সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ। সোনাঝরা এই ফুলের নাম সোনালু। কিশোরীর কানের দুলের মতো বৈশাখী হাওয়ায় দুলতে থাকে হলুদ-সোনালি রঙের থোকা থোকা ফুল। আবার ফুলের ফাঁকে দেখা যায় লম্বা ফল। হলুদবরণ সৌন্দর্যে মাতোয়ারা করে রাখে চারপাশ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর নাম দিয়েছিলেন অমলতাস।
গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে গ্রামে একসময় অনেক সোনালু গাছ চোখে পড়তো। এছাড়াও হাট, বাজার ও গঞ্জের চারপাশেও দেখা যেত হলুদিয়া সাজের সোনালুর উপস্থিতি। এখন হাতেগোনা কিছু গাছ দেখা যায় পথে প্রান্তরে। দিন দিন কমে আসছে সোনালুর সংখ্যা। তবে এখন শিবচর উপজেলার মহাসড়কসহ অনেক স্থানে দেখা যাচ্ছে এই সোনালু।
প্রকৃতিকে নয়নাভিরাম রূপে সাজিয়ে তুলতে সোনালু ফুলের জুড়ি নেই। পরিবেশ ও প্রকৃতির শোভা বৃদ্ধিতে সোনালু দারুণ এক মায়া এনে দিয়েছে। গ্রামের শিশু-কিশোরীরা এখনো ওই ফুলকে কানের দুল হিসেবে লাগিয়ে খেলায় মেতে ওঠে। সোনালু ফুলে শোভিত মাদারীপুর শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম-মহল্লা।
উপজেলার কুতুবপুর সীমানা নামক স্থানে গ্রামে এলে দেখা মেলে সোনালু গাছের। আর সেখানে ভ্যান থামিয়ে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পারভেজ ও রফিকুল ইসলাম নামের দুই যুবকের সঙ্গে কথা হয়।
পারভেজ যায়যায়দিনকে বলেন, ‘কোনো একদিন চলন্ত রাস্তায় দূর থেকে গাছটি দেখলেও কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়নি। পরে কাজ শেষ করে বন্ধু রফিকুল ইসলাম সঙ্গে নিয়ে সোনালু গাছটির কাছে গিয়ে এর রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। এ যেন প্রকৃতির অপার কারুকাজ।’
রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘একসময় সোনালু গাছ প্রকৃতিতে অনেক বেশি থাকলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসছে। গাছটি সাধারণত যত্ন করে লাগানো হয় না বরং সে নিজেই বেড়ে ওঠে অযত্নে অবহেলায়। নিরবে বেড়ে ওঠে, থাকেও নিষ্প্রাণ নির্ঝঞ্ঝাট ভাবে। যখন ফুল ফোটে তখন কারো সাধ্য নেই এই গাছকে দৃষ্টি না দিয়ে এড়িয়ে যাবার। বেড়ে ওঠার সময় তেমন দৃষ্টিতে না পড়লেও ফুল ফোটার পর দেখে সবার মন-প্রাণ প্রশান্তিতে ভরে যায়।’
সোনালু গাছ নিয়ে কথা হয় কুতুবপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন হক একজন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের সাথে। তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, ‘গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে গ্রামে একসময় অনেক সোনালু গাছ চোখে পড়তো। এছাড়াও হাট, বাজার ও গঞ্জের চারপাশেও দেখা যেত হলুদিয়া সাজের সোনালুর উপস্থিতি। এখন হাতেগোনা কিছু গাছ দেখা যায় পথে প্রান্তরে। দিন দিন কমে আসছে সোনালুর সংখ্য ’।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম শিবচর শাখার সভাপতি সাংবাদিক অপূর্ব জয় বলেন, ‘আমরা শৈশবে সোনালু গাছ বাড়ির আশপাশেই দেখেছি। তবে এখন আর দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে সোনালু গাছের দেখা মেলে। গ্রীষ্মকালে জারুল, কৃষ্ণচূড়ার মতো সোনালু ফুল আমাদের জন্য উপহার। তবে প্রকৃতিকে সাজাতে আমাদেরও সবার এগিয়ে আসা উচি ’।
যাযাদি/ এসএম