ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর ক্যাম্পাস রাজনীতিতে মুক্ত বিচরণ শাখা ছাত্রদলের। সংগঠনটিতে ৩১ সদস্যদের আহ্বায়ক কমিটি থাকলেও খোদ কমিটির অভ্যন্তরেই রয়েছে বিভেদ। সাড়ে ৩ বছর পূর্বে এই কমিটি অনুমোদনের দেওয়ার দিনই কমিটিকে প্রত্যাখানের ঘোষণা দেয় একাংশ। পরে প্রত্যাখান না করলেও তলে তলে বিরোধ ছিল তাদের। সম্প্রতি পট পরিবর্তনের পরে স্পষ্ট হয়েছে বিভক্তির রেখা। ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনীতি করছে শাখা ছাত্রদলের দুইটি গ্রুপ। তবে গ্রুপিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উভয় গ্রুপ-ই।
জানা যায়, সর্বশেষ ২০২১ সালের ১৬ জুন ছাত্রদলের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল ইবিতে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। এতে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাহেদ আহম্মেদকে আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রুমী মিথুনকে সদস্য সচিব করা হয়।
পরদিন বিকেলে সংবাদ সম্মলেন করে ওই কমিটিকে প্রত্যাখানের ঘোষণা দেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজের নেতৃত্বে কমিটিতে স্থান পাওয়া তার অনুসারীরা। সংবাদ সম্মেলনে তাকেই সদস্য সচিব করার প্রস্তাব করা হয়েছিলো বলে দাবি করেন পারভেজ। তাকে বঞ্চিত করে কমিটিতে বিবাহিত, অছাত্র, নারী কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের পদ দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করেন পারভেজ ও তার অনুসারীরা। এ সময় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা। এর পর পৃথকভাবে কয়েকটি মিছিল করেছে দুইটি গ্রুপ। পরে পদত্যাগ না করলেও ভিতরে ভিতরে বিভক্তি থেকে যায় তাদের।
ওই সময় ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের দাপটে ক্যাম্পাসে অভ্যন্তরে কোনো রাজনীতির সুযোগ পায়নি শাখা ছাত্রদল। ক্যাম্পাসের বাইরে চলতো দলীয় কার্যক্রম। অস্তিত্ব সংকটের সেই সময়েও ভিতের ভিতের বিভেদ ছিলো সাহেদ ও পারভেজ গ্রুপের।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সরকার পতনের পর ক্যাম্পাসে সরব হয়ে উঠে সংগঠনটি। একই সঙ্গে নতুনভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে সাহেদ ও পারভেজ গ্রুপ। বিভিন্ন কর্মসূচিতে আলাদভাবে স্লোগান দিতে দেখা যায় গ্রুপ দুটিকে।
এ বিষয়ে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ বলেন, সর্বশেষ আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত আমরা আলাদা ব্যানারে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়েছিলা। পরে এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব আমাকেসহ কয়েকজনকে শোকজ করে। পরবর্তীতে কেন্দ্রের নির্দেশনায় আমরা একই ব্যানারে কার্যক্রম চালাচ্ছি। আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই। তবে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা আছে। একে কর্মী সংগ্রহের প্রতিযোগিতাও বলা যেতে পারে।
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মদে বলেন, আমাদের মধ্যে তেমন গ্রুপিং নেই। তবে যারা সংগঠনের ভিতের গ্রুপিং করার চেষ্টা করছে, তারা সরাসরি কেন্দ্রের নির্দেশনা অমান্য করবে। এই ধরনের কাজ সংগঠনকে অবমাননা করার শামিল। সম্প্রতি এই ধরনের প্রবণতা যারা চালাচ্ছে তাদের বিষয়টি আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রকে জানিয়েছি। কেন্দ্র এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যাযাদি/ এসএম