অবৈধ ভাবে মালয়েশিয়ায় পাচার হয়ে পাচারকারীদের নির্নাযাতনে নিহত হওয়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের যুবক জাহিরুল (৩৯) এর লাশ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টায় হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। থানা পুলিশ লাশটি থানায় নিয়ে এসে আইনী প্রকৃয়া শেষে বুধবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করেছে। এর আগে ২৪ মে পাচারকরী চক্রের সদস্যদের দ্বারা জিম্মি ও নির্যাতনের শিকার জহিরুল মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যায়। সে উপজেলার বিশনন্দী গ্রামের বিল্লাল মিয়ার পুত্র।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী এলাকার কয়েকজন যুবককে নদী পথে মালয়েশিয়ায় পাচার করে দেয় স্থানীয় পাচারকারী চক্র। এর মধ্যে জহিরুল (৩৯) ও একজন ছিল। এর পর বার্মা থেকে জহিরুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদের কাছে ফোন আসে যে, তার ছোট ভাই জহিরুল মায়ানমারের রিসিভ ঘরে দালালদের হাতে জিম্মি আছে। তাকে জীবিত পেতে হলে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এ ব্যাপারে পাচার হওয়া ও পাচারকারী চক্রের নির্যাতনের শিকার জহিরুলের ভাই আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একই এলাকার আবুল হোসেন নামে এক পাচারকারী চক্রের সদস্য সহ ৫ জনের নামে একটি মানবপাচারের মামলা দায়ের করেন এবং আবুল হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। গ্রেফতারকৃত মানবপাচারকারী আবুল হোসেন চৈতনকান্দা উত্তর আগারবাড়ী গ্রামের এলাহীর ছেলে। এ দিকে দালাল চক্র জহিরুলের ভাইয়ের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে উল্টো মামলায় ফেঁসে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে জহিরুল কে মায়ানমার থেকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। মালয়েশিয়ার জিম্মিখানায় ও তার উপর চলে অমানুসিক নির্যাতন। এ দিকে ২৪ মে বুধবার মালয়েশিয়া থেকে খবর আসে যে, পাচার হওয়া জহিরুল মালয়েশিয়ায় পাচারকারীচক্রের হাতে জিম্মি অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিৎ করেছেন ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়াইহাজার থানার এস আই নূর এ আলম।
এদিকে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জহিরুলের লাশ বিমানবন্দর থেকে গ্রহণ করে আড়াইহাজার থানা পুলিশ। এ সময় নিহত জহিরুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ ও উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে নিহত জহিরুলের বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। পুত্র হারা মা, স্বামী হারা স্ত্রী আর পিতা হারা দুটি অবুঝ সন্তানের চোখে মুখে শুধুই হারানোর বেদনার ছাপ। চলছে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ এক অসহায় পরিবারের বুক ফাটা আর্তনাদ। কোন শান্তনাই যেন তাদেরক শান্ত করতে পারছে না।
অভিবাসীদের কে নিয়ে কাজ করা সংগঠন ওকাপ আড়াইহাজার অফিসের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, নিহত জহিরুলের লাশ দাফন ও ক্ষতিপুরণের বিষয়ে ওকাপ অফিস সর্ব প্রকার কাজ করবে।
যাযাদি/ এস