জ্বালানি সাশ্রয় ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং জ্বালানির সুবিচার সংকট মোকাবেলার লক্ষ্যে ‘জ্বালানি ও সামাজিক সুবিচার ফোরাম’ এর উদ্যোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হয়েছে ‘জ্বালানি সুবিচারে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার। এতে বক্তারা, বিগত সরকারের আমলে জ্বালানি খাতে কাঠামোগত দুর্বলতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে এর আইনি দুর্বলতাগুলো তুলে ধরেন।
শুক্রবার (২ মে) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের নাটমণ্ডপে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম. শামসুল আলম, ক্যাবের আইন উপদেষ্ঠা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি খাত বর্তমানে নানা জটিলতা ও গভীর সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। দেশের টেকসই উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক ন্যায়ের জন্য এ খাতে সুবিচার প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি হয়ে উঠেছে। বক্তারা বলেন, জ্বালানি শুধু অর্থনীতির চালিকাশক্তি নয়, এটি একটি মৌলিক মানবাধিকার, যা দেশের প্রতিটি নাগরিকের ন্যায্য প্রাপ্তির অধিকার। তারা উল্লেখ করেন, বর্তমানে জ্বালানি খাতে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার অভাব স্পষ্ট, যার ফলে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সমাজে বৈষম্য আরও বাড়ছে।
বক্তারা বলেন, দেশের বিদ্যমান জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি অপরিহার্য। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি ও অন্যান্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থার প্রসারের মাধ্যমেই জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন সম্ভব। তারা জোর দেন যে, জনগণের অধিকার নিশ্চিত না করে এবং স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক নীতি প্রণয়ন না করে এই খাতের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হবে না।
বক্তারা আরো বলেন, জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, নীতিগত দুর্বলতা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির অতিনির্ভরতা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক আবুল ফজল। আলোচনার শেষ পর্যায়ে জ্বালানির সুবিচার ও সচেতনতার লক্ষ্যে ‘জ্বালানি ও সামাজিক সুবিচার ফোরাম’ এর ৯ সদস্য বিশিষ্ঠ একটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।