দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষ অভিযান চালিয়ে নারী ও বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটিভ সহ ২১ দালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ রবিবার দুপুর ১২ টার দিকে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুম গ্রেফতারের সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃত হলো রোজিনা খাতুন ওরফে রুনা (৩০) দিনাজপুর সদরের করিমুল্লাপুর আদর্শ পাড়া গ্রামের মোস্তফা কামালের মেয়ে। আরমান হোসেন ডিভোর্স প্রাপ্ত স্ত্রী। স্পন্দন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক বছর ধরে চাকরি করে।
শাহানা বেগম ওরফে শাহনাজ (৩৪) দিনাজপুর সদরের পাক পাহাড়পুর ইকবাল স্কুল মোড়ের পাশে ভাড়া বাসা সাজিদ উদ্দিনের ছেলে মেয়ে। জুয়েল হোসেনের ডিভোর্স প্রাপ্ত স্ত্রী। পাঁচ ছয় মাস ধরে বন্ধন কমিউনিটি সেন্টারে চাকরি করেন।
মোসাম্মত বৃষ্টি (২৪) দিনাজপুর সদরের বালুবাড়ী নিমকালি মন্দির এলাকার ইমন আলীর স্ত্রী। জিএস হেলথ কেয়ারে ৮ মাস ধরে চাকরি করেন।
বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির রিপেজেনটিভ দেরকে গ্রেফতার হয়েছে। তারা হলেন
অপসনিন ফার্মার রিপ্রেসেন্টেটিভ আশরাফুল আলম ওরফে চান মিয়া (৩২) গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের সন্ন্যাসীর চর গ্রামের সাইফুর রহমানের ছেলে।
অপসোনিন ফার্মার রিপেজেনটিভ শরিফুল ইসলাম (৩৩) সে রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার হারিয়ার কুঠির মন্ডলপাড়া গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে।
অপসোনিন ফার্মার প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান (৩৬)। সে ঝিনাইদহ জেলার চাঁদপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের সরদার আলীর ছেলে।
বিকন ফার্মার রিপেজেনটিভ শাহীন জামান (৩৫) সে ঠাকুরগাও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বড়নুনতর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
সায়নোফিয়া ফার্মার রিপেজেনটিভ শাওন মন্ডল (৩০)। সে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার বাড়ইল গ্রামের শামসুদ্দিন আহমেদের ছেলে।
জিসকো ফার্মার রিপ্রেসেন্টেটিভ জুলকার নয়ন (২৭)। পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা গ্রামের শফিউল আলমের ছেলে।
রেনেটা ফার্মার রিপেজেনটিভ আয়নাল হোসেন (৩৪)। সে টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে।
রেনেটা ফামার রিপ্রেসেন্টেটিভ মুস্তাক আহমেদ (৩০)। রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার রাজারামপুর ধনতলা গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে।
রেনেটা ফার্মার রিপ্রেজেন্টটিভ হাবিবুল আরেফিন সোহাগ (২৯) সে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার পাবুর গ্রামের আব্দুল আলীমের ছেলে।
রেনেটা ফার্মার রিপ্রেজেন্টটিভ ঈদুল রহমান (২৯) সে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার দামইল গ্রামের শমসের আলীর ছেলে।
টাউট/ দালাল গ্রেফতারকৃতরা হলো
রাশেদুল ইসলাম রাসেল (২৬) দিনাজপুর সদরের উপশহর নিউ টাউন ৭ ডেপুটি পাড়ার আমিনুল ইসলামের ছেলে। সে প্রাইম পয়েন্ট ডায়গনস্টিক সেন্টারে চাকরি করে।
হাসিবুল আল আসাদ (৩০) সে দিনাজপুর সদরের মাহতুল্লাপাড় গাজারমারী গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। সে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করে।
রাশেদ আলী (৪০) সে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে। সে বন্ধন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করে।
নাহিদ হাসান (২৪)। সে দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার তাজপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। সে সেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করে।
মাসুম বিল্লাহ (৩২)। সে দিনাজপুর সদরের ৮ নং উপশহর এলাকার সাবেত আলীর ছেলে। সে সোহাগ মেডিকেল স্টোরের মালিক।
মোরসালিন ইসলাম (২৫)। সে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার মোস্তফা পুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল রশিদের ছেলে। সে ইউনিটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার চাকরি করেন।
আনিসুর রহমান (৪০)। দিনাজপুর সদরের মেডিকেলের সামনে খোশমাদবপুর গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। সে কাপড়ের দোকান ব্যবসায়ী।
আরিফিন আলী (৪০) । সে দিনাজপুর সদরের ভবানীনগর সোনাহার পাড়া গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে। সে স্পন্দন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করে।
শ্রী তমাল রায় (২৬)। দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ভাড়াডাঙ্গী গ্রামের পীযূষচন্দ্র রায়ের ছেলে। সেই ল্যাব এইড লিমিটেড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করেন।
দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, কোতোয়ালী থানার কয়েকজন পুলিশের একটি চৌকস টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা কালে মেডিকেলের দালাল বিরোধী অভিযান কালে রোগীদের সাথে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে সন্দেহ ভাজক ৩ নারী ও ১৯ পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের শেষে জানা যায়। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগত ৮০ শতাংশ দরিদ্র পীড়িত সেবা প্রার্থীরা নানাভাবে প্রতারণার শিকার ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি হওয়ার জন্য প্ররোচনা করে। কিছু সংখ্যক দালাল রোগী ও রোগীর নিকটে থাকা মোবাইল ও টাকা পয়সা চুরি করে নেয়। বিশেষ করে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে শনিবার ও মঙ্গলবার বারোটার পর ডাক্তারের সাক্ষাতের নিয়ম থাকলেও তারা প্রতিদিন সকাল থেকেই ডাক্তারের রুমের সামনে ভিড় জমিয়ে সেবা প্রার্থীদেরকে ঢোকার ক্ষেত্রে বিভ্রান্ত সৃষ্টি সহ প্রেসক্রিপশনের ছবি উঠানোর জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে এবং ব্যক্তিগত ডকুমেন্টস নিয়ে সম্মানে আঘাত হানে।
কিছু লোককে আটক করা গেলেও মোস্ট ওয়ান্টেড রুনা সহ আরো বেশ কয়েকজন আছে তাদের কেউ শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন দিনাজপুরে আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগত সেবা প্রার্থীরা যাতে এ ধরনের শিকার না হয় এজন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আটক ২১ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
যাযাদি/এসএস