মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

‌গাভীর বন্ধাত্ব ও রিপিড ব্রিডিং সমাধান হলে বছরে অতিরিক্ত উৎপাদন হবে ১৬ লাখ গরু

ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ০১ মার্চ ২০২৩, ১৫:৩৪

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার একজন প্রাথমিক প্রাণী চিকিৎসক বন্ধাত্ব ও রিপিড ব্রিডিং গাভীর জন্য নিজস্ব উদ্ভাবনী যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। এর ফলে বছরে অতিরিক্ত উৎপাদন হবে ১৬লক্ষ গরু। তার আবিস্কৃত পদ্ধতিতে বন্ধাত্ব ও রিপিড ব্রিডিং গরু সহসাই গর্ভধারণ করতে সক্ষম। ফলে প্রতিবছর আরো অতিরিক্ত ১৬লক্ষ গরু উৎপাদন করা সম্ভব হবে। তার দাবি এর ফলে আমরা দুধ এবং গো মাংস দেশের অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির করতে পারবো।

নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের মৌজা বামুনিয়া গ্রামের মৃত মর্তুজা আলীর ছেলে এইচ এম বাবুল ইসলাম(মোবাইল নং-০১৭৪৯৬৬৩৬৯৬) তিনি ২০০৯ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ৩ মাসের খামারী প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। এরপর যুব উন্নয়ন এবং বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে লোন না পেয়ে প্রাথমিক প্রাণী চিকিৎসা শুরু করেন।

প্রাণীদের বিশেষ করে গাভী চিকিৎসা করতে গিয়ে দেখতে পান বন্ধাত্ব ও পুনঃ পুনঃ হিটে আসা বা রিপিড ব্রিডিং গাভীর জরায়ুতন্ত্র ওয়াশ করতে যে প্রচলিত যন্ত্র ডুসক্যান ব্যবহার করা হয় তাতে তেমন একটা সফলতা আসে না। ফলে তিনি নিজস্ব চিন্তা চেতনায় উদ্ভাবিত এইচএমবি ক্যাটেল ডি এন্ড সি সিষ্টেমের মাধ্যমে হিটে আসা গাভীর চিকিৎসা শুরু করেন। এর মাধ্যমে তিনি শতভাগ সফলতা পান।

পরে তিনি তার নিজস্ব উদ্ভাবিত যন্ত্রটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আরজুমান আরা বানুর সহযোগিতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান অনুষদে অবহিত করেন। এরপর গত ২০২২সালের ২৭জুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন সর্দার, ড. আকতারুল ইসলাম, অধ্যাপক লায়লা আরজুমানআরা বানু এবং বিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সাড়ে তিন ঘন্টা ব্যাপি প্রাকটিক্যাল প্রয়োগ করা হয়।

তার উদ্ভাবিত ক্যাটেল ডি এন্ড সি সিস্টেমটির ভূয়সী প্রশংসার মাধ্যমে তারা সমর্থন করেন। তারমতে দেশে বন্ধাত্ব এবং রিপিড ব্রিডিং ২২% গাভীর কনসেপ্ট হচ্ছে না। ২০২২সালের একটি জরিপ অনুযায়ী দেশে গরুর সংখ্যা ২কোটি ৪০লক্ষ ১৪হাজার ১৪৪টি। এরমধ্যে গাভীর সংখ্যা ৭৫লাখ। সে হিসেবে প্রতি বছর ১৬লক্ষ গাভী রিপিড ব্রিডিং এর আওতায় কনসেপ্ট হচ্ছে না। আমার উদ্ভাবিত বৈজ্ঞানিক স্বীকৃত ডি এন্ড সি যন্ত্রের সরকার স্বীকৃতি দিলে প্রতি বছর ১৬লক্ষ গরুর উৎপাদন অব্যাহত থাকবে। ফলে আমরা দুধ এবং গো মাংসের অভ্যন্তরিন চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে পারবো।

বামুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার সন্তোষ কুমার রায় জানান, আমার একটি গাভী গত এক বছর যাবত কনসেপ্ট করছে না। এরমধ্যে গাভীটিকে সিমেনস দিয়েছি কয়েকবার কিন্তু কোল ফল পাইনি। অবশেষে বাবুল ভাইয়ের মাধ্যমে ডি এন্ড সি করে বর্তমানে গাভীটি গর্ভধারণ করেছে। খামার বামুনিয়া ঢেপিরপার গ্রামের নিরঞ্জন রায় জানান, আমার একটি গাভী বহু চেষ্টার পরও কনসেপ্ট হচ্ছে না। দীর্ঘ ৯ মাস পর বাবুল ভাইয়ের মাধ্যমে ডি এন্ড সি করে বর্তমানে গর্ভধারণ করে।

একই কথা জানালেন, ওই গ্রামের নুরুজ্জামান, লক্ষ্মণ চন্দ্র, শচীন রায়, নন্দদেব রায়, কংকর রায়সহ অনেকে। বামুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান জানান, আমার ইউনিয়নে বন্ধাত্ব ও রিপিড ব্রিডিং গাভীর ডি এন্ড সি এর মাধ্যমে সফলতা এসেছে। এজন্য বাবুলের এলাকায় ব্যাপক সুনাম রয়েছে। আমরা তার এই উদ্ভাবনী যন্ত্রকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে