শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইন ক্লাসের সমন্বয়হীনতায় সেশনজটের আশঙ্কায় শিক্ষার্থীরা

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
  ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১৯:১৩

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) একসময় চার বছরেই স্নাতক শেষ করা গেলেও বর্তমানে এক বছর, দেড় বছর এমনকি কিছু কিছু বিভাগের শিক্ষার্থীরা দুই বছরের সেশনজটের আশঙ্কায় রয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৯ সালে তৎকালীন উপাচার্য খন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের পর থেকেই বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্ন দাবিতে শুরু হয় ছাত্র আন্দোলন-ক্লাস বর্জন।

ইতিহাস বিভাগের আন্দোলনে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা লাগানো হলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের সাথে শ্রেণী কক্ষ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা থেকে শিক্ষকের সাথে অসদাচরণের জন্য শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করার শিক্ষক আন্দোলনেও থমকে গিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। একের পর এক আন্দোলন ও 'ভারপ্রাপ্ত' অভিভাবকে চলা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন সেশনজট হওয়ার আশঙ্কা, ঠিক তখনই আশঙ্কাকে সত্য করেছে মহামারি করোনা। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় বিগত বছরের ১৭ মার্চ হতে বন্ধ রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

ভারপ্রাপ্তের 'ভার' মুক্ত করে উপাচার্যও নিয়োগ দেয়া হয়েছে বশেমুরবিপ্রবিতে। নতুন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েই অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন। সেশন জট এড়াতে স্বভাবতই অনলাইন ক্লাসের দিকে পা বাড়ায় প্রশাসন। কিছু বিভাগে পুরোদমে অনলাইন ক্লাস চললেও কিছু বিভাগে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিলো অনলাইন ক্লাস কার্যক্রম।

তবে অনলাইন ক্লাস চললেও এক প্রকার সেশনজট নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে শিক্ষার্থীদের ভাগ্যে। সেই অনলাইন ক্লাসও বন্ধ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রাপ্যতার তারিখ থেকে আপগ্রেডেশনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি কর্মসূচির জন্য। গত ৬ এপ্রিল হতে সকল একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। এতে অনলাইন ক্লাস কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। যদিও লকডাউনের কারণে প্রশাসনের নির্দেশেই এই মুহুর্তে বন্ধ রয়েছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহমেদ মাসুদ বলেন, "আমরা তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা দুই বছর ধরে একই বর্ষেই রয়েছি। আমাদের শিক্ষকরা যদি অনলাইন ক্লাস ও এসাইনমেন্টের মাধ্যমে সেশনজটে বোঝাটা কমিয়ে নিতেন, তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতাম।"

এদিকে এই সেশনজট কমাতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. কামরুজ্জামান বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে সেশনজট কিভাবে নিরসন হবে সেটা বলা মুশকিল। তবে আমরা শিক্ষরা যেটা আলোচনা করেছি, আমরা যতদূর পারি ছুটি কমিয়ে ক্লাস চালিয়ে সেশনজট নিরসনের চেষ্টা করবো।"

শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অনলাইন ক্লাস বন্ধের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.কিউ.এম. মাহবুব বলেন, "অনলাইন ক্লাস কিছুটা বন্ধ আছে, কিছুটা খোলা আছে। দুই-চার দিনের ভেতর এটা ঠিক হয়ে যাবে। শিক্ষকদের সাথে আমি বসেছিলাম। শুধু শিক্ষকদের আন্দোলন নয়, সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে প্রশাসন থেকে বন্ধ আছে। ২৪ এপ্রিলের পরেই সব ঠিক হয়ে যাবে।"

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে