রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

রমজান ঘিরে অস্থির মসলার বাজার 

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ মার্চ ২০২৪, ০৯:১৪

রমজান যত ঘনিয়ে আসছে বাজারে অস্থিরতা ততই বাড়ছে। মাছ, মাংস, চাল, ডাল ও চিনির পর নতুন করে উত্তাপ বেড়েছে মসলার বাজারে। পেঁয়াজ, আদা-রসুনের বিদ্যমান উচ্চ মূল্যের মধ্যেই অস্বাভাবিক বেড়েছে গরম মসলার দাম। এদিকে ১ মার্চ থেকে ভোজ্যতেলের নতুন দাম কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। যথারীতি বাড়তি দাম অব্যাহত রয়েছে রমজানে প্রয়োজনীয় অন্যান্য ভোগ্যপণ্যে।

শুক্রবার রাজধানীর বাজারে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হয়েছে সব ধরনের গরম মসলা। বিশেষ করে এলাচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি এলাচে প্রায় ১ হাজার টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ২২শ’ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন হঠাৎ করে চাহিদা বেড়েছে কিন্তু সে অনুপাতে পাইকারিতে সরবরাহ না থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে লবঙ্গের কেজিতে প্রায় ২শ’ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে প্রায় ২ হাজার টাকা দরে। এছাড়াও হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনিয়া, জিরা দাম প্রতি ১শ’ গ্রামে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে, গত মাসজুড়েই বাজারে পেঁয়াজের সংকট এমন অজুহাতে প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বাড়তি নেওয়া হয়েছে। যা এ সপ্তাহেও অব্যাহত রয়েছে। এদিনও প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২৫ টাকার উপরে। চড়া দাম অব্যাহত রয়েছে আদা-রসুনের বাজারে। প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ২৪০ ও ২৩০ টাকা দরে।

অন্যদিকে, এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি খেসারির ডালের দাম ছিল ১০০ টাকা যা এদিন বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এছড়াও চড়া দাম রয়েছে ছোলার বাজারেও। এদিন ভালোমানের ছোলার কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা দরে। যা গত রমজানে বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা দরে। এর বাইরে ভালোমানের মসুর ডালের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৮০ টাকা এবং মুগ ডালের দেড়শ টাকার উপরে।

এদিকে গত শুক্রবার গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও গত কয়েকদিন ধরে তা ৮শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। এদিন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে ২১০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা দরে। আর প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়।

এদিকে বাজারে ১ মার্চ থেকে সয়াবিনের নতুন দাম কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও বাজারে বিক্রি হয়েছে আগের দামেই। বিক্রেতারা বলছেন, নতুন রেটে বোতলজাত তেলের সরবরাহ না পাওয়ায় তারা আগের দামে বিক্রি করছেন। কিছু কিছু দোকানে পুষ্টি সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ থাকলেও ১ ও ২ লিটারের কোনো বোতলের সরবরাহ নেই বলেও জানান দোকানিরা।

এর আগে গত ২০ ফেব্রæয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক টাস্কফোর্সের সভায় ১ মার্চ থেকে সয়াবিন তেলের লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে নতুন দর কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু গত ৯ দিনেও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন রেটে তেলের সরবরাহ শুরু করেনি। নতুন দামে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে ১৬৩ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। যদিও রমজানে দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্কহ্রাস করা হয়েছিল। সে হিসেবেই এই নতুন দাম ঘোষণা করা হয়। তবে বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় চিনির দাম কিছুটা কমেছে। এদিন বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১৪৫ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে দেড়শ টাকা দরে।

অন্যদিকে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে এসে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমলেও এ সপ্তাহে তা ফের বেড়েছে। শিম, মুলা, ফুলকপির পিস ও শালগমের কেজি গত সপ্তাহে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও এ সপ্তাহে তা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকার উপরে। এছাড়াও বেগুন, টমেটো, শসার কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। চিচিঙ্গা, কচুর লতি, বরবটি ও করলা ও লাউয়ের দাম এখনও বাড়তি দাম রয়েছে।

অনেকটা গত সপ্তাহের দামে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের বাজারে। এদিন মাঝারি আকারের রুইয়ের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় কাতল ৪শ’ টাকা, বড় পাঙাশ ২৫০ টাকা, চাষের কই (ছোট) ৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া আড়াইশ টাকা ও শিং মাছ ৬শ টাকা, শোল মাছ ৮শ’ টাকা, পাবদা ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, ট্যাংরা মাছের কেজি আকার ভেদে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা, মলা মাছ ৫শ’ টাকা, বাইলা ১ হাজার টাকা, পোয়া মাছ ৩৫০ থেকে ৪শ’ টাকা, মাঝারি আকারে বোয়াল ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা, গুঁড়া মাছ ৩শ’ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫শ’ টাকা, গলদা ৭শ’ এবং বাগদা ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকা ও রূপচাঁদা ৯শ’ টাকা দরে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে