সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মহম্মদপুরে সোনালী ফসল ঘরে, কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

এস আর এ হান্নান, মহম্মদপুর (মাগুরা)
  ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৩৮

দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে মাঠে বৈশাখী বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালী ধান। নতুন ধানে হাসি ফুটেছে কৃষকের। কারণ এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে মাগুরার মহম্মদপুরের কৃষকরা বৈশাখের প্রখর তাপদাহ মাথায় নিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করে সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। চলছে বোরো ধান কর্তন, বাড়ির আঙিণায় নেওয়া এবং মাড়াই শেষে গোলায় তোলার মহাব্যস্ততা। কষ্টার্জিত ধান কর্তনে মাঠে মাঠে কৃষকের ঘাম ঝরছে।

বোরো ধানের বাম্পার ফলনে ফসলের মাঠে ফুটে উঠেছে কৃষকের হাসি। কিন্তু কৃষকের এই হাসির আড়ালে দুশ্চিন্তাও লুকিয়ে রয়েছে। কারণ সামনে ঝড়, শীলা বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কায় চিন্তিত তারা। তবে দুর্যোগ না হলে এবার বোরোর বাম্পার ফলন ঘরে তুলবেন কৃষকরা-এমনটাই আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের ১৭ হাজার ২২৫ জন কৃষক বিভিন্ন মাঠে হাইব্রীড ও উফশী ধানের চাষ করেছেন ৫১ হাজার ১৮০ বিঘা জমিতে। এরমধ্যে হাইব্রীড ১৯ হাজার ৬৮০ বিঘা এবং উফশী ৩১ হাজার ৫০০ বিঘা। হাইব্রীডের মধ্যে-এসএল-৮এইচ, সিনজেনটা ১২০৩, এ্যারাইজ তেইজ, ছক্কা-১, উইন-৩০২, শংকর-৩, ঝলক, ইস্পাহানি, রূপালী, যুবরাজ, ব্রি হাইব্রীড ধান-৩ এবং ব্রি হাইব্রীড ধান-৫ জাতের ধান চাষ হয়েছে।

উফশীর মধ্যে- ব্রিধান ২৮, ব্রিধান ২৯, ব্রিধান ৫০, ব্রিধান ৫৮, ব্রিধান ৬০, ব্রিধান ৬৩, ব্রিধান ৭৪, ব্রিধান ৮১, ব্রিধান ৮৪, ব্রিধান ৮৬, ব্রিধান ৮৮, ব্রিধান ৮৯, ব্রিধান ৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০, বিনা ১০ এবং বিনা ১৪ জাতের ধান চাষ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখাগেছে, বৈশাখের প্রখর রোদ্দুর ও তাপদাহ মাথায় নিয়ে কৃষকেরা শ্রমিক নিয়োগ করে বোরো ধান কর্তান, মাড়াই এবং ঘরে তোলার কাজে নিরন্তর সময় ব্যায় করছেন। বিশেষ করে বৈরি আবহাওয়ার আশঙ্কায় মাঠে মাঠে ধান কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ঠিকমতো ধান ঘরে তোলা গেলে কৃষক লাভবান হবেন।

অনুকূল আবহাওয়া, ফসলের মাঠে কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, সময় মতো সার, সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আরো সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই বোরো ধান কর্তন শুরু হয়েছে। এখন মাঠে মাঠে বোরো কাটার ধূম লেগে গেছে। কৃষকরা শ্রমিক নিয়োগ করে ক্ষেতের ধান কর্তনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেতের আইলে গিয়ে সোনালী ধানের দোল দেখে কৃষকের মন ভরে উঠছে খুশিতে। ফসলের মাঠে ফুটে উঠছে কৃষকের হাসি। কৃষকবধূরাও ধান গোলায় তোলার কাজ করছেন কোমর বেঁধে। তারপরও কৃষকের গালভরা হাসির অন্তরালে লুকিয়ে রয়েছে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লে সব হারিয়ে নি:স্ব হয়ে যাবেন এমন আশঙ্কা রয়েছে তাদের ভেতরে।

উপজেলা সদরের ঘোড়বাওড় এলাকার কৃষক আমির শিকদার, আছাদ শেখ, কলমধারী গ্রামের কৃষক কুদ্দুস শেখ এবং জোকা গ্রামের কৃষক হারুন শেখ জানান, ‘বোরোর ফলন আশানুরুপ হয়েছে। ক্ষেতের ধান নিরাপদে ঘরে তোলার জন্য তারা এই তাপদাহে কঠোর পরিশ্রম করছেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, ‘চলতি বোরো মৌসুমে এ এলাকায় বীজ, সার, ডিজেল সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা সেইসাথে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। সামনে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপর্যয় না ঘটলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।’

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে