রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাংনীতে মাশরুম চাষে সফল যুবক সাইফুল 

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী(মেহেরপুর)
  ০৭ আগস্ট ২০২৩, ১৩:৩৯

মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য। চিকিৎসকদের মতে এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও রোগ প্রতিরোধক। এ মাশরুম চাষে সাফলতা পেয়েছেন মেহেরপুরের গাংনীর যুবক সাইফুল ইসলাম। প্রথমে লোকসান হলেও এর হাল ছাড়েননি তিনি। বীজ আর প্রযুক্তিগত সমস্যা কাটানোর পর আর পিছু তাকাতে হয়নি তার। বর্তমানে মাশরুম বেচে তিনি এখন লাখপতি। তার কাছ থেকে অনেকেই মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। সাইফুল ইসলাম জানান, বেকারত্ব থেকে কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে বছর ছয়েক আগে সাভার মাশরুম সেন্টার থেকে তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে আবাদ শুরু করেন সাইফুল ইসলাম। প্রযুক্তিগত সমস্যা ও বাস্তব প্রশিক্ষণের অভাবে পর পর দুই বছর লোকসান গুনতে হয় তাকে। প্রথমেই হোছট খাবার পর থেমে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু না থামেননি তিনি। আরও দুই বছর ধরে বীজ তৈরী ও ছত্রাক আক্রমণ ঠেকানো নিয়ে কাজ করেন। এবার ধরা দেয় সাফল্য। নিজের তৈরী বীজ আর প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে বাম্পার ফলন পান তিনি। গেল দুই বছর সফলতার সাথে মাশরুম বিক্রি করে তিনি এখন লাখোপতি। বর্তমানে তিনি সফল উদ্যোক্তা। প্রায় চার বিঘা জমির উপরে এসএম মাশরুম ঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে মাশরুম খামারটি। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে এসএম মাশুরুম ঘরের মাশরুম। কাঁচা ও শুকনো দুইভাবেই মাশরুম বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন ২০০ কেজি মাশরুম পাওয়া যাচ্ছে এই খামার থেকে। প্রতি মাসে এখন আয় হচ্ছে ৭০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা।

সাইফুল ইসলামের সাথে কাজ করছেন তার ঘনিষ্ট বন্ধু মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, ধানের খড়-বিচুলী তাপ দিয়ে জীবানু মুক্ত করার পর মাশুরুম বীজ দিয়ে পলিথিন প্যাকেট করা হয় যেটাকে বলা হয় বল সিলিন্ডার। এই সিন্ডিন্ডার ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখে পানি স্প্রে করার পরই বের হয় কাঙ্খিত মাশুরুম। একটি সিলিন্ডার থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত মাশরুম তোলা যায় ।

গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এমকে রেজা জানান, মাশরুম উচ্চ প্রোটিন সম্মৃদ্ধ। আমিষের চাহিদা মেটানোসহ মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী মাশরুম খাদ্য হিসেবে অনেকেই গ্রহণ করছেন। আর নতুন করে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে।

সাইফুলের মাশরুম চাষে সাফল্যের কারণে অনেকেই মাশরুম ব্যবহার করছেন এবং চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ভোক্তা ও মাশরুম চাষে আগ্রহী যুবক তোফায়েল আহম্মেদ জানান, তিনি আগে মাসরুমের গুণাগুন জানতেন না। পরে জানতে পেরে নিজে ব্যবহার করছেন ও অনেককেই ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। একই কথা জানালেন মাহাবুব ও রাসেল।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, সহজে আবাদযোগ্য মাশরুম চাষ সম্প্রসারণ এখন সময়ের দাবি। বেকারত্ব মোচনে মাশরুম আবাদ উপযুক্ত মাধ্যম বলে মনে করছেন তিনি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে