শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

তিতাসে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে মধ্যবিত্ত আয়ের রোগীদের ভীড়

তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
  ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫৯
তিতাসে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে মধ্যবিত্ত আয়ের রোগীদের ভীড়

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা পৌছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক। এসব ক্লিনিকে নিস্ন আয়ের মানুষের আনাগোনায় মুখরিত থাকলেও এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঐসব ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা নিতে ভীড় করছে মধ্যবিত্ত আয়ের রোগীরা। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লার তিতাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

দেখা যায়, সকাল থেকে ঘন কুয়াশা বিরাজ করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশার দাপট কিছুটা কমে আসলেও বেলা ১১টা থেকে হালকা বাতাস বইতে শুরু করে। হিমেল হাওয়ায় অনুভূত হতে শুরু করে কনকনে শীত।

অন্যান্য দিন দুপুরে ১/২ ঘন্টার জন্য সূর্য্যি মামাকে দেখা গেলেও শনিবার ছিল তার ব্যতিক্রম। সমস্ত দিনজুড়ে বিরাজ করেছে হাড় কাপানো কনকনে শীত। সরকারি ছুটি থাকায় রাস্তা-ঘাট ও বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে লোকজনদের সমাগম ছিল খুব কম।

কড়িকান্দি, জিয়ারকান্দি ও মজিদপুর ইউনিয়নের একাধিক কমিউনিটি ক্লিনিক ঘুরে দেখা যায়, দেশ জুড়ে কনকনে শীত বিরাজ করায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা রোগের পাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। তারা প্রয়োজনীয় ঔষুধ পাওয়ার জন্য ক্লিনিকগুলোতে ভীড় করছে।

এসব মানুষের মধ্যে বেশীরভাগ ঠান্ডাজনিত রোগী। সাড়ে চার বছরের ছেলে সন্তানকে নিয়ে ক্লিনিকে আসা একজন সহকারী শিক্ষিকা জানান, অসুখ-বিসুখ হলে আগে প্রাইভেট ক্লিনিকে দেখাতাম। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে এবারই প্রথম বাচ্চাকে নিয়ে সরকারি ক্লিনিকে আসলাম।

কড়িকান্দি বাজারের অটোরিক্সা চালক মজিবুর রহমান জানান, ‘আমার অটোরিক্সার সামনে গ্লাস নেই; পেটের দায়ে অটো নিয়ে বাহির হতে হয়। গাড়ি চালাতে গিয়ে হাত-পা ঠান্ডায় কাঁপে, নাক ও চোখ দিয়ে পানি বাইর অয়’। বাইরে না এলে কাম না করলে খামু কি?

একাধিক কমিউনিটি হেলথ্ কেয়ার প্রাভাইডার জানান, গত ডিসেম্বর মাসে প্রতিটি ক্লিনিকে গড়ে ৫০-৬০জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছেন। চলতি মাসের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০-৫০জনে। মাস শেষে যা ৯০-১০০জনে উন্নীত হবে। তারা জানান, আগে নিম্নবিত্ত বা নিম্ন আয়ের মানুষ ক্লিনিকগুলোতে সেবা নিতে আসলেও এবার বৈরী আবহাওয়ার কারণে মধ্যবিত্তের লোকজনও সেবা নিতে ভীড় করছে। তার কারণ হিসেবে তারা জানান, খোলা বাজারে ডাক্তারের ভিজিট বেড়ে যাওয়ায়; বিশেষ করে ঔষুধের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় তারা সরকারি ক্লিনিকমুখী হচ্ছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সরফরাজ হোসেন খান জানান, উপজেলার ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিকে গত মাসের তুলনায় এবার রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় ঠান্ডাজনিত রোগী যাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ উল্লেখযোগ্য। গত ৩ মাসে গড়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৬৭জন রোগী চিকিৎসা নিলেও চলতি মাসে এ হিসাব ভিন্নমাত্রা যোগ করবে। মানুষ সেবা ও ঔষুধের ঘাটতি যাতে না হয় সেদিকে নজরধারী রাখা হয়েছে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে