মফিজ মাষ্টারের বর্তমান বয়স শত ছুঁই ছুঁই। শত বছরের কাছাকাছী বয়সী এই প্রবীণ ব্যক্তি এখনো সবকিছু প্রায় স্বাভাবিক ভাবেই করতে পারেন৷ কুরআন ও বই পুস্তক খালি চোখে পড়তে পারেন। এছাড়াও বাংলা ও ইংরেজিতে লিখতেও পারেন তিনি৷ গ্রামের মানুষের কাছে এই বয়সী মানুষটির আলাদা ভক্তি রয়েছে।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ডাংরি গ্রামে তার বাড়ি৷ সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরী না করলেও স্বাধীনতার আগে থেকেই গ্রামে ছাত্রদের পড়াতেন নিজ উদ্যোগেই ৷ তাই গ্রামে তার পরিচিতি মাস্টার হিসেবেই। পড়ানোর সুবাদে তার হাজারো ছাত্র সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ চাকরিতে রয়েছে অনেক ছাত্র।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মফিজ মাস্টারের ৩ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে৷ সবারই বিয়ে হয়েছে৷ ছেলেমেয়েরা সবাই যার যার অবস্থান থেকে প্রতিষ্ঠিত৷ বাড়িতে তার সহধর্মিণী রয়েছে৷ তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। বড় ছেলে পিতামাতার দেখভাল করে থাকেন৷ মফিজ মাষ্টার ধর্ম পালনে অধিক মনোযোগী ৷ পরহেজগার মানুষ হিসাবে এলাকার সবার নিকট সম্মানিত ব্যাক্তি৷ এলাকার যে কোন অনুষ্ঠান হলে তিনি আমন্ত্রিত হন৷
এছাড়াও গ্রামের মানুষের বিশেষ আমন্ত্রণে প্রায় প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি যান৷ সবাই তার নিকট দোয়া নেওয়ার জন্য আসেন। মানুষ খুশি হয়ে যা দেন, তাই হাসিমুখে গ্রহণ করেন৷ তাই দিয়ে নিজের চলার খরচ মিটিয়ে থাকেন। বই দিলে তিনি খালি চোখে অনায়াসে পড়তে পারেন৷ এছাড়াও একাই এখনো বাড়ি যেতে পারেন তিনি। বর্তমানে কানে সামান্য কম শুনলেও স্মরণশক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে৷ দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রমজান মাসের সবগুলো রোজা তিনি পালন করে থাকেন৷
গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ডাংরি গ্রামের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন,'চাচা ( মফিজ মাষ্টার) খুবই ভালো মনের মানুষ। এখনো তিনি অনায়সে কুরআন ও বইপত্র চশমা ছাড়াই পড়তে পারেন৷ বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই ভালো লাগে৷ আমাদের গ্রামের সবাই ওনাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করে থাকি৷'
মফিজ মাস্টার বলেন, 'আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি রোগ মুক্ত হয়ে এখনো সুস্থ আছি৷ বর্তমানে আমার বয়স ৯৫ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে দেখেছি। তাদের আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করতে উদ্ভুদ্ধ করতাম। আমার কাছ থেকে দোয়া নিতো তারা৷ যতদিন বেঁচে আছি মানুষের মধ্যে ধর্ম প্রচার ও আল্লাহর ইবাদত করে কাটাতে চাই৷
যাযাদি/ এসএম