মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

নীলফামারীতে ভুয়া নিউরো সার্জারী ডাক্তার আটক, ক্লিনিক সিলগালা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী
  ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:১৩
নীলফামারীতে ভুয়া নিউরো সার্জারী ডাক্তার আটক, ক্লিনিক সিলগালা

চিকিৎসা নামক মহান পেশার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে এরই মধ্যে শত শত রোগীর চিকিৎসা দিয়ে জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন ভুয়া চিকিৎসক মো. ফারুক হোসেন ওরফে রুবেল। ঘুর্নাক্ষরেও বুঝতে পারেননি চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার লোকজন যে, তিনি একজন ভুয়া চিকিৎসক। জেলা সদরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সামনের এ ঘটনায় শহরজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে মদিনা ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকে রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদানের সময় তাকে হাতে নাতে আটক করেন, সিভিল সার্জন ডা. হাসিবুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। শহরে ব্যাপক মাইকিং করে গত দু’মাস থেকে তিনি ওই ক্লিনিকে রোগী দেখছিলেন।

তিনি নিজেকে নিউরো সার্জারী এমবিবিএস (রাজঃ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (ফিজিক্যাল মেডিসিন), এমডি (নিউরো মেডিসিন) এফপি, নিউরো মেডিসিন, মেডিসিন ও বাত-ব্যথা রোগ বিশেষজ্ঞ, নিউরোলজী বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঢাকা এই পরিচয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। এঘটনায় তাকে এক বছরের কারাদন্ড, ৫০হাজার টাকা জড়িমানা ও সঙ্গে থাকা মোবাইল, মোটরসাইকেল জব্দ এবং এক মাসের জন্য ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দিয়ে সীলগালা করে দেন ভ্রাম্যমান আদালত। আটককৃত ভূয়া চিকিৎক ফারুক হোসনে ওরফে রুবেল রংপুর জেলার নীলকন্ঠ এলাকার মৃত আলিমুদ্দিনের পুত্র এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্রাদার বলে জানা গেছে।

এদিকে নীলফামারী জেলা সদর ছাড়াও উপজেলা সদয় সৈয়দপুর, ডোমার, জলঢাকা, ডিমলা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার আনাচে-কানাচে ব্যাঙের ছাড়া মতো গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বেশীর ভাগই চলছে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে। অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্টদের মাসোহারা দিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলছে অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রতি মাসে পরিদর্শনের কথা থাকলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তা হচ্ছে কাগজে-কলমে। অভিযোগ উঠেছে বেশীর ভাগ ক্লিনিকেরই বৈধ কাগজপত্র না থাকার। নিয়ম অনুযায়ি চিকিৎসক, পর্যাপ্ত জনবল, অপারেশন থিয়েটর, ল্যাব, পর্যাপ্ত মেশিনপত্র না থাকলেও রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বছরের পর বছর। সূত্র জানায়, গোটা জেলায় প্রায় দুই শতাধিক ক্লিনিক ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে।

একই সূত্র জানায়, উপজেলা সদর সৈয়দপুরের অবস্থা খুবই নাজুক। গিঞ্জি এ শহরে কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। আর তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে গড়ে উঠেছে পাড়ামহল্লায় যত্রতত্র ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। যাদের বেশীর ভাগই পরিচালিত হচ্ছে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে। সূত্র জানায়, এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, আইনজীবী ও ব্যবসায়ী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে সূত্রটি দাবি করছে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে