বৃষ্টি ও উজানের ঢলে বারনই নদীর পানি বেড়ে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। এর ফলে কৃষকের স্বপ্ন ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এতে পাট তিল বাদাম, ভুট্টা, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে পানি প্রবেশ করায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক।
তবে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১৩ দিনে বারনই নদীর পানি ২২৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।এখন পানি বৃদ্ধি স্থিতিশীল রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে এ পানি কমতে পারে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নলডাঙ্গা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বারনই নদীর পানি গত ২১ মে হতে ৩১ মে পর্যন্ত ২২৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া পাশের উপজেলা আত্রাইয়ে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে আত্র্ই নদীর পানি।
এতে উপজেলার কালিগঞ্জ ত্রিরমোহনী ব্রিজ হয়ে পানি হালতি বিলে প্রবেশ করছে। যার প্রভাবে হালতি বিলের হালতি, খোলাবাড়িয়া, খাজুরার একাংশ ও পাটুল এলাকার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পাটুল গ্রামের তিলচাষি আবুল হোসেন বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছিলাম। কিন্ত হঠাৎ বন্যার পানি ঢুকে আমার অপরিপক্ক তিল উত্তোলনে বাধ্য হচ্ছি। এ তিল আরও ২০ থেকে ২৫ দিন পর উত্তোলন করলে ফলন পাওয়া যেত। এছাড়া সোনালী আঁশ পাট পরিপক্ক না হওয়ায় সেই পাট কাটতে পারছে না কৃষকরা।’
স্থানীয় কৃষক রফিকুল কলিম উদ্দিন বলেন, এ পাট পরিপক্ক হতে আরও ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবে। এতে ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছে পাটচাষিরা।
বাশিলা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, বিলে আগাম বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় কৃষকরা বাদাম তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অতিরিক্ত মজুরী দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
তরিঘড়ি করে পরিপক্ক বাদাম উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। এছাড়া হালতি বিলে ঢুকে পড়া বন্যার পানিতে লাফালাফি ও গোসলে মেতে ওঠে শিশু কিশোররা।নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছে, গত ১৩ দিনে বারনই নদীর নলডাঙ্গা ব্রিজ পয়েন্টে ২২৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে হালতি বিলের সবগুলো স্লইচগেট পরিদর্শন করা হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা লক্ষ্য করা যায়নি।এখন পানি বৃদ্ধি স্থিতিশীল রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে এ পানি কমতে পারে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কিশোয়ার হোসেন বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার ১ মাস ১৩ দিন আগেই হালতি বিলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে মোট ৫ হেক্টর জমির ভুট্টা, পাট ও তিলের ক্ষেতে পানি প্রবেশ করেছে। পানি কমলে এসব ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম বলেন, হালতি বিলে আগাম বন্যার পানি প্রবেশ করায় কিছু ফসল আক্রান্ত হয়েছে। খবর পেয়ে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে।
যদি কোন স্লইচগেটের সমস্যা থাকলে তা দ্রুত মেরামত করে সমস্যা সমাধান করার অনুরোধ করা হয়েছে।বন্যা পরবর্তী সংকট মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্ততি আছে।