বাগেরহাটের ফকিরহাটে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এবার ধানে বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের সোনালী আমন ধান দোল খাচ্ছে মাঠ জুড়ে। ভাল ফলনে খুশি কৃষকরা। ধান কাটতে ও মাড়াই করতে সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। এ বছর আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি প্রত্যাশা করছেন কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ফকিরহাটে এবার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪হাজার ৫শ’ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো বেশী আবাদ করেছে কৃষকরা। এবছর ৪হাজার ৫’শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। আমন ধানের চাষ করেছেন প্রায় ১০হাজার কৃষক। বছরের আষার মাস থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত আমন ধান রোপন করেন কৃষকরা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া কিছুটা খারাপ থাকলেও ধানের ক্ষেতের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। ফলে আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকে ধান কাটা শুরু করে পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ধান কাটবে কৃষকরা।
আট্টাকা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির শেখ জানান, তিনি এবার এক একর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। ধানের ফসল ভাল হয়েছে। তিনি ইতিমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন। একই এলাকার কৃষক কামরুজ্জামান তুহিন এ বছর দেড় একর জমিতে ধান চাষ করেছে। তিনিও জানান এবার ধান উৎপাদন ভাল হয়েছে।
হোচলার কৃষক আজিজুর শেখ, মৌভোগের কৃষক ফজলু শেখ, মুনতাজ শেখ, এয়ার আলী, হানিফা শেখ, মুজিবুর শেখ সহ অনেক কৃষক জানান, আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে এসব কৃষকদের প্রণোদনা সহ নানা ভাবে সহযোগিতা করেছেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ মন্ডল, বেল্লাল হুসাইন, বিপ্লব দাশ, বিপুল পাল, দেবদাস বালা সহ কয়েকজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা জানান, কৃষি বিভাগ থেকে এসব কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়। খেতের ধান চাষ দেখভাল করার পাশাপাশি পরামর্শমূলক ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী, পোকা-মাকড় রোধে আলোক ফাঁদ, লিফলেট বিতরণ, কৃষক সমাবেশ, কৃষক পথসভা ও গ্রুফ মিটিং এর মাধ্যমে কৃষকদের ভাল ধান উৎপাদনে সহযোগিতার করে থাকে কৃষি বিভাগ।
ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এবছর ধানের ফলন ভাল হয়েছে। এবার ৫৫০জন কৃষককেকৃষি প্রণোদনা বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষি প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে ধান খেত পরিদর্শন করে থাকেন। উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে মৌভোগ, বাহিরদিয়া, পিলজংগ, বেতাগা সহ কয়েকটি ব্লকে সবচেয়ে ভাল ফলন হয়েছে। তবে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অল্প সংখ্যক কিছু জমিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। এরপরও আমন ধান উৎপাদনে এবছর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাম্পার ফসল হওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
যাযাদি/ এস