শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে মাদারীপুরবাসী

মাদারীপুর প্রতিনিধি
  ২৩ জুন ২০২৪, ১৯:৪০
রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে মাদারীপুরবাসী
সংগৃহীত ছবি

সারা দেশে এখন রাসেল ভাইপাস সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে এই সাপ নিয়ে। মাদারীপুরে এর ব্যতিক্রম নয়। মাদারীপুর শহরের গোরন চত্বরে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে একটি ও শিবচর উপজেলার পৃথকস্থান হতে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয়রা। সাপে কাটার রোগীদের জন্য সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভেনম পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে মাদারীপুরের সাধারণ মানুষের মঝে। তবে হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম বা ভ্যাকসিন আছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন।

জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার শিবচরের পৃথকস্থান হতে তিনটি রাসেলস ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয়রা। শনিবার বেলা ১১ টার দিকে দত্তপাড়া ইউনিয়নের হাজী কাইমুদ্দিন শিকদারকান্দি এলাকার একটি ধান ক্ষেত থেকে একটি সাপ মারে এলাকাবাসী। পরে দুপুরে শিরুয়াইল ইউনিয়নের উৎরাইল গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মসজিদের সামনে থেকে একটি এবং সন্ধ্যার পর একই এলাকার মো. জামাল শেখের বাড়ি থেকে আরও একটি সাপ পিটিয়ে মারা হয়। মাদারীপুর শহরের গোরন চত্বরে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে একটি বড় সাপ দেখতে পেয়ে সাপটিকে মেরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে জেলায় ৪টি রাসেলস ভাইপার সাপের সন্ধ্যান পাওয়া গেছে। এছাড়াও কালকিনি, ডাসার উপজেলায় রাসেল ভাইপার সাপ দেখা গেছে। বিষাধর সাপটি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে বলে গুঞ্জন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। সকলকে সর্কত থাকতে জেলার বহু মানুষ তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের টাইমলাইনে রাসেল ভাইপার সাপটির ছবি ও সর্তক বার্তা লিখে স্ট্যাটাসও দিচ্ছে। ফলে জেলা জুড়ে বিষধর সাপটিকে ঘিরে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

আমাদের এখানে এর আগেও এ রকম সাপ অনেকেই দেখেছি। পাহাড়ি সাপ ভেবে বিষয়টি নিয়ে তেমন ভয় পাইনি কেউ। ধারণা করা হচ্ছে, পাশের আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে সাপটি এদিকে আসছে। এই সাপটি নিয়ে মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।' সাপে কাটার ভ্যাকসিন হাসপাতালে পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

মাদারীপুর শহরের গোরন চত্বরে আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে রাসেল ভাইপাস সাপ সম্পর্কে কয়েক জন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আড়িয়াল খাঁ নদীর পাড়ে একটি রাসেল ভাইপাস সাপ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা একত্রি হয়ে সাপটিকে মেরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছি। সাপটি খুব বড় ছিল। সাপের পেটের মধ্যে বাচ্চা ছিল। এখন এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদীতে কেউ গোসল করতে যায় না। নদীর পাড় দিয়ে মানুষের চলাচল অনেক কমে গেছে।

সাপ দেখা রাস্তি এলাকার রাসেল বেপারী নামের এক কলেজ ছাত্র জানান, সাপটি দেখতে খুব ভয়ঙ্কর। এলাকার মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকারীভাবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা উচিত। হাসপাতাল গুলোতে ভ্যাকসিন রাখা উচিত।

মাদারীপুর ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ইকরাম হোসেন বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে বিষধর সাপের উপদ্রব বাড়ে। তবে এবছর রাসেল ভাইপার নামের এই সাপটির বিচরণ জেলায় বেশি শোনা যাচ্ছে। এটি সবচেয়ে বেশি ভয়ানক। মানুষ দেখলেই কামড়াতে আসে। নদী বা পুকুরে গোসল করার সময় সতর্ক থাকবেন। আতঙ্কিত না হয়ে এই সাপ বা যে কোন বিষধর সাপে কাটলে ওঝা বা কবিরাজের কাছে না গিয়ে দ্রæত নিকটস্থ উপজেলা বা জেলা সদর হাসপাতালে চলে আসুন। সাপে কাটার ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভেনম নিলেই আক্রান্ত রোগী সুস্থ্য হয়ে যাবে। আতঙ্গিক না হয়ে সকলে সচেতন হোন। আর আমাদের সদর হাসপাতালে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে শুধু মাত্র রাসেল ভাইপার সাপে কাটা রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য। তবে আল্লাহর রহমতে এখন পর্যন্ত আমাদের জেলায় কাউকে এ সাপে কামড় দেয়নি।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে