বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

বাঁশখালীতে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে বন্যহাতি হত্যা

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ০৬ মে ২০২৫, ২০:২৪
বাঁশখালীতে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে বন্যহাতি হত্যা
ছবি: যায়যায়দিন

বাঁশখালীতে একের পর এক বন্যহাতি হত্যা। এই উপজেলার অভয়ারণ্য যেন হাতির মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ১ মাসের ব্যবধানে বাঁশখালীতে আরও একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এশিয়ান প্রজাতির একটি মাদি বন্যহাতি। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে আসা হাতিটিকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর হাতিটিকে পলিথিন মুড়িয়ে মাটি চাপা দেয় হত্যাকারীরা।

মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে বাঁশখালী উপজেলার পুইছুড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মধ্যমজিরীর চিতাখোলা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘঠে। এদিকে মঙ্গলবার সন্ধায় মাটি খুঁড়ে হাতিটি উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ। এরপর হাতিটির ময়নাতদন্ত করেন চকরিয়া সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম মোহাম্মদ জুলকারনাইন এবং বাঁশখালী উপজেলা প্রাণী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. শাহজাদা মো. জুলকারনাইন।

স্থানীয়রা জানান, ‘চারদিকে গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে উপরে গাছ দিয়ে ঢেকে রাখা একটা মাটির স্তুপ দেখতে পাওয়া যায়। এরপর বন বিভাগকে খবর দিলে বন বিভাগের লোকজন এসে হাতিটির খবরটি দেখতে পায়। এরপর এসে মাটি খুঁড়ে হাতিটির দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে হাতিটি ৫/৬ থেকে দিন আগে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।'

উপজেলা প্রাণী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. শাহজাদা মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘এটি একটা বাচ্চা হাতি। হাতিটির বয়স আনুমানিক ৬ বছর। হাতিটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে হাতিটিকে হত্যা করে পলিথিন মুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়। যাতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে না পড়ে। পরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হাতিটিকে হত্যা করা হয়।'

জলদি অভয়ারণ্যে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, ‘বৈদ্যুতিক ফাঁদ দিয়ে হাতিটিকে মারা হয়েছে। মারা যাওয়া হাতিটি এশিয়ান প্রজাতির মাদি (নারী) হাতি। বয়স আনুমানিক ৫ থেকে ৬ বছর। একেবারে বাচ্চা হাতি এটি। হাতিটিকে হত্যা করার পর পলিথিন মুড়িয়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়। যাতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে না পড়ে। সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করতেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বন বিভাগের পক্ষে থেকে মামলা করা হবে।'

এরআগে গত ১০ এপ্রিল জলদি রেঞ্জের পাইরাং বিটের মনুমার ঝিরি এলাকায় একটি বন্যহাতি হত্যা করে দাঁত ও নখ নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। হাতিটিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। হাতির পিঠে ও বুকে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও এখনও এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। উল্টো পালিয়ে বেড়াচ্ছেন জলদি রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহ আলম ও পাইরাং বিট কর্মকর্তা আলমগীর। বন্ধ রয়েছে রেঞ্জ অফিস। এদিকে একের পর এক বন্যহাতি হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। বলছেন সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের গাফিলতির কারণে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে বন্যহাতি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে