ফুলগাজীর বিভিন্ন সীমান্তে ভারত থেকে আসা ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) ভোরে উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের খেজুরিয়া, মুন্সীরহাট ইউনিয়নের কমুয়া ও সদর ইউনিয়নের সোনারপুর সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আটককৃতদের মধ্যে সাতজন নারী ও ১০ জন শিশু রয়েছে। তাঁদের সবার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। তাঁদের কাছে বিদেশ যাওয়ার কোনো কাগজপত্র (ভিসা-পাসপোর্ট) নেই। কাজের সন্ধানে তাঁরা গতা ৫ ও ১০ বছর পূর্বে ভারতে গিয়েছিলেন।
আটককৃতরা আরও জানান, ভারতেের হরিয়ানা রাজ্যের খরগোদা এলাকায় তাঁরা বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘ বছর যাবৎ সেখানে ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
কমুয়া বিওপি ক্যম্পের বিজিবি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ট্রাকে করে তাঁদের সীমান্তে নিয়ে আসে এবং বাংলাদেশের ভেতরে ঠেলে দিয়েছেন।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ভারতের ত্রিপুরা জেলার বীর সিং ক্যাম্পের বিএসএফ বাংলাদেশের ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের খেজুরিয়া সিমান্ত এলাকায় ১২ জন, ভারতীয় সীমান্ত নিপেন নগর ৪৩ বিএসএফ ক্যাম্পের বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্ত মুন্সীরহাট ইউনিয়নের কমুয়া ও সোনাপুর সীমান্তে ১৫ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেন। সীমান্ত পার হওয়ার পর তাঁদের আটক করে বিজিবি ক্যাম্পে নেওয়া হয়। পরে সকালে তাঁদের ফুলগাজী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে গত ১৫ বছর ধরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের খরগোদা এলাকায় বসবাস করতেন ছকের আলী (৬০) নামে এক ব্যক্তি। তিনি সেখানে একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। তিনি বলেন, ভারতে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি। মালিকরা ঠিক মতো বেতন পরিশোধ করতেননা। মালিকের নিকট টাকা পয়সা চাইলেই দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন।
মিলন (৫৫) নামে অপর আরেক ব্যক্তি জানান, বিএসএফ তাঁদের কাছ থেকে ভারতীয় মুদ্রাসহ মুঠোফোন রেখে দিয়েছেন। তাদেরকে জনপ্রতি বাংলাদেশি মুদ্রা ২০০ টাকা করে পকেটে দিয়ে বর্ডার দিয়ে তাদের ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন।
ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, সীমান্ত থেকে নারী ও শিশুসহ ২৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি। তাঁদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি বাংলাদেশে। তিনি বলেন, পুলিশ তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছেন। বর্তমানে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হেফাজতে রয়েছেন। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম জানান, আটককৃত ব্যক্তিদের নিরাপত্তার বিষয়টি থানা পুলিশ দেখছেন।
বর্তমানে পরিচয় শনাক্ত করার পক্রিয়া চলছে। আপাতত তাঁদেরকে স্হানীয় একটি বিদ্যালয়ের কক্ষে রাখা হয়েছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্হা করা হয়েছে।