পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোপিরেট কর্তৃক বাস্তবায়িত কৃষি ইউনিট (কৃষিখাত)-এর আওতায় লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরমনসা ও চরভূতা গ্রামে উচ্চফলনশীল ধানের জাত ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ৮৯ ও ব্রি ধান ৯২ আবাদ করা হয়েছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সোপিরেট সংস্থা কৃষি ইউনিট (কৃষিখাত)-এর পক্ষ থেকে ধানের বীজ, জৈব সার, জৈব বালাইনাশক, ফেরোমন ফাঁদ এবং আর্থিক অনুদান ও সার্বিক পরামর্শ মোতাবেক চরমনসা ও চরভূতা গ্রামের ১০ জন সদস্য প্রায় ৪.৫ একর জমিতে এই ধান চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তারা বলেন, ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ৮৯ ও ব্রি ধান ৯২ চাষ করে তারা ভালো ফলন পেয়েছেন।
পাশাপাশি, ধানের মাজরা পোকা দমনে প্রথম বারের মতো তারা ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছেন যা পোকা দমনে খুবই কার্যকরী।
চরমনসা গ্রামের কৃষক মোঃ পারভেজ আলম বলেন, “সোপিরেট এর কৃষি ইউনিট (কৃষিখাত)-এর সহযোগিতা ও পরামর্শ মোতাবেক ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ৮৯ আবাদ করেছি এবং ধানের জমিতে প্রথমবারের মতো ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেছি যার ফলে আমার ধানের জমিতে মাজরা পোকার আক্রমন খুব কম হয়েছে এবং আমি আশানরুপ ফলন পেয়েছি।“
অন্য এক কৃষক মোঃ নুরুল আলম বলেন, “আমি ব্রি ধান ৭৪ ও ব্রি ধান ৯২ এর আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছি এবং ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করার কারণে আমার ধানের জমিতে কীটনাশকের ব্যবহার খুবই কম করতে হয়েছে”।
তারা আরও জানান, অন্যান্য জাতের ধানের তুলনায় ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২ এর ফলন অনেক ভালো এবং রোগ বালাইও অনেক কম। পাশাপাশি ফেরোমনের ফাঁদের ব্যবহারে তাদের উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে। তাই আশে পাশের কৃষক এই জাতের ধান চাষে এবং ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এছাড়াও বলেন, আমরা আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই জাতের ধান চাষ করব এবং কীটনাশকের পরিবর্তে ফেরোমন ফাঁদ সহ অন্যান্য জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করব।
সোপিরেট সংস্থার উপ-সমন্বয়কারী ও কৃষি ইউনিট এর ফোকাল পারসন জনাব মোঃ শরীফ হোসেন প্রদর্শনীগুলো পরিদর্শন করে বলেন, “নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় বোরো ধান উৎপাদনে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করা হচ্ছে যা পোকা দমনে খুবই কার্যকরী এবং পরিবেশবান্ধব”।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ জহির আহম্মেদ বলেন, “ব্রি ধান ৭৪, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২ জাতের ধানের ফলন অন্যান্য ধানের তুলনায় ভালো হয় ও ধানের মাজরা পোকা দমনে ফেরোমন ফাঁদ খুবই কার্যকরী এবং আগামীতে যেকোন ধরণের কৃষি সহযোগীতার প্রয়োজন হলে সহযোগীতা করবে বলে আশ্বস্ত করেন”।