বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকাই মসলিনের পুনর্জন্ম ও অধ্যাপক ড. বেলাল

বুটেক্স প্রতিনিধি
  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:০১
ঢাকাই মসলিনের পুনর্জন্ম ও অধ্যাপক ড. বেলাল

মসলিন, বাংলাদেশিদের অন্যতম ধারক এবং খ্রিষ্টের শুরু থেকে মধ্যযুগ হয়ে ইংরেজ শাসনামলের মধ্যকাল অব্দি জগৎজোড়া বিখ্যাত ছিল ঢাকাই মসলিন। রোমের নারীদের বস্ত্রাবরণ থেকে শুরু করে মমিতে পর্যন্ত ব্যবহার হয়েছে এই মসলিন। বিশেষ করে মোঘল আমল ছিলো মসলিনের স্বর্ণযুগ। বলা হয়ে থাকে একটি ম্যাচবক্সে অথবা আংটির মধ্যে দিয়ে সহজে পুরে দেয়া যেতো একটি আস্ত একটি শাড়ি। মোগল আমলে তৈরি করা ঢাকাই মসলিন ঘাসের ওপর রাখলে এবং তার ওপর শিশির পড়লে কাপড় দেখাই যেত না। কয়েক গজ মসলিন কাপড় ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যেত বলে জনসাধারণ একে ‘হাওয়ার কাপড়’ বলত।

পলাশী পরবর্তী ইংরেজদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কর এবং নানা ষড়যন্ত্রের প্রভাবে হারিয়ে যেতে থেকে এই শিল্প। আর এই শিল্পের কফিনে পেরেক ঠুকা হয় মসলিনের কারিগরদের হাতের আঙুল কেটে দেয়ার মাধ্যমে।

তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশে আবার ফিরে আসে ঢাকাই মসলিন। আর মসলিন প্রকল্পের সাত সদস্যের দলে সুতা থেকে শুরু করে কাপড় তৈরী করার দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামান যিনি কিনা ড. বেলাল নামেই বেশি পরিচিত।

দীর্ঘ ছয় বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢাকাই মসলিন আবার ফিরে এসেছে। এই মসলিন পুনরোদ্ধার করতে তিনি গিয়েছেন সূদুর ইংল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া এন্ড আলবার্ট মিউজিয়ামে। সেখানে নিজে হাতে এবং তার সাথে নিয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশ দিয়ে পরীক্ষা করেছেন ঢাকাই মসলিনের বুনন-কৌশল। এবং দেশে ফিরে এসে বুনন করেছেন মিহি সুতার এই ঢাকাই মসলিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কোণায় ছুটে চলা এই পরিশ্রমী গ্রেড-১ অধ্যাপকের কল্যাণে মসলিনের সাথে ওতোপ্রোতো জড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। ড. বেলালের এই গবেষণার স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলাদেশ সরকার তাকে জনপ্রশাসন পদক-২০২১- এ ভূষিত করেছেন।

এই সাত সদস্যের দলের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশিরা ফিরে পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন এবং ২০২০ এর ২৮ ডিসেম্বর ঢাকাই মসলিনের ভৌগোলিক স্বত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ।

এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে