীভাবে মন্ডপ তৈরি করে দুর্গাপূজা করে আসছেন। প্রত্যেক বছরের ন্যায় এবারেও তারা পূজা উদযাপন করতে প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। দেখভাল করতে নিয়মিত পাহারাও দেন তারা। বৃহস্পতিবার ভোর রাত তিনটার দিকে পূজারীরা ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ভোর চারটার দিকে বিকট শব্দে ঘুম ভাঙ্গে তাদের। এসে দেখেন তাদের মন্ডপের সবকটি প্রতিমা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

সাহাপাড়া সার্বজনিন পূজামন্ডপের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে মনোরঞ্জন সাহা বলেন, আমি রাত তিনটার দিকে প্রতিমাগুলো দেখে এসে ঘুমাই। ঘন্টা খানেক পরে বিকট শব্দে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পরে গিয়ে দেখি মন্ডপের সবকটি প্রতিমা মুখ থুবড়ে মাটিতে পরে আছে। চিৎকার করলে সবাই ছুটে আসেন।

মন্ডপ সভাপতি চন্দন কুমার সাহা বলেন, আমরা ১০বছর ধরে এখানে অস্থায়ী পূজামন্ডপ তৈরি করে পূজা করে করে আসছি। কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। এঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। এতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবিও জানান তিনি।

প্রতিমা তৈরির মালাকর সুভাস চন্দ্র বর্মন ওজনের কারণে প্রতিমা ভেঙ্গে পড়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, গত ২২/২৩ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। কখনো এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছ।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য যুব পরিষদের উপজেলা সভাপতি পিন্টু কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনার দায় উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি এড়াতে পারবেন না। তারা কখনো পূজা মন্ডপের দেখাশোনার জন্য মন্ডপের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে যোগাযোগ করেননি।

উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নিমাই ভট্টাচার্য বলেন, এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমরা প্রত্যেক মন্ডপের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের আগেই বলেছি। তারা যেন নির্মাণাধীন সময়ে নিজেরাই পাহারা দেন নিজ নিজ মন্ডপগুলো।

ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নে কখনো এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি খুব কষ্ট দিয়েছে আমাকে। যারা এটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ বলেন, এ বিষয় তথ্য উদঘাটনে পুলিশ ব্যাপক তৎপর রয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, বিষয়টি দেখে আমরা খুবই মর্মাহত। মন্ডপ কমিটির লোকজনদের হাতে নগদ বিশ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। প্রতিমা এনে যাতে তারা আবারও নতুন করে পুজা উদ্যাপন করতে পারেন।

যাযাদি/ এমডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে