বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতারণা :সিঙ্গাপুরের কথা বলে তুলে দেওয়া হলো চট্টগ্রামের প্লেনে

লক্ষীপুর প্রতিনিধি
  ১৪ মে ২০২২, ২০:৪৪

ভাতিজাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই নারীর নাম আলেয়া বেগম। অভিযুক্ত আলেয়া ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার কুদবা ইউনিয়নের কুদবা গ্রামের পল্লী পশু চিকিৎসক বশির আহমেদের স্ত্রী। এছাড়াও তিনি ভুক্তভোগী মো. জুয়েলের বাবা শহীজল মাঝির বোন। শহীজল মাঝি কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের বটগাছতলা এলাকার বাসিন্দা।

জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জুয়েলকে ঢাকা-চট্টগ্রামের বিমান টিকিট ধরিয়ে দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে নেমে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন জুয়েল। ঘটনার পর থেকে আলেয়া বেগম, তার ছেলে আওলাদ হোসেনসহ সংঘবদ্ধ স্বজনরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

ঘটনায় অভিযুক্তসহ অন্যরা হলেন, আওলাদের স্ত্রী আয়েশা আক্তার, শ্যালক সানী, দুলাভাই শামীম হোসেনসহ জন। তাদের বিরুদ্ধে জুয়েলের বাবা শহীজল মাঝি বাদী হয়ে আলেয়া তার ছেলে আওলাদসহ জনের নামে মে লক্ষীপুর জজ আদালতে মামলা করেন। এদিকে শনিবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী মুনসুর আহমেদ দুলাল জানিয়েছেন, আদালতের বিচারক মামলা আমলে নিয়েছেন। এরপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালী কার্যালয়কে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ৩০ বছর পর আলেয়া মাস আগে চরমার্টিনে ভাই শহীজলের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বাবা মারা যাওয়ার খবর পেয়েও তখন আসেননি। আলেয়া যাওয়ার কিছুদিন পর তার ছেলে আওলাদ বেড়াতে আসে। তখন শহীজল জানতে পারেন, আওলাদ পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে তালাক দেয়। এতে বোনের আবদারে শহীজল পাত্রী দেখে লক্ষীপুরেই তাকে দ্বিতীয় বিয়ে করান।

একপর্যায়ে আলেয়া জানায়, আওলাদের প্রথম শ্বশুর তাকে সিঙ্গাপুরে একটি ভিসা দিয়েছে। - দিনের মধ্যেই তাকে সিঙ্গাপুর যেতে হবে। তা না হলে ভিসা বাদ হয়ে যাবে। এজন্য দ্বিতীয় শ্বশুরদের কাছ থেকে লাখ টাকা নিয়ে দিতে হবে। শ্বশুরপক্ষ থেকে টাকা নেওয়ার পরদিনই বিদায় নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে আওলাদ মামার বাড়ি থেকে বের হয়।

এর একদিন পরই অনলাইনের একটি নম্বর দিয়ে শহীজলদের ফোনে কল দিয়ে আওলাদ সিঙ্গাপুর পৌঁছেছে বলে জানায়। সময় মামাতো ভাই জুয়েলকেও সিঙ্গাপুর নেওয়ার জন্য বলে। এতে আলেয়া তার ভাই শহীজলের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর এটি লাখ টাকায় সমঝোতা হয়। এর মধ্যে শহীজলকে লাখ টাকা দিতে বলে। বাকি টাকা আলেয়া নিজে দেবে বলে জানান।

অনলাইন থেকে বিদেশি ফোন নম্বরের মতো নম্বর দিয়ে প্রায়ই শহীজলের কাছে কল দেয় আওলাদ। এতে শহীজল মাঝি এনজিও, মেয়ে জামাইয়ের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে লাখ টাকা সংগ্রহ করে।

অভিযোগকারীর দাবি, টাকা জোগাড়ের একদিন পরই ২৯ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের ফ্লাইট আছে বলে জানায় অভিযুক্ত। ওই দিন সকালে নগদ চার লাখ টাকাসহ বোন আর ছেলেকে নিয়ে ঢাকার বিমানবন্দরে রওনা হন শহীজল মাঝি। বিমানবন্দরে যাওয়ার পর তার বোন একজনের ব্যাগে টাকা দেওয়ার জন্য বলে। টাকা দেওয়ার পরপরই তাকে বিমানের টিকিট দিয়ে বিমানে উঠতে বলা হয়।

অভিযোগকারীর ছেলের দাবি, তিনি বিমানবন্দরের ২টি গেট অতিক্রম করার পর দেখা হয় তার ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে তাকে ভয় দেখিয়ে তাকে বিমানে ওঠানোর দাবি করেন তিনি। এর ঘণ্টাখানেক পর বিমান চট্টগ্রাম নামে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে তাকে একটি হোটেল কক্ষে নিয়ে অস্ত্র দেখিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয় বলে দাবি করেন তিনি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে