শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
মেহেরপুর আমঝুপিতে সূর্যমূখি চাষ

ভীড় জমাচ্ছে সেলফি পাগল ও টিকটকাররা

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:২৮
ছবি: সংগৃহীত

মেহেরপুর জেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় তৈলবীজ উৎপাদন কেন্দ্র আমঝুপি বিএডিসির ফার্মে ভীড় জমিয়েছে সেলফি পাগল ও টিকটকাররা। সেজেছে সূর্যমূখির রঙ্গে রাঙ্গানো শাড়ি কিংবা সালোয়ার কামিজ পরে। খোপায় হলুদ ফুল। এ যেন এক বিনোদন কেন্দ্র আর পর্যটকদের মিলন মেলা। প্রতিবছরই দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন লোকজন এ শস্যক্ষেত্রটি দেখার জন্য। প্রকৃতির এই আবিরাম সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রতিদিনই সূর্যমূখি এই ফুলের সমারাহ দেখতে ভিড় জমাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমী ও তরুন-তরুনীরা। দর্শনার্থীদের পদচারনায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সূর্যমূখি বাগান। মানুষের ভিড় সামলাতে বসানো হয়েছে পাহারাদার।

বছর জুড়ে নানা ধরনের সবজির বীজ উৎপাদন হয়ে আসছে আমঝুপি বিএডিসির এই ফার্মে। সূর্যমূখির তেল ও বীজের চাহিদা পূরনের জন্য এই চাষের উদ্দ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষ। মোট চার হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে এ তৈলবীজ। কয়েক বছরে সোস্যাল মিডিয়ার বদৌলতে কৃষি খামারটি ফুল প্রেমিদের পদচারনায় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

জেলার আশপাশের কয়েক জেলার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন এই সূর্যমূখি বাগানে। পরিবার পরিজন, তরুণ তরুনীসহ নানা বয়সের মানুষ কিছুটা বিনোদনের জন্য ছুটে আসছেন এই স্থানটিতে। পিছিয়ে নেই টিকটক তৈরি করা যুবক ও যুবতীরা। ভাইরাল হওয়াসহ এত বড় সূর্যমূখি বাগানে বিনোদন খুঁজতে আসছেন তারা। কেউবা আসেন নাটকের কোন বিশেষ চরিত্র রুপায়নের দৃশ্য ধারণে।

দু’চোখ যতদুর যায় শুধু ফুলের সমারোহ। এ যেন হলুদ আর সবুজের মিলন মেলা। সূর্যদ্বয়ের সময় থেকে সূর্যঅস্ত পর্যন্ত সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে এই ফুলটি। দিন দিন বিনোদনের স্থানগুলো সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে, মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে বিনোদন থেকে কিন্তু নতুন করে প্রকৃতির মাঝে এমন সৌন্দর্য্য পরিবার পরিজন নিয়ে দেখতে এসে খুশি দর্শনার্থীরা। ঘুরে ঘুরে দেখছে সূর্যমূখী ফুলের সমারাহ। এমন সৌন্দর্যে ছবি ও ঘুরতে পেরে বেশ খুশি তারা। অন্যদিকে দর্শনার্থীদের পদচারনায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সূূর্যমূখি বাগান।

সেলফি তুলতে আসা ভাটপাড়ার সোহেলী ও আকতার জানান, লোকমুখে শুনেছি এখানে সূর্যমুখি ফুলের ক্ষেত আছে ও সুন্দর দৃশ্য তাই লোভ সামলাতে না পেরে এখানে ছবি তুলতে এসেছি। বন্ধু বান্ধবীদের সাথে সেলফি তোলা ছাড়াও ঘোরাঘুরি করা হচ্ছে। বেশ ভালই লাগছে। একই কথা জনালেন গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রি সুমনা ও রজনী।

নাটোর থেকে পিকনিকে আসা পর্যটকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তারা মুজিবনগরে এসেছিলেন। এখানে সৃর্যমুখির বাগান আছে আর তা দেখতে সুন্দর শুনতে পেয়ে বেড়াতে আসা। শুধু বিনোদন কেন্দ্রই নয়, এটি ভোজ্য তেলের চাহিদা পুরুন করবে বলেও মন্তব্য করেন তারা। অনেক টিকটকার জানান, এর আগে সূর্যমূখি ফুলের নাম শুনেছেন কিন্তু দেখেননি। এখন এই ফুলের সানিধ্যে পাচ্ছেন তারা। সোস্যাল মিডিয়ায় এই বাগান দেখে আসছেন তারা। এখানে এসে বেশ ভালো লাগছে।

আমঝুপি বিএডিসি ফার্মের পাহারাদার আমিরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকের সমগম হয় এই ফুল বাগান দেখতে। ৫ জন পাহারায় থেকেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ফুল ফোটার আগ থেকেই বয়সি নারী পুরুষের সমাগম হয়। বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ এখানে আসেন এক চিলতে বিনোদনের জন্য। অনেক সময় ক্ষেতের ভিতরে ঢুকে সেলফি ও ছবি তোলার কারনে ক্ষেতের ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও বিনোদনের জন্য এখানে আসায় কিছুটা সহ্য করতে হচ্ছে।

মেহেরপুর আমঝুপি বিএডিসি ফার্মের উপ-সহকারী পরিচালক আবু তাহের সরদার জানান, সূর্যমূখির এই বীজ শুধুমাত্র বাংলাদেশেই নয় বরং বিদেশেও এই বীজ রপ্তানি হয়। সূর্যমূখির তেল ও বীজের চাহিদা পুরুনের জন্য এই চাষের উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিনোদনের জায়গা কম থাকায় এই বাগানটিতে উপচে পড়া ভিড় হচ্ছে দর্শনার্থীদের। এখানে এসে অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন সূর্যমূখি চাষে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে