সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কচুরিপানার ওপর সবজির বাগান, সত্যি বিস্ময়কর!

ইমরান ছিদ্দিকি
  ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

জলজ জঞ্জাল কচুরিপানা এখন আশীর্বাদ। অবহেলিত এ উদ্ভিদকে কাজে লাগিয়ে আমরা সবজি বিপস্নব ঘটিয়েছি। এই যে দেখছেন জলের ওপর ভাসছে সবজিক্ষেত, 'এটি সম্ভব হয়েছে কচুরিপানার বদৌলতে। ভাসমান সবজি চাষ আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। দূর করেছে দারিদ্র্য।' কথাগুলো গোপালগঞ্জের পশ্চাৎপদ জলা ভূমিবেষ্টিত টুঙ্গিপাড়া উপজেলার মিত্রডাঙ্গা গ্রামের সবজিচাষি সুনীল বিশ্বাসের। জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, মুকসুদপুর, কাশিয়ানী ও সদর উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রামের বিলে এখন শুধু সবুজের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায়, সেখানে শুধু ভাসমান সবজি আর সবজি। ভাসমান ক্ষেতে জন্মেছে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি, করলা, ঢঁ্যাড়স, শসা, ঝিঙা, কচু, লালশাক, ডাঁটা, বাঙ্গি, মরিচ, হলুদসহ প্রভৃতি শাকসবজি ও মসলা। নদী-খালে-পুকুরে কচুরিপানার উপর সবজির বাগান সত্যি বিস্ময়কর। বাস্তবে না দেখলে তা বিশ্বাস করা কঠিন। আমাদের কৃষকরা বেঁচে থাকলে এ দেশে কখনো দুর্ভিক্ষ হবে না।

গোপালপুর গ্রামের সবজিচাষি স্বপন দাস (৬০) জানান, জমির বহুবিধ ব্যবহারের জন্য কৃষকরা কচুরিপানা কাজে লাগিয়ে বর্ষা মৌসুমে সবজি উৎপাদন করছেন। অসময়ের এ সবজির তারা ভালো দাম পাচ্ছেন। পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর পচা কচুরিপানা তারা জমিতে কম্পোস্ট হিসেবে ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন। মিত্রডাঙ্গা গ্রামের ধাপচাষি দেবল কর্মকার (৫৮) বলেন, এ বছর বর্ষায় আমি এক একর জমিতে ধাপ তৈরি করি। এতে আমার খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। ধাপে উৎপাদিত ফসল বিক্রি হবে অন্তত দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। লাভ হবে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। তারা কচুরিপানা কাজে লাগিয়ে সবজি উৎপাদন প্রযুক্তি কৃষকরাই উদ্ভাবন করেছেন। এ পদ্ধতি দেশের জলাভূমিবেষ্টিত সব এলাকায় সম্প্রসারিত হলে বর্ষা মৌসুমে দেশের সর্বত্র শাকসবজির সংকট ঘুচবে। জলাভূমিবেষ্টিত এলাকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের পাশাপাশি আয় বাড়বে।

গোপালগঞ্জ জেলায় কচুরিপানার ভাসমান বেডে কৃষির আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এখন ভাসমান বেডে সারা বছর বাণিজ্যিকভাবে সবজি, ফল, শাক ও মসলা উৎপাদিত হচ্ছে। এসব সবজি ও ফল বিক্রি করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার ১ হাজার ৮০০ কৃষক লাভজনক এ প্রযুক্তি গ্রহণ করেছেন। টুঙ্গিপাড়া উপজেলার জলমগ্ন মিত্রডাঙ্গাসহ আশপাশের গ্রামের কৃষক নিজের প্রয়োজনে এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। বেডের সাইজ তারা বড় করত। শুরুতে তারা এ বেডে লাল শাক, ডাটাসহ পাতা জাতীয় সবজির আবাদ করত। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে ভাসমান কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ করে ৫ বছরে আগে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ গবেষণা সম্প্রসারণ এবং জনপ্রিয়করণ প্রকল্প গ্রহণ করে। পরে তারা মাঠ পর্যায়ে সরজমিনে কৃষকদের সঙ্গে গবেষণা কাজ শুরু করে। তারা বেডের আকার ছোট করেন। ভাসমান বেডে পাতা, লতা, ফল ও মসলা জাতীয় ফসলের চাষাবাদ শুরু করেন। এতে গোপালগঞ্জে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। আর এ সাফল্যই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।

কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলেন, গোপালগঞ্জের অধিকাংশ জমি বছরের ৮ মাস জলমগ্ন থাকে। বছরে এসব জমিতে একটি মাত্র ফসল বোরো ধান উৎপাদিত হতো। তাই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জলজ জঞ্জাল কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে কৃষক পানির ওপর ভাসমান বেড তৈরি করেন। সেখানে চাষাবাদ করে পাতা জাতীয় সবজি উৎপাদন করতেন। এতে তারা পারিবারিক প্রয়োজন মেটাতে পারতেন। আমরা ভাসমান বেডে কৃষির আধুনিক প্রযুক্তি কৃষককে শিখিয়ে দিয়েছি। এখন তারা এখানে তরমুজ, বাঙ্গি, পেঁয়াজ, মরিচ, আদা, হলুদ, শসা, লাউ, কুমড়া, টমেটো, ঢঁ্যাড়স, চিচিঙ্গা, ফুলকপি, ঝিঙে, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, লালশাক, ঘিতিকাঞ্চন শাক, পালংশাকসহ বিভিন্ন ফসল বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করছেন। এগুলো নিজেরা খাচ্ছেন। বাড়তি ফসল বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করছেন। এ পদ্ধতির চাষাবাদ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

গোপালগঞ্জে ২২৯টি বিল ও জলাভূমি রয়েছে। বর্ষাকালে এগুলো জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এখানে প্রচুর কচুরিপানা পাওয়া যায়। তাই কচুরিপানা দিয়ে পানির ওপর ভাসমান বেড তৈরি করে ২২৯টি বিল ও জলাশয়ে চাষাবাদ সম্প্র্রসারণ করতে পারলে এ জেলা থেকে উৎপাদিত ভাসমান বেডের সবজি দেশের সবজির চাহিদা মেটাতে পারবে। আগামীর খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে এ পদ্ধতির চাষাবাদ ভূমিকা রাখবে। মিত্রডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হরিপদ কীর্ত্তনীয়া (৪৫) বলেন, আমরা সারা বছর ভাসমান বেডে চাষাবাদ করি। যে ফসল উৎপাদিত হয় তা বাজারে বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারি। আমাদের দেখাদেখি অনেকেই সারা বছর ভাসমান বেডে চাষাবাদে ঝুঁকছেন। এ পদ্ধতির চাষাবাদে বিষমুক্ত নিরাপদ ফসল উৎপাদন করা হয়। তাই বাজারে আমাদের উৎপাদিত ফসলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মিত্রডাঙ্গা গ্রামের লক্ষ্ণী দেবী (৪৭) বলেন, আমারা বাপ-দাদার দেখানো পদ্ধতিতে ভাসমান বেডে চাষাবাদ করছি। ফসল ভালো হচ্ছে। আমরা এখন ভালো আছি।

বরিশালে তিনভাগ জল আর ১ ভাগ স্থলভিত্তিক বাংলার সিংহভাগ বাস্তবতা দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল। বৃহত্তর বরিশালের কথাই বলি। এখানে পানি আর পানি অথৈই পানি। বছরের ৬ থেকে ৭ মাস পানি বন্দি থাকে সিংহভাগ এলাকা। নিজেদের বাঁচার তাগিদে তারা উদ্ভাবন করেছে একটি বিশেষ প্রযুক্তিগত পদ্ধতি। ভাসমান এ পদ্ধতিকে তারা স্থানীয় ভাষায় বলে ধাপ পদ্ধতি বা বেড় পদ্ধতি। পানিতে ভাসমান বলে ভাসমান পদ্ধতি। আর কচুরিপানা টেপাপানা দিয়ে ধাপে ধাপে এ কাজটি সাজানো হয় বলে ধাপ পদ্ধতিও। দূর থেকে মনে হয় সবুজের গালিচা। স্বচোখে দেখলে তখন মনে হয় সবুজ সুন্দর ভুবন। জোয়ারের পানিতে ভাসছে, আর ভাটায় জেগে উঠা উজানি চরে ভিন্নভাবে জেগে উঠেছে এসব। কৃষক দিনের পর দিন দেখে, শুনে, বুঝে ভাসমান বা কচুরিপানার ধাপ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। মাটি ছাড়া পানিতে চাষাবাদের বিজ্ঞানীদের দেয়া কেতাবি নাম হচ্ছে হাইড্রোপনিক পদ্ধতি। বরিশাল জেলার বানারীপাড়া, আগৈলঝাড়া উজিরপুর, পিরোজপুরের নাজিরপুর ও স্বরূপকাঠি উপজেলার বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে সবজি চাষ করছেন অগণিত কৃষক। বর্ষায় এসব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর নিচু জমি জলে বন্দি থাকে। জলাবদ্ধতা আর কচুরিপানা অভিশাপ কৌশলের কারণে পরিণত হলো আশীর্বাদে। ধারণা করা হয় পদ্ধতিটি প্রথম বের করেন নাজিরপুরের কৃষকরা। সেখানেই শুরু হয় ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ।

এমনিতে সারা বছর নিচু জমিতে জোয়ার ভাটার কারণে জমি পানিতে জলাবদ্ধ থাকে। ভাসমান কচুরিপানা পানিতে ভেসে থাকত প্রায় বছরব্যাপী। সাধারণভাবে কচুরিপানা বহুমাত্রিক অসুবিধার কারণ। এ জঞ্জাল কচুরিপানাকে তারা ধাপে ধাপে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করে। তারপর সেসব ধাপের উপর টেপাপানা দিয়ে তৈরি করে ভাসমান বীজতলা। এভাবে ভাসমান ধাপের উপরে বিভিন্ন রকম সবজির দৌলা দিয়ে মনের মাধুরী দিয়ে সাজায় নান্দনিক ভাসমান বীজতলা। সেসব ভাসমান বীজতলায় কোনোটায় পেঁপে, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটি আবার অন্যগুলো টমেটো, বেগুন, করলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সবুজ ফুলকপি, শসার চারা উৎপাদন এবং লাউশাক, লালশাক, পালংশাক, ডাঁটাশাক বা সাদা শাকের চাষও করেন। এসব ভাসমান বীজতলাগুলো যাতে ভেসে না যায়, সেজন্য তারা শক্ত বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে। শুকনো মৌসুমে পানি সরে গেলে সেসব কচুরিপানার ধাপ জমিতে মিশে জৈব পদার্থের অতিরিক্ত জোগান দেয়। জমি হয় উর্বর। শুকনো মৌসুমে এখানকার মানুষ চাষ করে বোরো ফসল। এত দিন তারা ভাসমান বীজতলায় কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করত না। কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে অল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার ব্যবহার করে ভালো ফল পাচ্ছেন। আগে যেখানে সবজির চারাগুলো ছিল কিছুটা লিকলিকে দুর্বল এখন আধুনিক ব্যবস্থা অবলম্বনে আর মানসম্মত বীজ ব্যবহারে শক্ত সবল স্বাস্থ্যবান চারার ফলনে সুফল পাচ্ছেন। কেউ জানে না কখন থেকে শুরু এর পথচলা। ১৫০ বছরের ইতিহাস। একদিনে আসেনি। ইতিহাস ঘেঁটে যতদূর সম্ভব জানা গেছে বাপ-দাদার চৌদ্দ পুরুষের ঐতিহ্যকে ধারণ করে লালন করে সুদীর্ঘ পথ পেরিয়ে ভাসমান চাষ পদ্ধতি আজকের একবিংশ শতাব্দীর এ প্রান্তে এসেও প্রাণবন্ত যৌক্তিক আবশ্যকীয় এবং অবশ্যই সমসাময়িক পরিবর্তিত জলবায়ুর অভিযোজন কৌশলে পরিবেশবান্ধব। সম্পূর্ণ স্থানীয় প্রযুক্তিতে বিল অঞ্চলের পতিত জমির পানিতে ভাসমান পদ্ধতিতে বিভিন্ন শাকসবজির চারা উৎপাদন ও চাষাবাদে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে এ এলাকার কৃষকরা।

পিরোজপুরে সম্পূর্ণ পানির ওপর ভাসমানভাবে চাষাবাদ হয় বলে স্থানীয়ভাবে এ চাষাবাদ প্রক্রিয়াকে ভাসমান পদ্ধতির চাষাবাদ বলা হয়। গোটা বিলাঞ্চলের শত শত হেক্টর পতিত জমি এখন এ প্রক্রিয়ায় চাষাবাদের আওতায় এসেছে। ভাসমান পদ্ধতিতে উৎপাদিত শাকসবজি ও তরকারি স্বাদে যেমন হয় সুস্বাদু, তেমনি আকারেও হয় অনেক বড়। ফলে উৎপাদিত ফসলের বাজারমূল্যও থাকে ভালো। উপজেলার মালিখালী, দীর্ঘা ও দেউলবাড়ী দোবড়া ও কলারদোয়ানিয়ার ভাসমান পদ্ধতিতে উৎপাদিত শাকসবজি ও তরিতরকারি ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় বৈঠাকাঠা ও মনোহরপুর বাজারে গড়ে উঠেছে আলাদা পাইকারি বাজার। মুগারঝোর গ্রামের সবজিচাষি জামাল জানান, চলতি মৌসুমে তার পাঁচ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজি ও তরকারির আবাদ করা হয়েছে- যা থেকে সব খরচ বাদে কমপক্ষে এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা মুনাফা করা সম্ভব হবে।

কিশোরগঞ্জে ভাসমান সবজি চাষ ও উৎপাদন চাষিদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছে। সদর উপজেলার মহিন্দ গ্রামের আমান উলস্নাহসহ একাধিক ভাসমান সবজিচাষি জানান, ভাসমান পদ্ধতিতে অল্প খরচে অধিক পরিমাণ সবজি উৎপাদন হওয়ায় তারা আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন। জলাবদ্ধ এলাকায় জলে মাছ চাষ আর ওপরে শাকসবজি উৎপাদন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে দারিদ্র্য দূর করে আশপাশের মানুষের জন্যও কিছু করতে পারছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আজিজুল ইসলাম বলেন, ভাসমান সবজি চাষ নতুন প্রযুক্তির নতুন সংযোজন। সারা বছরই ভাসমান সবজি চাষ করা সহজ। কৃষকদের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগামী দুই বছরে জেলায় দুই হাজারের বেশি কৃষককে ভাসমান সবজি চাষের আওতায় আনা হবে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক জি এস এম জাফর উলস্নাহ ভাসমান সবজি চাষ ও উৎপাদন পদ্ধতি দেখে বলেছিলেন, আমার কর্মময় জীবনে মহিন্দ গ্রামে ভাসমান সবজি চাষ দেখে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। পরে সবকিছু জেনে মনে হলো, আমাদের কৃষকরা পিছিয়ে নেই।

জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘের সেরা অভিযোজন প্রকল্পের স্বীকৃতি পেয়েছে ভাসমান ধাপে ফসল চাষ পদ্ধতি। কচুরিপানা, লতাপাতা, দুলালীলতা, শ্যাওলা, টেপাপানা, গুঁড়িপানা ইত্যাদি জলজ উদ্ভিদের সঙ্গে খড়কুটা ও নারিকেলের ছোবড়াগুঁড়া স্তরে স্তরে সাজিয়ে পানির ওপর ভাসমান ধাপ তৈরি করে তাতে সারা বছর ফসল উৎপাদন করে বিশ্বে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাংলার কৃষক। জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার (এএফও) 'কৃষি ঐতিহ্য অঞ্চল' হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ভাসমান ধাপ পদ্ধতির এ ফসল চাষ। জলবায়ুযুদ্ধে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশের মানুষের মনের জোর ও লড়াই করার শক্তি পৃথিবীতে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে