শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সাতকানিয়ায় চাঁদা নিতে এসে জনতার ধাওয়া খেল পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা, সোর্স আটক

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ১৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪৭
সাতকানিয়ায় চাঁদা নিতে এসে জনতার ধাওয়া খেল পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা, সোর্স আটক

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দাবিকৃত চাঁদা নিতে এসে স্থানীয় জনতার ধাওয়া খেল পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসীরা পাহাড়ে আতœগোপন করলেও তাদের সোর্স মং সো মারমাকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা।

সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বৈতরণী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান সাতকানিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার। তিনি বলেন, চাঁদা নিতে এসে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে পাহাড়ে আতœগোপন করে। সন্ত্রাসীদের সোর্স সন্দেহে আটক মং সো মারমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

ওসি জানান, আটককৃত মং সো মারমা বৈতরণী এলাকায় নিজস্ব কৃষি খামারের দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিল। তবে তার পৈত্রিক বাড়ি পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রোয়াজর পাড়া এলাকায়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত রোববার (১৭ মার্চ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড বৈতরণী এলাকায় এসে প্রথমে সুয়ালক খালের উপর নতুনভাবে নির্মিত সেতুর ঠিকাদার ও পরে একই ওয়ার্ডের পাহাড়ের পাদদেশে গ্রীন ওয়ার্ল্ড এগ্রো নার্সারির ম্যানেজারের কাছ থেকে চাঁদাদাবি করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা।

এ সময় সন্ত্রাসীরা সোমবার চাঁদা নিতে আসার কথা বলে চলে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল ১০টার দিকে ৩টি মোটরসাইকেল যোগে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এগ্রো খামারে এসে ম্যানেজারের নিকট চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা খামারের অফিস ভাঙচুর করে।

পরে মসজিদে ডাকাত বলে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে ধাওয়া শুরু করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে পাহাড়ে আতœগোপন করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে স্থানীয় জনতা সন্ত্রাসীদের সোর্স সন্দেহে মং সো মারমাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রীন ওয়ার্ল্ড এগ্রো নার্সারির ম্যানেজার মো. বোরহান উদ্দীন বলেন, ৪০ বছর ধরে বৈতরণী এলাকায় গরু-ছাগল মুরগি ও আমসহ বিভিন্ন ফলের বাগান করে আসছি। বিগত দুই মাস আগে সন্ত্রাসীরা আমাদের খামারে এসে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে তা দিই নাই। রোববার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে 'সুস্থ সমাজ, সুস্থ পরিবেশ' নামে একটি কাগজে লিখে আবারও দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়।

সোমবার সকালে এসে দাবীকৃত টাকা দিতে বলে। এতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা আমাদের অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে। পরে স্থানীয়দের খবর দিলে তারা মসজিদের মাইকে ডাকার ডাকাত বলে চিৎকার দিলে সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পাহাড়ে আতœগোপন করেন।

স্থানীয় পুরানগড় ইউনিয়ন (ইউপি) পরিষদের চেয়ারম্যান আ.ফ.ম মাহবুবুল হক সিকদার বলেন, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা প্রায় দুই বছর ধরে পুরানগড়ের কয়েকটি ওয়ার্ডে লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও আদায় করে আসছিল। তবে এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলেনি। সোমবার সকালে আবারও সন্ত্রাসীরা চাঁদা চাইতে আসলে এলাকাবাসি একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে। এলাকাবাসীন ধারণা, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা আবার হামলা চালাতে পারে। এই আতঙ্কে রয়েছে এলাকার লোকজন। তারা প্রশাসনিক নিরাপত্তা দাবি করছে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে