শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

গাকৃবিতে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির উপর কৃষক প্রশিক্ষণ

গাজীপুর প্রতিনিধি
  ০৮ মে ২০২৫, ১৯:২২
গাকৃবিতে উদ্ভাবিত প্রযুক্তির উপর কৃষক প্রশিক্ষণ
ছবি: যায়যায়দিন

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি) এ মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ কর্তৃক উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহের পরিচিতি ও প্রয়োগ কৌশল শীর্ষক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের আয়োজনে এবং পরিচালক (বহিরাঙ্গন কার্যক্রম) প্রফেসর ড. ফারহানা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্সের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য ছিল মৃত্তিকার গুণাগুণ উন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে উদ্ভাবিত আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর বাস্তব প্রয়োগে কৃষকদের দক্ষ করে তোলা।

প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন গাকৃবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ—উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক।

এ সময় অন্যান্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডিন, কৃষি অনুষদ, ডিন, ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স অনুষদ, পরিচালক (ছাত্র—কল্যাণ), পরিচালক (আইকিউএসি) সহ মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন গাজীপুর সদর উপজেলা থেকে আগত ৪০ জন কৃষক।

দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের মূল পর্বে উপাচার্য তাঁর প্রেজেন্টেশনে মৃত্তিকার স্বাস্থ্য ও টেকসই কৃষি উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যাহত গবেষণা ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির উপর আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, “প্রযুক্তি যদি মাঠে পৌঁছাতে না পারে, তবে গবেষণার সার্থকতা সীমিত থেকে যায়। কৃষকের হাতেই প্রযুক্তির চূড়ান্ত প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।” উপাচার্যের বক্তব্যের পর একে একে বিভিন্ন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিশেষজ্ঞবৃন্দ।

প্রশিক্ষক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবির “আর্সেনিক দূষণ ও প্রতিকার” শীর্ষক উপস্থাপনায় নতুন প্রজন্মের আর্সেনিক ফিল্টার প্রযুক্তির কার্যকারিতা, ব্যবহারবিধি এবং মাঠপর্যায়ে এর প্রয়োগে কৃষকের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন। পরবর্তী প্রেজেন্টেশনে অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান পরিবেশবান্ধব ও কৃষিবান্ধব প্রযুক্তি “বায়োচার” নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “ডলোচুনের মতো কার্যকরী এই বায়োচার মৃত্তিকায় জৈব পদার্থের ভারসাম্য বজায় রেখে ফলন বাড়াতে সক্ষম। এটি মৃত্তিকার কাঠামো উন্নয়নে এবং পুষ্টি উপাদানের ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।” এছাড়া, প্রফেসর ড. মো. সাইফুল আলম তাঁর প্রেজেন্টেশনে আর্সেনিক সহিষ্ণু ধানের জাত নির্ধারণে আধুনিক প্রযুক্তি ও কলাকৌশলের উপর আলোকপাত করেন।

তিনি বলেন, “উপযুক্ত জাত নির্বাচন ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় কিছু পরিবর্তন এনে আমরা আর্সেনিক সমস্যা কবলিত এলাকায় নিরাপদ ধান উৎপাদনে সফল হতে পারি। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি একাডেমিক গবেষণা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তিকে মাঠপর্যায়ের কৃষির সঙ্গে কার্যকরভাবে সংযোগ করেছে যা কৃষকদের আধুনিক ও টেকসই কৃষি চর্চায় দক্ষ করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গবেষণার ফলাফলে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশের ৮০ ভাগ জমির মাটি এসিডিক। তাই এসিড মাটিতে সুপারিশকৃত মাত্রায় কেবল ডলোচুন ব্যবহার করে বছরে ৫০—৬০ লক্ষ টন অতিরিক্ত ফলন উৎপাদন সম্ভব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে