বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

জাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সেবায়  বিএনসিসি

ওসমান সরদার, জাবি প্রতিনিধি
  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৭
জাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সেবায়  বিএনসিসি
ছবি: যায়যায়দিন

"প্যারেড সাবধান হবে, সাবধান! প্যারেড ডানে ঘুরবে, ডানে ঘুর! প্যারেড বামে ঘুরবে বামে ঘুর! প্যারেড আরামে দাড়াবে, আরামে দাঁড়াও! " ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন সকালে এভাবেই প্রস্তুতি নেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসির) ৪ রমনা রেজিমেন্টের অন্তর্ভুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্লাটুন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০২৪-২০২৫ সেশনের প্রথম বর্ষের স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন নিয়মশৃঙ্খলার গুরু দায়িত্ব পালন করছেন বিএনসিসির ক্যাডেটরা। পরীক্ষা শুরু হাওয়ার ৩০ মিনিট আগেই কেন্দ্রে পৌঁছে যান তারা। এরপর সারিবদ্ধভাবে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করান শিক্ষার্থীদের।

1

এবছর মোট ১৮১৬ আসনের বিপরীতে ২৬২৪৯০ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবক হিসেবে আসেন আরও দুই লক্ষাধিক মানুষ। এতো বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সার্বিক বিষয়ে দিকনির্দেশনা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা খুবই দুরূহ কাজ। তবে বিএনসিসি খুবই সুশৃঙ্খলভাবে এ কাজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন প্রতিদিন।

পরীক্ষা চলাকালে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বিএনসিসি। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ছাড়াও অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা, এডমিট কার্ড দেখে পরীক্ষার রুম চেনানো, সারিবদ্ধভাবে কেন্দ্রে প্রবেশ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন তারা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে লাল ব্যারেটে বিএনসিসি ও নীলাভ ধূসর পোশাক পরিহিত একদল সুশৃঙ্খল সদস্যকে ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় নিরলস পরিশ্রম করছেন। দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ কাজে ব্যস্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিএনসিসি ক্যাডেটরা। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে সারিবদ্ধভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ ও প্রাথমিক নির্দেশনা দেয়াসহ পরীক্ষা কেন্দ্রের সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কাজ করছেন তারা। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অভিভাবকদের অতিরিক্ত ভিড় জমাতে না দেওয়া, দেরিতে আসা শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও করছেন তারা।

চলতি বছর মোট ১৪টি কেন্দ্রে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিএনসিসির জাবি প্লাটুনের ক্যাডেট আন্ডার অফিসার (সিইউও) কে. এম. সাদমান জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে বিএনসিসি সদস্যরা সমাজবিজ্ঞান ভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, পুরোনো কলা ভবন, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ মোট ছয়টি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন।

ক্যাডেট আন্ডার অফিসার (সিইউও) কে. এম. সাদমান জাহাঙ্গীর বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের ক্যাডেটরা (বিএনসিসি) প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতার এবং নিয়ম শৃংখলার জন্য দায়িত্ব পালন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক শৃংখলা রক্ষায় সর্বমোট 60 জন ক্যাডেট নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি প্লাটুনের পক্ষ থেকে কাজ করছি। আমাদেরকে এবার সর্বমোট 6টা পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করব প্রতিবছর যেভাবে জাবি প্লাটুন পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের পাশে থেকে সহায়তা করেছে এভাবেও একইভাবে আমরা তাদের জন্য কাজ করতে পারবো। পাশাপাশি পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অনুরোধ করব আমাদের পাশে থেকে আমাদের কার্যক্রমে সাহায্য করার জন্য।

বিএনসিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক (পিইউও) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক তমালিকা সুলতানা বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিএনসিসি তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এছাড়া বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসেও তারা শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করে। তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

বিএনসিসির এমন কাজের প্রশংসা করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, আমাদের পরীক্ষার্থীদেরকে অনেকে সাহায্য করছে, এর মধ্যে সবচেয়ে সুশৃঙ্খলভাবে দায়িত্ব পালন করছে বিএনসিসির সদস্যরা। ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলায় প্রক্টোরিয়াল বডির সাথে মূল দায়িত্ব যারা পালন করছেন তারা হলেন বিএনসিসি। তাদের এই কাজ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তাদের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে সেই প্রত্যাশা আমাদের। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক মিটিং এ তাদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে যেন ভবিষ্যতে তাদের কার্যক্রম আরও প্রশংসনীয় হয়।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে