বুধবার, ২৮ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসলামপুরে যমুনায় নিশ্চিহ্ন হচ্ছে সাপধরীর ৪ গ্রাম

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
  ২৬ মে ২০২৫, ১৪:৩৫
ইসলামপুরে যমুনায় নিশ্চিহ্ন হচ্ছে সাপধরীর ৪ গ্রাম
জামালপুরের ইসলামপুরে যমুনার ভান হুমকিতে বিস্তীর্ণ এলাকা: ছবি যায়যায়দিন

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার ছোট্ট দুইটি শাখা নদী। একটি ইসলামপুরের বেলগাছা পয়েন্টে যমুনা নদী থেকে উৎপত্তি হয়েছে। অপরটি সাপধরী পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে সারিয়াকান্দির চালুয়াবাড়ী পয়েন্টে উৎপত্তি হয়ে ভাটির দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। এই দুই নদীর ভয়াবহ ভাঙনে যমুনা গর্ভে নিশ্চিহ্ন হচ্ছে সাপধরীর চারটি গ্রাম।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, ইসলামপুরের বেলগাছা পয়ন্টে উৎপত্তি হওয়া যমুনার শাখা নদীটি শীলদহ ও সিন্দুরতলী হয়ে সাপধরীর প্রজাপতি, নন্দনের পাড়া, চরশিশুয়া, শিশুয়া, কাশারীডোবা, ইন্দুল্লামারী, আকন্দপাড়া, মন্ডলপাড়া, চেঙ্গানিয়া, টগারচর ও দৈলকের চর হয়ে সারিয়াকান্দির চালুয়া বাড়ি এলাকার পূর্বাঞ্চল হয়ে আবারো যমুনার মূলস্রোতে মিলিত হয়েছে।

1
এই শাখা নদীটির দুই তীরের প্রজাপতি, কাশারী ডোবা, আকন্দপাড়া ও মন্ডলপাড়া এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে গত ৫ বছর ধরে ভয়াবহ নদী ভাঙন চলছে। এ বছর বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই সাপধরীর এই শাখা নদীটির বাম তীরের কাশারীডোবা ও আকন্দপাড়া পয়েন্টে এবং মন্ডলপাড়া পয়েন্টে যমুনার ডান তীরে ভয়াবহ নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এতে এবছরই নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে কাশারীডোবা ও আকন্দপাড়া এলাকার পাঁচ শতাধিক বসতভিটা, দুইটি বাজার, চারটি স্কুল, পাঁচটি মসজিদ এবং কয়েকশ’ একর ফসলি জমি।

অন্যদিকে সারিয়াকান্দির চালুয়া বাড়ি পয়েন্টে উৎপত্তি হওয়া যমুনার এই শাখা নদীটি সাপধরীর পশ্চিম সীমানা ঘেঁষে প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। সাপধরী পশ্চিম সীমানার এই শাখা নদটির ভয়াবহ ভাঙ্গনে বিগত বন্যা মৌসুমে সাপধরী ইউনিয়নের বিশরশি গ্রামটির অন্তত: দুইশ’ পরিবারের বসতভিটাসহ প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমি নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এ বছরও বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই বিশরশি, মন্ডলপাড়া ও দক্ষিণ শিশুয়া এলাকায় চলছে ভয়াবহ নদী ভাঙন।

সাপধরী ইউনিয়নের কাশারীডোবা গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আজিজুর রহমান চৌধুরী জানান, সাপধরীর পশ্চিম সীমানা দিয়ে প্রবাহিত শাখা নদীটির বাম তীরের ভাঙন প্রতিরোধের জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ বছরের ভয়াবহ ভাঙনে মন্ডল পাড়া, বিশরশি ও দক্ষিণ শিশুয়া গ্রাম দুটির অন্তত: পাঁচশ’ পরিবারের বসত ভিটাসহ কমপক্ষে দুই হাজার একর ফসলি জমি যমুনা গর্ভে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সাপধরী ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম মন্ডল জানান, সাপধরী ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া, বিশরশি ও দক্ষিণ শিশুয়া গ্রাম তিনটির পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত যমুনার ছোট্ট একটি শাখা নদীর বাম তীরে গত দুই বছর ধরে ভয়াবহ ভাঙন চলছে। বিগত বছরের বন্যায় বিশরশি গ্রামটির সিংহভাগ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এ বছরও বর্ষা মৌসুমের আগেই শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন।

এছাড়াও মন্ডলপাড়া গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত যমুনার অপর শাখা নদীটির ভয়াবহ ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে কাশারী ডোবা, আকন্দপাড়া ও মন্ডল পাড়া গ্রামের দক্ষিনাঞ্চল।

এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে এবছর বর্ষা মৌসুমেই নিশ্চিহ্ন হবে সাপধরীর বিশরশি, মন্ডলপাড়া, কাশারীডোবা ও আকন্দ পাড়া গ্রামগুলো।

তিনি আরও জানান, যমুনার এই শাখা নদী দু'টির ভাঙন কবলিত চারটি পয়েন্টেই অবিলম্বে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলে নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পাবে শত শত একর ফসলি ও বিস্তীর্ণ জনপদ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে