শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড়ে ভেসে যাওয়া কুতুবদিয়ার ধলু ৩৩ বছর পর সন্ধান মিললো হাতিয়ায়

কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:৪৫
ঘূর্ণিঝড়ে ভেসে যাওয়া কুতুবদিয়ার ধলু ৩৩ বছর পর সন্ধান মিললো হাতিয়ায়

১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত করে ঘূর্ণিঝড়। ফলে জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত করে ও অনেক মানুষ নিহত হয় এবং ভেসে যায়।সে সময় সাগর বেষ্টিত দ্বীপ কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের উত্তর মগডেইল এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে নুরুল আবছার প্রকাশ ধলু লবণের মাঠে কাজ করতে গিয়ে মহেশখালী উপজেলা থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ভেসে যান।

গত ২৪ জানুয়ারি হাতিয়ার নাগরিক টিভির শামীমুজ্জামান শামীম একটি প্রতিবেদন করেন, তেত্রিশ বছর ধরে নিখোঁজ মানুষটা কি ফিরে পাবে তার পরিবার? এ শিরোনামে ভিডিও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সেই ভিডিও তাদের চোখে পড়লে হাতিয়ার বাচ্চু মামা নামে সেই নিখোঁজ লোকটি তাদের ঘূর্ণিঝড়ে ভেসে যাওয়া কুতুবদিয়ার ধলু বলে দাবী পরিবারের।

এ ভিডিও দেখে হাতিয়া থানার কবুতর হোটেলে ৩৩ বছর পর মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রয়েছে ধলু এ খবরে ছেলেকে একনজর দেখতে ছুটে যান পিতা আবদুর রহমান ও ছোট ভাই ফোরকানসহ চাচাতো ভাই শামসুল আলম।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় হাতিয়া থেকে ফিরে নুরুল আবছার প্রকাশ ধলু সাথে সাক্ষাৎ এর বিষয়টি দৈনিক যায়যায়দিনের প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন চাচাতো ভাই মো: শামসুল আলম।

তিনি বলেন, হাতিয়ার কবুতর হোটেলে যাওয়ার পর সাক্ষাৎ হয় তাদের ভাই ধলুর সাথে। তখন তাঁর পিতা আবদুর রহমান ধলু বলে ডাক দিলে তখন সে কান্না জড়িত কন্ঠে বলে বাপ' বাপ' তারপর বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে মাঠিতে লুটিয়ে পড়েন ধলু। চার ভাইয়ের মধ্যে ধলু দ্বিতীয়। যখন সে মহেশখালী উপজেলায় লবণের মাঠ করতে গিয়েছিলেন তখন তাঁর বয়স ছিল ১৬ বছর। তখন ঘুর্ণিঝড়ে সাগরে ভেসে গেছেন বলে খবর পান। অনেক খোজাখুজি পরও তাঁর লাশ কিংবা কোনো সন্ধান মেলেনি পরিবারের। ৩৩ বছর পর সন্ধান পেয়ে দেখতে যান ধলুকে নিয়ে আসার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলে জানান তিনি।

হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত পিতা আবদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ছেলে ধলু মহেশখালীতে লবণের মাঠ করতে গিয়ে ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে ভেসে গিয়ে ছিলেন। খবর পেয়ে তিনি হাতিয়ায় দেখতে গেছেন। অবশেষে তাঁর ছেলেকে ফিরে পেয়েছেন। এজন্য সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এদিকে, নাগরিক টিভির হাতিয়ার প্রতিনিধি শামীমুজ্জামান শামীম সাথে কথা হলে দৈনিক যায়যায়দিনকে জানান, এ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে পিতা এবং অনেকে পুত্র দাবী করতেছেন। এর মধ্যে কুতুবদিয়ার আবদুর রহমান নামে একজন বৃদ্ধ তার পুত্র দাবী করেছেন এবং দেখতেও এসেছেন। কয়েকজন দেখেও গেছেন এবং আরও অনেকে আসতেছেও যাচাই-বাছাই মাধ্যমে তাঁর সঠিক পরিবারের কাছে ফিরে যাক এ কামনা করেন তিনি।

হাতিয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি জিসান আহমেদ দৈনিক যায়যায়দিনকে জানান, অনেকদিন যাবত ভারসাম্যহীন একজন লোক এখানে রয়েছে। নাগরিক টিভিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর কুতুবদিয়া কিছু লোক তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। যাচাই-বাছাই মাধ্যমে হস্তান্তর করে হবে বলে জানান তিনি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে