সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের মৎস্যসম্পদ জাতীয় অর্থনীতিতে আশা জাগাচ্ছে

দেশের প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টি চাহিদার বড় অংশ আসে মাছ থেকে। মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে। দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এ খাতের উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে পরিকল্পিত অর্থায়ন দরকার। সরকারের কৃষিঋণ, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের বিনিয়োগে মৎস্য খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। মৎস্য খাতে উৎপাদন বেড়ে যাওয়াসহ অনেক সাফল্য এলেও এই খাতে এখনো প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ আসেনি। চাষিরা কীভাবে ঋণ পাবেন, তা নিয়েও ধারণার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যে কারণে এখনো অনেক চাষি উচ্চসুদে দাদন বা ঋণ নেন। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে তা সামগ্রিকভাবে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।
ইমরান ছিদ্দিকি
  ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

মাছে-ভাতে বাঙালির প্রবাদ ফিরে এসেছে আবারও। মুক্ত জলাশয় আর ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা লাখ লাখ পুকুরে চাষের মাছে দেশে ঘটেছে রুপালি বিপস্নব। স্বাদুপানি ও চাষের মাছ উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ তিন দেশের একটি বাংলাদেশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) প্রকাশিত বিশ্বের সামগ্রিক মৎস্যসম্পদবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে স্বাদু পানির মাছের ১১ শতাংশ এখন বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে। যার মোট পরিমাণ প্রায় ১৩ লাখ টন।

মাছ উৎপাদনের পাশাপাশি রপ্তানিতেও এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, ফ্রান্স, আমেরিকা, জাপান, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানিসহ বিশ্বের ৫২টি দেশে চিংড়ি, রুই, কাতলা, মৃগেল, কাঁকড়া, কুঁচিয়া, পাংগাস, পাবদা, তেলাপিয়া, শোল, কৈ, শিং, মাগুর ইত্যাদি প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ ও বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি হচ্ছে। এসব দেশে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মাছ রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়েেনও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। শুধু তাই নয়, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রজয়ের পর বঙ্গোপসাগর থেকে মৎস্য আহরণ বেড়েছে। সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ায় এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশের। মাছের উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিদেশে রপ্তানি সবকিছু মিলে দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের উন্নয়নে, মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হলে খাবারের একটি বড় জোগান হয়। মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ করে মাছ। যারা মাছ উৎপাদন করেন তাদের বেকারত্ব লাঘব হচ্ছে, তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছেন। গ্রামাঞ্চলে মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। মৎস্য খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এক কোটি ৯৫ লাখ মানুষ সম্পৃক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে।

মৎস্য গবেষকরা বলছেন, দেশের মৎস্য বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত উন্নত মাছের জাত এবং তা দ্রম্নত সম্প্রসারণের ফলে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বিশেষ করে ময়মনসিংহ, গাজীপুর, বগুড়া ও কুমিলস্না জেলায় পুকুরে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে ঘেরে মাছ চাষে রীতিমতো বিপস্নব ঘটেছে। দেশে মোট কৃষিজ আয়ের শতকরা ২৪ ভাগের বেশি অবদান মৎস্য খাতে। মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এতে করে সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থানে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর (বিবিএস) একটি খানা জরিপ বলছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন একজন মানুষের প্রায় ৬২ গ্রাম আমিষের প্রয়োজন। আর এই আমিষের প্রধান চাহিদার উৎস হচ্ছে মাছ। বাজারে দুই অঙ্কের নোটেই মিলছে মাছ। দাম সাধারণের নাগালে থাকায় দেশে মাথাপিছু মাছ খাওয়ার পরিমাণও বেড়েছে শতভাগ। মাছ উৎপাদনে শীর্ষে থাকলেও রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে পিছিয়ে বাংলাদেশ। রপ্তানিতে এখন অবস্থান ২১তম। এক যুগে মাছের উৎপাদন ৮৫ শতাংশ বাড়লেও দাম নাগালের বাইরে।

সরষে ইলিশ, ইলিশ পাতুড়ি, ইলিশ ভাজা হরেক পদের রান্না, হরেক রকম স্বাদ। বাঙালির বর্ষবরণ ইলিশ ছাড়া হয় না। ওপার বাংলায় জামাইষষ্ঠীতে ইলিশ লাগবেই। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় ১২ শতাংশ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান প্রায় ১ শতাংশ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিজ্ঞানীরা মনে করেন, যে হারে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে তাতে আগামী কয়েক বছরে উৎপাদন আরও বাড়বে। বিশ্বের প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ ইলিশ উৎপাদন দেশ হবে বাংলাদেশ।

বিশ্বে সেরা ১০ রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ। তবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশের মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য ৫২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা থাকার পরও দেশে কোনো প্রতিষ্ঠানই সেভাবে মাছ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাবার তৈরি করছে না। চাহিদার চেয়ে মাছের উৎপাদন বেশি হলেও কেবল চিংড়িই প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে, তাও শুধু রপ্তানির জন্য।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানান, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদন এবং দেশে ও বিদেশে সরবরাহের জন্য সরকার দেশে আন্তর্জাতিকমানের পরীক্ষাগার তৈরি করেছে। পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিদেশ থেকে মাছের জন্য যেসব খাদ্য উপাদান আসে সেগুলোও এ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে মাছ উৎপাদন, আহরণ ও বিপণনে অস্বাস্থ্যকর কোনো উপাদান প্রবেশ করতে না পারে। শুধু মাছ উৎপাদন নয়, বরং স্বাস্থ্যসম্মত ও খাবার উপযোগী নিরাপদ মাছ উৎপাদন সরকারের লক্ষ্য। আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি। এখন আমাদের লক্ষ্য দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তিনি বলেন, মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের বহুমুখী ব্যবহারে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। মাছ থেকে চিপস, কেকসহ অন্যান্য মৎস্যজাত পণ্য তৈরি করলে মাছের ভোক্তাও বৃদ্ধি পাবে। এভাবে মাছের বহুমুখী ব্যবহার প্রক্রিয়াকে সরকার উৎসাহিত করছে। মাছের বহুমুখী ব্যবহার নিয়ে যারা কাজ করতে চায় তাদের সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে কৃষি ঋণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ সরকার নানারকম সহায়তা প্রদান করছে।

সমুদ্রসীমাসহ অন্য জায়গায় যারা মাছ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত, জেলেদের প্রতিটি নৌযানে যান্ত্রিক পদ্ধতি সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে তাদের পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা যায়। পাশাপাশি মাছ ধরার কোনো নৌযান দুর্ঘটনায় পড়লে, সেটির অবস্থান জানার জন্যও এ পদ্ধতি কাজে লাগবে। উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি মাছের বহুমুখী ব্যবহারে সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে। বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আহরণে বাংলাদেশ এখন তৃতীয়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা মাছ উৎপাদনে পঞ্চম এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশের জলসীমায় প্রচলিত ও অপ্রচলিত মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা ৩৯ প্রজাতির দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছ ফিরিয়ে এনেছে। দেশীয় মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য ময়মনসিংহে লাইভ জিন ব্যাংক করা হয়েছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে মুক্ত ও বদ্ধ জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ২০২০ সালে মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছে।

দেশের প্রাণিজ আমিষ ও পুষ্টি চাহিদার বড় অংশ আসে মাছ থেকে। মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে। দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এ খাতের উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে পরিকল্পিত অর্থায়ন দরকার। সরকারের কৃষিঋণ, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের বিনিয়োগে মৎস্য খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। মৎস্য খাতে উৎপাদন বেড়ে যাওয়াসহ অনেক সাফল্য এলেও এই খাতে এখনো প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ আসেনি। চাষিরা কীভাবে ঋণ পাবেন, তা নিয়েও ধারণার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যে কারণে এখনো অনেক চাষি উচ্চসুদে দাদন বা ঋণ নেন। সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ালে তা সামগ্রিকভাবে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে। এই খাতে এত দিন যৌক্তিকভাবে বিনিয়োগ হয়নি। তবে বিদেশে রপ্তানির জন্য সরকার তিনটি মাছকে চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হলো- পাঙাশ, তেলাপিয়া ও কই মাছ। এই মাছগুলোর রং, স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে- যাতে তা রপ্তানিযোগ্য করা যায়।

মাছে-ভাতে বাঙালি- এটা বাংলার জনপ্রিয় প্রবাদ। যা বাসী হতে যাচ্ছিল। আধুনিক মৎস্য চাষাবাদ পদ্ধতি ফের দেশকে মাছের বাড়তি জোগান এনে দিয়েছে। দেশে সাম্প্র্রতিক বছরগুলোতে মাছের সরবরাহ ক্রমাগত বাড়ছে। এতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা যেমন মিটছে, তেমনি বিশ্ববাজারেও বাড়ছে রপ্তানি। তবে এ খাতে এখন পর্যন্ত সমুদ্রের অবদান সামান্যই। এখন সমুদ্রে যে বিপুল অর্থনৈতিক এলাকা বাংলাদেশের আওতায় এসেছে, সেখানে মৎস্যসম্পদ আহরণের জন্য চাই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধা গড়ে তোলা। সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ২৫ অথচ মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। সমুদ্র বিজয়ে দেশে বস্নু-ইকোনমির ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের উন্নয়নের জন্য অর্থনীতির সমৃদ্ধির জন্য এই সম্পদের দ্রম্নত ও কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মৎস্য খাতে সার্বিক উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি এবং গভীর সমুদ্রে মৎস্যসম্পদ আহরণের জন্য বাংলাদেশ এ বিষয়ে ইতিমধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মনে হয়। ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে মীমাংসিত সমুদ্রসীমায় মাছের উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দেশের মৎস্যসম্পদের আহরণ ও উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে- তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে মাছ চাষ, চিংড়ি চাষিদের এক অঙ্কের সুদে ঋণ, চিংড়ির রেণু পোনা আহরণ বন্ধে দরিদ্র জেলেদের খাদ্য সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, জলমহালগুলো মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে ন্যস্ত করা, হালদা নদী রক্ষায় রাবার ড্যাম তুলে ফলা, মৎস্য উৎপাদনে ব্যবহৃত বিদু্যৎ বিল ও ভূমি উন্নয়ন করে ছাড় দেওয়া, মাছের খাবারের উপাদান আমদানিতেও শুল্কছাড়সহ বেশ কিছু উলেস্নখযোগ্য গঠনমূলক প্রকল্প। মাছের উৎপাদন উলেস্নখযোগ্য হারে বাড়ায় জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন প্রত্যাশার সৃষ্টি হয়েছে।

কৃষির অন্যান্য খাত উপ-খাতের তুলনায় মাছের উৎপাদন বাড়ার হার বেশি। বিশাল সমুদ্রসীমায় মৎস্যসম্পদের ১ শতাংশও ধরতে পারছে না বাংলাদেশের জেলেরা উন্নত জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় কী পরিমাণ মৎস্যসম্পদ রয়েছে সে ব্যাপারেও কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। সমুদ্র থেকে আহরিত মাছ বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে অনায়াসেই বিলিয়ন ডলার আয় করা যায়। এ ছাড়া মাছের তেল থেকে ওষুধ, সস প্রভৃতি তৈরি করা সম্ভব। এতে নতুন কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও সম্ভব। সমুদ্রে যে বিপুল অর্থনৈতিক এলাকা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে, সেখানে মৎস্যসম্পদ আহরণের জন্য চাই প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধা গড়ে তোলা। একই সঙ্গে দক্ষ জনবল তৈরির ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। মাছের বাজার নিয়ে দুর্ভাবনা নেই। বলা যায়, গোটা বিশ্বেই মাছের অপরিমেয় চাহিদা রয়েছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য বিদেশি বিনিয়োগকেও স্বাগত জানাতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে