বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ৷ পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দুই আবাসিক হলের প্রভোস্ট ও এক গবেষণা সেন্টারেরক পরিচালক পদত্যাগ করেছেন। ভিসি পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ১১ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার ব্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট ড. আবদুল আলিম বছির এবং জীবননান্দ দাশ রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক সঞ্জয় কুমার সরকার তাদের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন ৷ এর আগে গত ২৯ এপ্রিল একই কারণ দেখিয়ে বিজয় -২৪ হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মো.মেহেদী হাসান পদত্যাগ করেন।
মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল, তাদের বিভিন্ন পদে বেছে বেছে পদায়ন করেছেন এই উপাচার্য, আর যারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিল, তাদের নানাভাবে হয়রানি ও হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী একজন উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও, আমাদের উপাচার্য বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে প্রশাসনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হচ্ছে না৷ সাত মাসের পর্যবেক্ষণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, বর্তমান উপাচার্যের অধীনে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়।
নিয়ম অনুযায়ী একজন উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও, আমাদের উপাচার্য বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে প্রশাসনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হচ্ছে না৷ সাত মাসের পর্যবেক্ষণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, বর্তমান উপাচার্যের অধীনে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব নয়।
এবিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, “একজন উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে থাকার কথা থাকলেও, তিনি বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে প্রশাসনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তার স্বাভাবিক গতিতে পরিচালিত হচ্ছে না৷ অতিসত্বর তার পদত্যাগ করছি আমরা।
জানতে চাইলে সদ্য পদত্যাগ করা প্রভোস্ট আব্দুল আলিম বছির জানান, "আমি ব্যক্তিগত কারন দেখিয়ে আজকে ভিসি দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। তবে এর পিছনে অনেক কারন আছে। আমি এখন বলতে চাই না"।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সার্বিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল দাবি জরুরি সিন্ডিকেট মিটিংয়ে মেনে নেওয়ার পরও গুটিকয়েক শিক্ষার্থী আন্দোলন করছে। একটা দাবি মেনে নিলে তারা নতুন নতুন দাবি নিয়ে আন্দোলন করে । সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নেই দাবি করেন উপাচার্য। উপাচার্য বলেন, কিছু শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে ইন্ধন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করছে এজন্য দিন দিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা এদের প্রতি বিরক্ত হতেও শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের প্রভোস্ট ও দপ্তরের পরিচালকগণ পদত্যাগ করছেন একের পর এক কারণ কি? জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, এখানে বেশকিছু বিষয় এক হয়েছে তাদেরও কিছু অভিসন্ধি রয়েছে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এজন্য তারা এখন পদত্যাগ করছেন। সাথে সাথে তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী আগের সরকারের আমলের নিয়োগকৃত তাদের প্রত্যেকের ফ্যাসিস্টের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কারও কম কারও বেশি। উপাচার্য বলেন, যে বা যারা ইন্ধন দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে তাদেরকে সহজেই ছেড়ে দেয়া হবে না।