রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম (জীবন) এর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মার্ক টেম্পারিংয়ের অভিযোগ করেছিলেন একই বিভাগের সাবেক এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগের পরই ওই শিক্ষার্থীর নাম ও পরিচয় প্রকাশ পাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই শিক্ষার্থী । তাই ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর শনিবার (৩ মে) একটি লিখিত অভিযোগ করেন ।
সেই শিক্ষার্থী অভিযোগ দেওয়ার পর পরেই প্রশাসন অভিযোগকারীর নাম প্রকাশ করলে ভুক্তভোগীকে তার পরিবারে ফোন দেওয়া, অভিযোগ প্রত্যাহার করা ও মধ্যস্থতার চাপ দেয়, যার কারণে সেই শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।
অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, অভিযোগ দায়েরের সময় আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম যেন আমার ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, অভিযোগ দায়ের করার পরপরই শিক্ষক তানজিউল বিভিন্ন মাধ্যমে আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের ফোন করেছেন, অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়েছেন এবং বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে আমাকে হয়রানি করেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে বার বার তিনি আমার সাথে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমার বাবা-মাকে একাধিকবার ফোন করে মানসিকভাবে হয়রানি করছেন।এমনতা অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য তিনি বিভিন্নজনের মাধ্যমে নানা উপায়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তানজিউল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ওঠা রেজাল্ট টেম্পারিং ও যৌন হয়রানির অভিযোগকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হালকাভাবে দেখানোর চেষ্টা করছেন, যা তার বিভিন্ন তৎপরতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
গত ১৩ এপ্রিল রাতে এই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পর পর তিনটি অডিও ফাঁস হলে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ গত ২৪ এপ্রিল নাম পরিচয় গোপন রাখা শর্তে প্রশাসনের কাছে আরেকটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
অভিযোগকারীকে মধ্যস্থতার কথা বলেছিল কিনা তা জানতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম জীবন বলেন, এমন কিছুই হয়নি। আমি কোনো কিছু নিয়েই কথা বলিনা। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা না দেওয়া পর্যন্ত আমি অপেক্ষায় আছি। আমি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকেও পদত্যাগ করি।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা বা আমাদের সদস্যদের মধ্যে কেউ নাম প্রকাশ করিনি। আমরা অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে কাজ করতেছি। আমরা ই-মেইল পাঠানোর ক্ষেত্রে একদম পারসোনাল ল্যাপটপ ব্যবহার করতেছি, যাতে তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা পায়।তদন্ত কমিটি কাজ কতদূর এগিয়ে নিলো এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের কাজগুলো প্রায় গুছিয়ে নিয়েছি, সেই অনুযায়ী কাজ করতেছি। শিগগিরই তদন্তের ফলাফল প্রকাশ হবে।
যাযাদি/ এসএম