সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জমজমাট গদখালীর ফুলের বাজার 

জহিরুল ইসলাম, ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
  ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫৪
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জমজমাট গদখালীর ফুলের বাজার 

ফুলের রাজধানী হিসেবে খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারী ফুলের বাজার। ২১শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জমে উঠেছে গদখালীর পাইকারী ফুলের বাজার। এখন ফুলের ভরা মৌসুম, সারা বছরই ফুল উৎপাদন ও বিক্রি হয়, তবে শীত মৌসুমে ফুল উৎপাদনও যেমন বেশি হয়, ফুল বিক্রিও তেমনি অনেক বেশি হয়, খুব সকালে এখানে ফুলের বেচাকেনা শুরু হয়, চাষিরা সাইকেলে, ভ্যানে করে হরেক রকমের ফুল নিয়ে আসেন, ফুল চাষী ও ফুল ব্যবসায়ীদের পদচারণায় প্রতিদিন মুখরিত হয়ে ওঠে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারী ফুলের বাজার। দেশের চাহিদার ৭০ ভাগ ফুল সরবরাহ হয় এই গদখালী বাজার থেকে।

২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সবচেয়ে গাধা ফুলের চাহিদা বেশি থাকে, পাশাপাশি রজনী, ভুট্টা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা, জিপসী, রড স্টিক, সহ সকল ফুলের চাহিদা থাকে।

মঙ্গলবার (২০ শে ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, গদখালী বাজারে প্রকারভেদে এক হাজার গাধা ফুল হচ্ছে ১০০০ থেকে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত, প্রকারভেদে প্রতি পিছ গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকা থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত, চায়না গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত, প্রকারভেদে প্রতি পিছ রজনীগন্ধা বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত, প্রকারভেদে প্রতি পিছ জারবেরা বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকা থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত, প্রকারভেদে প্রতি পিছ গ্লাডিওলাস ৫ টাকা থেকে ১২ টাকা বিক্রি হচ্ছে, চন্দ্রমল্লিকা বিক্রি হচ্ছে ৪ টাকা থেকে ৬ টাকা। ফুলচাষী সুমন হোসেন বলেন আমার ১ বিঘা জমিতে গোলাপের চাষ করেছি বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ বছর গোলাপের ফলন হয়নি। আঃ মান্নান নামে অপর এক চাষি বলেন গোলাপের দাম ভালো একশো গোলাপ ২৮০০ টাকা বিক্রি করেছি।

ফুল ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন জানান অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফুলের দাম একটু বেশি, ২১ শে ফেব্রুয়ারী গাধা ফুলের চাহিদা থাকে বেশি। চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায় ফুলের দাম বেশি হওয়ার কারণ ফুলে ছত্রাক জনিত রোগের আক্রমণ, যার ফলে অনেক চাষির ফুলের বাগান নষ্ট হয়ে গিয়েছে, ফুলের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেশি।

যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় গদখালী ইউনিয়ন, নাভারণ ইউনিয়ন, নির্বাসখোলা ইউনিয়ন ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফুলের চাষ হয়, এর মধ্যে টাওরা, সৈয়দপাড়া, পানিসারা, নিমতলা, হাড়িয়া, পটুয়া পাড়া ও গদখালী অন্যতম।

প্রতিদিন ঢাকা সহ দেশের সব জেলায় গদখালীর ফুল সরবরাহ করা হয়, পরিবহন, পিকআপ, ট্রেনে করে ফুল পৌছে যায় দেশের সর্বত্র।

যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, ফুল চাষকে আরও বেগবান করতে সকলের প্রতি আহবান জানান, তিনি আরও বলেন ফুল সারাবছরই বিক্রি হয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি। এবছর রোগের আক্রমণ বেশি যার কোন প্রতিকার মিলছে না, যার ফলশ্রুতিতে ফুলের ধরন কম হওয়ায় দাম বেশি।

১৯৮২ সালে শের আলী সরদারের হাত ধরে প্রথম গদখালীতে ফুলের বানিজ্যিক চাষ শুরু হয়, তিনি প্রথম ১ বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ করেন পানিসায়, যা আজ সারা বিশ্বে ফুলের রাজধানী হিসেবে পরিচিত।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে