নেত্রকোণার পূর্বধলায় উপজেলা সদরের রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাগুলিতে ভাঙ্গন সৃষ্টি হচ্ছে।
এছাড়া রাস্তায় পানি জমে থাকায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। এ অবস্থায় দাবী উঠছে উপজেলার প্রতিটি রাস্তার পাশে ড্রেন নির্মাণের।
সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার প্রধান সড়কটি পূর্বধলা সদর বাজারের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে। এই রাস্তার পূর্বধলা থানা রোড থেকে-জামতলা পর্যন্ত আরসিসি ডালাইয়ের মাধ্যমে নির্মাণ করা হলেও রাস্তার দুই পাশে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
এতে পূর্বধলা বাজারের ব্যবসায়ীগণ প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ে। বৃষ্টি হলেই রাস্তার পানি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢুকার উপক্রম হয়। এছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় স্থানে স্থানে সারাক্ষন রাস্তার উপর পানি জমে থাকে।
ফলে রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। উপজেলার সদর বাজার থেকে স্টেশন বাজার পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। কোথাও কোথাও অল্প জায়গায় ড্রেন থাকলেও সেগুলি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
এই রাস্তায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে ড্রেন না থাকায় বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। তাছাড়া ছোট সুরঙ্গ দিয়ে দ্রæত পানি সরতে না পারায় পানি দীর্ঘক্ষণ জমে থাকে। ফলে এখানে বিশাল অংশজুড়ে রাস্তায় ছোট বড় খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। যার জন জন-মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতি নিয়ত।
ভাঙ্গন অংশে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ইশতিয়াক আহমেদ বাবু সম্প্রতি নিজ উদ্যোগে রাবিশ ফেলে মেরামত করে দিলেও সেখানে আবার ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে।
এ রাস্তার পূর্বধলা বাজার অংশে মমতাজ প্লাজার সামনে সব সময় পানি জমে থাকে। উপজেলার বালিকা বিদ্যালয় রোডটি কিছুদিন আগে সংস্কার করা হলেও রাস্তার পাশে ড্রেন না থাকায় পানি জমে থাকার ফলে রাস্তায় ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে।
এতে এই রাস্তায় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। উপজেলার রৌশনারা রোডটি দীর্ঘ কয়েক বছর বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলে প্রায় ৮মাস আগে রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়।
সংস্কারের ক্ষেত্রে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অর্ন্তভুক্ত না থাকায় ঠিকাদার সুরকী ফেলে রোলার মেরে দীর্ঘদিন যাবত ফেলে রখেছেন। ড্রেন না থাকায় রর্ষার পানি প্রতিনিয়ত এই রাস্তার উপর দিয়ে গড়িয়ে যায়। এমনকি বাসা-বাড়ীর ময়লা পানিও প্রায় সারাক্ষন এই রাস্তার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পূর্বধলা বাজারের খাদ্যগোদাম রোডের এক পাশে একটি ড্রেন থাকলেও দীর্ঘদিন পরিস্কার না করায় এটি ময়লা আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে। এতে বর্ষার পানিতে রাস্তা তলিয়ে গিয়ে চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। এই রাস্তা গুলো ছাড়াও জুয়েলারী রোড, মেছুয়া বাজার রোড, পাট বাজার রোড, রাজপাড়া রোড, কলেজ রোড কোনটির একটিতেও বর্ষা কিংবা পয়:নিষ্কাশনের পানি চলাচলের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পূর্বধলা বাজার বাসীকে। এতে জনসাধারনের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
পূর্বধলা বাজারের ব্যবসায়ী মো: আল মাসুদ বলেন রাস্তার পাশে ড্রেন না থাকায় বর্ষার পানি ও পয়:নিষ্কাশনের পানি দ্রæত সরতে পারে না। ফলে পথচারী ও পূর্বধলায় বসাবাসকারী মানুষের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাছাড়া রাস্তায় পানি জমে থাকায় এবং রাস্তার উপর দিয়ে পানি গড়িয়ে যাওয়ায় রাস্তার স্থায়িত্ব নস্ট হচ্ছে। রাস্তার নির্মানের কিছুদিন পরই রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে। ফলে সরকারীভাবেও লোকশান হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পূর্বধলা বাজার মোটা অংকের টাকায় ডাক হলেও বাজার ব্যবস্থাপনায় চোখে পড়ার মত তেমন কোন উন্নয়ন হচ্ছে না।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা প্রকৌশলী মিশুক দত্ত জানান, পূর্বধলায় পৌরসভা না থাকায় রাস্তার পাশে অপরিকল্পিত ভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ী নির্মাণ করায় নতুন করে ড্রেন নির্মানের জায়গা পাওয়া যায় না। যার ফলে নতুন ড্রেন নির্মানে বাঁধা হয়ে দাড়ায়। এরপরও মাসিক সমন্বয় সভায় রাস্তার পাশে ড্রেন নির্মানের প্রস্তাবনা দেয়া আছে।