শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্যমাত্রার ৭৫ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ১৬ হাজার ২৬৪ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো; যা এই অর্থবছরের পুরো সময়ের কৃষিঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার ৭৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।

বিগত বছরগুলোয় কৃষিঋণের প্রবৃদ্ধির ভিত্তিতে চলতি অর্থবছর কৃষি ও পলিস্ন খাতে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আগের অর্থবছর এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল ১৬ হাজার ২১৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা ওই অর্থবছরের পুরো সময়ে কৃষিঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রার ৭৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সেই হিসেবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে রয়েছে ব্যাংকগুলো।

জানা গেছে, প্রতিবার অর্থবছরের শুরুতে কৃষি ও পলস্নীঋণ বিতরণ-সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগেই ব্যাংকগুলো নিজেরাই তাদের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবগত করে। তবে প্রতিটি ব্যাংকের জন্যই তাদের মোট ঋণের অন্তত দুই শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে।

আগে কোনো ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে অনর্জিত অংশের পুরোটাই বিনা সুদে এক বছরের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখতে হতো। তবে গত অর্থবছর এ বিধানে শিথিলতা এনে অনর্জিত অংশের তিন শতাংশ বিনা সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হচ্ছে। তাছাড়া শিল্প খাতসহ অন্যান্য খাতে নিজেদের মতো করে সুদহার নির্ধারণ করতে পারলেও কৃষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ৯ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারে না ব্যাংকগুলো। এসব কারণে কৃষিঋণ বিতরণে অনীহা দেখায় বেসরকারি ও বিদেশি অনেক ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, সর্বশেষ মার্চ মাসে দুই হাজার ১৫০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। ফেব্রম্নয়ারি মাসে বিতরণ হয়েছিল দুই হাজার ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। গত বছরের মার্চে কৃষিঋণ বিতরণ ছিল এক হাজার ৬৯৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং গত বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে বিতরণ ছিল এক হাজার ৮১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সেই হিসেবে গত দুই মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কৃষিঋণ বিতরণ বেড়েছে।

আলোচ্য ৯ মাসে কৃষিঋণ আদায়ও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বকেয়া কৃষিঋণ আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ১৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে কৃষিঋণ আদায় হয়েছিল ১৫ হাজার ৩৯৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

বিগত সময় থেকে চলতি অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত দেশের ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা কৃষিঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ৪০ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের চাহিদা পূরণে অর্থবছরের নভেম্বর মাসের পর থেকে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়াতে থাকে ব্যাংকগুলো। কোনো কোনো ব্যাংক তাদের সারা বছরের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার সমপরিমাণ ঋণ এই ৯ মাসেই বিতরণ করেছে বলেও জানিয়েছে। গত বুধবার প্রাইম ব্যাংকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তৌহিদুল আলম খান জানান, অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই তাদের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রার ৯৭ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বেসরকারি এই ব্যাংকটি।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসেও (জুলাই-নভেম্বর) কৃষিঋণ বিতরণ ছিল সাত হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। ডিসেম্বর মাসে প্রকৃত কৃষিঋণ বিতরণ হয় দুই হাজার ৭৫৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা; যা নভেম্বর মাসের বিতরণের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এর পরের মাস জানুয়ারিতে কৃষিঋণ বিতরণ ৩২ শতাংশ কমে এক হাজার ৮৬৯ কোটি টাকায় নেমে আসে। ফেব্রম্নয়ারি ও মার্চে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ায় অর্থবছরের ৯ মাসে প্রায় ৭৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয় ব্যাংকগুলো।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46531 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1